এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী কাম্য সংখ্যক শিক্ষার্থী না থাকা সত্ত্বেও যশোরের মহেশপুরে শামসুল হুদা খাঁন কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে এমপিওর তালিকায় শিক্ষকদের নাম উঠানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমপিওপ্রাপ্তির জন্য কলেজটির ব্যবসা শিক্ষা বিভাগে পর্যাপ্ত সংখ্যক শিক্ষার্থী না থাকলেও ওই বিভাগের তিন শিক্ষকের নাম উঠেছে এমপিওভুক্তির তালিকায়। তবে কলেজটির অধ্যক্ষ বলছেন, এটা কোনো সমস্যা নয়। কোনো কলেজেই নীতিমালা মেনে ব্যবসা শিক্ষা ও বিজ্ঞান বিভাগ চলে না।
জানা যায়, ২০১১ খ্রিষ্টাব্দে ঝিনাইদহের মহেশপুর ও যশোরের চৌগাছা সীমান্তবর্তী বিদ্যাধরপুর গ্রামে শামসুল হুদা খাঁন কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়। শুরু থেকেই কলেজটিতে মানবিক, বিজ্ঞান ও ব্যবসা শিক্ষা বিভাগ চালু হয়। তবে প্রথম থেকেই বিজ্ঞান ও ব্যবসা শিক্ষা বিভাগে শিক্ষার্থী সংকট ছিল, যা আজ পর্যন্ত কাটেনি। এজন্য সর্বশেষ সরকার এমপিওর জন্য আবেদন আহ্বান করলে কলেজটি বিজ্ঞান বিভাগের জন্য আবেদন করেনি। তবে ব্যবসা শিক্ষা বিভাগে নীতিমালা অনুযায়ী শিক্ষার্থী না থাকলেও জালিয়াতির মাধ্যমে হিসাব বিজ্ঞানের প্রভাষক সোহান মাহমুদ, ব্যবস্থাপনার প্রভাষক রাশেদ আরেফিন ও উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপননের প্রভাষক মেহেদী হাসনের এমপিও’র জন্য আবেদন করেন কলেজটির অধ্যক্ষ এবিএম শাহ আলম। নানামুখী তদবিরে এই তিন শিক্ষকের কাঙ্ক্ষিত এমপিও পাইয়ে দেন তিনি। এছাড়া এই কলেজটির আইসিটি’র প্রভাষক কামরুল হাসান, ফিনান্স অ্যান্ড ব্যাংকিংয়ের প্রভাষক আনোয়ার হোসেন ও ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতির প্রভাষক শামিমা খাতুন একই সাথে দুই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে যাচ্ছেন।
যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা যায়, সর্বশেষ ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের অক্টোবরে কলেজটির একাডেমিক স্বীকৃতি নবায়ন করা হয়। এই নবায়নেও অনিয়মের আশ্রয় নেয়া হয়েছে। ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে ব্যবসা শিক্ষা বিভাগে মাত্র ১১ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। আর পরের বছর শিক্ষার্থী ভর্তি হয় মাত্র ১৫ জন। এই ২৬ শিক্ষার্থীকে পড়াতে তিন শিক্ষকের এমপিও’র জন্য আবেদন করা হয়। যদিও নীতিমালা বলছে, দুই শিক্ষাবর্ষে অন্তত ৫০ জন শিক্ষার্থী থাকলেই কেবল মাত্র এমপিও’র জন্য আবেদন করা যাবে।
কলেজটির অধ্যক্ষ এবিএম শাহ আলম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘ব্যবসা শিক্ষা বিভাগে শিক্ষার্থী পাওয়া যায় না। বিশ্ববিদ্যালয়ে এই বিভাগের শিক্ষার্থীদের আসন সংখ্যা কম থাকায় কেউ পড়তে চায় না। এক প্রকার জোর করেই শিক্ষার্থী ভর্তি করতে হয়। সেই কারণেই শিক্ষার্থী কম থাকলেও শিক্ষকদের এমপিও’র জন্য আবেদন করা হয়। শুরু আমার কলেজ অনেক কলেজেই এমন সমস্যা আছে।’
যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক কেএম গোলাম রব্বানী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের অক্টোবরে শামসুল হুদা খাঁন কলেজের সর্বশেষ একাডেমিক স্কীকৃতি নবায়ন করা হয়। ওই সময় কলেজ পরিদর্শক হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন অমল কুমার বিশ্বাস। নীতিমালা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সংখ্যাক শিক্ষার্থী যদি কলেজটিতে ভর্তি না হয়, তাহলে পরবর্তী সময়ে তাদের একাডেমিক স্বীকৃতি আর নবায়ন করা হবে না।’
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের খুলনা অঞ্চলের পরিচালন (কলেজ) প্রফেসর হারুন অর রশিদের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।