লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে চম্পট দিয়েছেন যশোরের নওয়াপাড়া মহিলা কলেজের অফিস সহায়ক মহিন রায়। এনজিও, ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে পঁচিশ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। দীর্ঘ আট মাস ধরে তার কোন হদিস মিলছে না। কলেজ ও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তার স্থায়ী ঠিকানায় যশোরের মণিরামপুর উপজেলায় নোটিশ পাঠিয়েছেন। এ ঘটনায় অভয়নগর ও মণিরামপুরের পাওনাদারদের মধ্যে উৎকন্ঠা বিরাজ করছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলার মণিরামপুর উপজেলার দুর্বাডাঙ্গা ইউনিয়নের ঝিকরডাঙ্গা গ্রামের মহাদেব রায়ের ছেলে মহিন রায় নওয়াপাড়া মহিলা কলেজে ২০১০ খ্রিষ্টাব্দের আগস্ট মাসে অফিস সহায়ক পদে চাকরিতে যোগ দেন। যোগদানের পর তিনি ভালো ব্যবহারের মাধ্যমে এলাকার অনেককেই আকৃষ্ট করে ফেলেন। এই সুবাদে তিনি বিভিন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান থেকে লাখ লাখ টাকা ঋণ নেন। লোন নেওয়ার ঘটনাগুলো অপ্রকাশিত থাকে। সুকৌশলে গোপনে টাকা ধার নিতে নিতে টাকার পরিমাণ বেশি হতে থাকে। বিশেষ করে স্থানীয় সোনালী ব্যাংক, নওয়াপাড়া শাখা থেকে আড়াই লাখ টাকা ঋণ নেন। একইভাবে সরখোলার একটি সমিতি খেকে ৩ লাখ টাকা লোন নেন। এছাড়া বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে মালামাল বাকিতে নিতে থাকেন। নওয়াপাড়ার সরদার বস্ত্রালয়, শিক্ষক সেলিম, কর্মচারী লতিফা খাতুন, শিক্ষক বিষ্ণুপদ শীলসহ অসংখ্য ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে নানা কৌশলে টাকা ধার নেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তার এক সহকর্মী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, ধার ও ঋণের পরিমাণ ২৫ লক্ষাধিক টাকা ছাড়িয়ে যাবে। ব্যাংক থেকেও বারবার নোটিশ পাঠানোর পরও মহিন রায়ের কোনো সাড়া মিলছে না। তার স্ত্রী প্রিয়া রানী রায় ও কন্যা মিষ্টিকে নিয়ে গৃহত্যাগ করেছেন বলে সবাই সন্দেহ করছেন। কলেজে চাকরি করার সুবাদে তার পরিচিতিকে কাজে লাগিয়ে নওয়াপাড়া ও মণিরামপুরের অসংখ্য ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ ও টাকা ধার নিয়েছেন।
কলেজে কর্মরত অফিস সহায়ক লতিফা খাতুন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, আমার কাছ থেকে ৬-৭ মাস আগে ২ লাখ টাকা নিয়ে আর ফেরত দেননি। তিনি বিপদের কথা বলে এ টাকা নিয়েছিলেন।
সোনালী ব্যাংক নওয়াপাড়া শাখার ম্যানেজার এ এস এম শামছুদ্দীন আহমেদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, আড়াই লাখ টাকা লোন নিয়ে তিনি কিছু পরিশোধ করেছেন। বাকি টাকা আদায়ে তার স্থায়ী ঠিকানায় নোটিশ দেওয়া হয়, কিন্তু তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। তার বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
নওয়াপাড়া মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ বিশ্বজিৎ পাল দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, তিনবার তার স্থায়ী ঠিকানায় নোটিশ পাঠানো হলেও তা ফেরত এসেছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। গভর্নিং বডির মিটিং হলে তার চাকরির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।