আসন্ন ঈদুল ফিতরের আগে শতভাগ উৎসব ভাতা না দেয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা। ২৫ শতাংশ উৎসবভাতা দেয়ার প্রতিবাদে জেলায় জেলায় মানববন্ধন ও শিক্ষাব্যবস্থা সরকারিকরণের দাবি জানিয়ে জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্মারকলিপি দিয়েছেন তারা। রোববার (৯ মে) ঢাকা, কুমিল্লা, নেত্রকোনা,গাজীপুর, গাইবান্ধা, সাতক্ষীরা, মানিকগঞ্জ,কুড়িগ্রাম,জামালপুরসহ বিভিন্ন জেলায় এ কর্মসূচি পালন করেছেন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বাশিস) নেতারা।
সমিতির পক্ষ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ২৫ শতাংশ ঈদ উৎসব ভাতা দীর্ঘ ১৭বছরেও পরিবর্তন হয়নি। শিক্ষামন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীকে এ বিষয়ে একাধিকবার শিক্ষক সমাজের পক্ষ থেকে চিঠি বা স্মারকলিপি দেয়া হলেও এর সুফল মেলেনি।
ফলে শিক্ষক সমাজে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা ৫০ শতাংশ ঈদ উৎসব ভাতা পেলেও একই প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক, অধ্যক্ষ এমনকি সহকারী শিক্ষকরা ২৫ শতাংশ উৎসবভাতা পেয়ে আসছেন দীর্ঘ ১৭বছর ধরে। এ ছাড়া ১ হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া ও ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা নিয়ে করোনার এ দুঃসময়ে এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীরা চরম আর্থিক কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদেরকে ৫ শতাংশ বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট দিয়েছিল কিন্তু পরে বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্ট ও অবসর সুবিধা বোর্ডের নামে অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কর্তন করা হয়েছিল। এতেও শিক্ষক সমাজে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ রয়েছে। এরপর এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের আর কোন কিছু দেয়া হয়নি। এবার আশা ছিল আসন্ন ঈদুল ফিতরের আগেই শতভাগ ঈদ উৎসবভাতা প্রদান করা হবে। কিন্তু সেই আশায় গুড়ে বালি।
সমিতির নেতারা আরও জানান, রোববার বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বাশিস) পূর্ববর্তী কর্মসূচীর অংশ হিসেবে দেশের সব জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে শতভাগ ঈদ উৎসবভাতা প্রদান না করায় প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধন করা হয়েছে। মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে স্মারক লিপি প্রদান করা হয়েছে। ঢাকা জেলা প্রশাসকসহ কুমিল্লা,নেত্রকোনা,গাজীপুর,গাইবান্ধা,সাতক্ষীরা,মানিকগঞ্জ,কুড়িগ্রাম,জামালপুর এবং আরও কয়েকটি জেলার শিক্ষক নেতারা সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে মাস্ক পরে এই কর্মসূচী পালন করেন। সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মোঃ নজরুল ইসলাম রনি এক বিবৃতিতে এই কর্মসূচী সফল করায় জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
স্মারকলিপিতে মুজিববর্ষকে অবিস্মরণীয় ও চির অম্লান করে রাখতে আসন্ন ২০২১-২০২২অর্থ বছরের বাজেটে মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থা সরকারিকরণে প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ রাখতে জোর দাবি জানান শিক্ষক নেতারা। এছাড়াও অনার্স মাস্টার্স শিক্ষকদেরকে এমপিওভুক্ত করে তাদেরকে সরকারিকরণের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়। শিক্ষকদের বদলি প্রথা চালু করার পদক্ষেপ নিতে প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর কাছে বিশেষ ভাবে দাবি জানানো হয়। করোনার এ দুঃসময়ে আর্থিক কষ্টে থাকা শিক্ষকদের বিশেষ আর্থিক সহায়তা দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে শিক্ষক সমাজের পক্ষ থেকে।
শিক্ষক নেতারা আরও বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থা সরকারিকরণে জরুরিভিত্তিতে ব্যবস্থা না নিলে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে শিক্ষকরা তাদের ন্যায্য দাবি আদায়ে রাজপথে ঐক্যবদ্ধ কর্মসূচী দেবেন। মুজিববর্ষেই শিক্ষকদের বেতন বৈষম্য দূর করে শিক্ষা ব্যবস্থা সরকারিকরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন শিক্ষক নেতারা।
আরও পড়ুন : দৈনিক শিক্ষাডটকম পরিবারের প্রিন্ট পত্রিকা ‘দৈনিক আমাদের বার্তা’
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।