২০২১ খ্রিষ্টাব্দে রাস্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক রেকর্ড ২ হাজার ২০৫ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা করেছে। ২০২০ খ্রিষ্টাব্দ শেষে ব্যাংকটির পরিচালন মুনাফা ছিল ২ হাজার ১৫৩ কোটি টাকা। আর ব্যাংকটির শ্রেণিকৃত ঋণের পরিমান কমেছে ১ হাজার ২৭৭ কোটি টাকা। বর্তমানে ব্যাংকটির শ্রেণিকৃত ঋণের পরিমান নেমে এসেছে ১৪ দশমিক ১৪ শতাংশে যা ২০২০ শেষে ছিল ১৮ দশমিক ৩৭ শতাংশ। অর্থাৎ গত এক বছরে শ্রেণিকৃত লোন কমেছে ৪ দশমিক ২৩ শতাংশ । বর্তমানে ব্যাংকটিতে শ্রেণিকৃত লোন আছে ৯ হাজার ৮০০ কোটি টাকা যা ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের শেষে ছিল ১০ হাজার ৭৬৭ কোটি টাকা। ব্যাংকের সরবহরাহকৃত তথ্যে এ চিত্র ফুটে উঠেছে।
এ বিষয়ে সোনালী ব্যাংকের সিইও এন্ড ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আতাউর রহমান প্রধান বলেন, করোনার প্রাদুভর্ব কাটিয়ে দেশের ব্যাংকিং খাত এগিয়ে যাচ্ছে। করোনা না থাকলে বিগত বছর শেষেই শ্রেণিকৃত ঋণ আমরা সিঙ্গিল ডিজিটে নামিয়ে আনতে পারতাম। আগামী বছর আমরা এটা সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনাই আমাদের লক্ষ্য।
তিনি আরও বলেন, সোনালী ব্যাংকের এই সাফল্যে প্রমাণ করে ব্যাংকে এখন সুশাসন নিশ্চিত হয়েছে। তবে মুনাফা নয় গ্রাহক সন্তুটিই আমাদের মূল লক্ষ্য। ২০২১ খ্রিষ্টাব্দ শেষে সোনালী ব্যাংকের মোট বিতরণকৃত ঋণ ও অগ্রীমের পরিমান দারিয়েছে ৬৯ হাজার ৩১৭ কোটি টাকা যা ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের চেয়ে ১০ হাজার ৬৯৪ কোটি টাকা টাকা বেশি। বর্তমানে দেশের সবচেয়ে বড় ডিপোজিট এখন সোনালী ব্যাংকের। গত বছরে মোট ৮ হাজার ৪২৮ কোটি টাকা ডিপোজিট বেড়েছে। বর্তমানে ব্যাংকটিতে মোট ডিপোজিট রয়েছে ১ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৭ কোটি টাকা।
এ বিপুল ডিপোজিটকে ব্যবহার করতে পারলে ব্যাংকটি আগামী দিনগুলোতে সব সূচকে আরও ভালো করবে বলে মনে করেন ব্যাংকের শীর্ষস্থানীয় কর্মকমর্তারা। ইনভেস্টমেন্টও গত বছর শেষে দাঁড়িয়েছে ৭১ হাজার ৮৪৯ কোটি টাকা যা ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের চেয়ে ৪ হাজার ৮১২ কোটি টাকা বেশি।
ব্যাংকের এই সার্বিক সাফল্য সম্পর্কে সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান জিয়াউল হাসান সিদ্দিকী বলেন, করোনার এই প্রাদুর্ভব কাটিয়ে ব্যাংকাররা সততা ও নিষ্ঠার সাথে ব্যাংকের জন্য কাজ করেছেন বলেই এ সময়ে প্রায় সব সূচকে সোনালী ব্যাংক ভাল করতে পেরেছে । জীবনের ঝুকি নিয়ে সরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তার-কর্মচারীরা অফিস করেছেন এ করোনার সময়ে । ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে শেষে সোনালী ব্যাংকের রপ্তানির পরিমান ছিল ৩ হাজার ১৫৬ কোটি টাকা যা আগের বছরে ছিল ২ হাজার ৫১৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত বছরে ব্যাংকের মোট রপ্তানি বেড়েছে ৬৩৯ কোটি টাকা । এছাড়া ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ব্যাংকের মোট আমদানির পরিমান ছিল ৩০ হাজার ৮৭২ কোটি টাকা যা ২০২০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১৪ হাজার ৩০৬ কোটি টাকা বেশি।এছাড়া ব্যাংকের মোট লোকসানি শাখাও কমেছে ১৩টি। বর্তমানে লোকসানি শাখার সংখ্যা ২৯ থেকে নেমে ১৬ টিতে এসেছে।
সোনালী ব্যাংকের দেশের অভ্যন্তরে মোট ১ হাজার ২২৭টি শাখা আছে এছাড়া দেশের বাইরে ভারতের কলকাতা ও শিলিগুরিতে আর দুইটি শাখা আছে । এছাড়া আমেরিকায় সোনালী এক্রচেঞ্জ কো. ইনকরপোরেটেডও গত বছরে এক মিলিয়ন ডলার লাভ করেছে ।