কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় প্রাথমিক, মাধ্যমিক, মাদরাসা ও কলেজসহ মোট ২৩০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকলেও ১৮৪ টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই নেই কোনো শহীদ মিনার। তবুও প্রতিবছরই এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক- শিক্ষার্থীরা কলাগাছ, কাপড়, বাঁশের কঞ্চি, বেঞ্চ, টেবিল, রঙিন কাগজ দিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনার বানিয়ে পালন করে মাতৃভাষা দিবস। শ্রদ্ধা জানান ও স্মরণ করে ভাষা শহীদদের। উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ১৪৭ টি। এর মধ্যে ১২৭ টি বিদ্যালয়ে নেই শহীদ মিনার। মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদরাসা ও কলেজ রয়েছে মোট ৮৩ টি। এর মধ্যে ৫৭ টিতে নেই শহীদ মিনার।
এ বিষয়ে উপজেলার লক্ষীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু ফান্ড না থাকায় নির্মাণ করা হয়নি শহীদ মিনার। প্রতিবছর বেঞ্চ, টেবিল,রঙিন কাগজ দিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানায় ও স্মরণ করি।
জোতমোড়া বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুর রাজ্জাক দৈনিক শিক্ষডটকমকে বলেন, বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই। কখনও পাশের বিদ্যালয়ে অংশগ্রহণ করি। আকার কখনও বাঁশ কাঠ দিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনার বানানো হয়।
উপজেলা মাধ্যমিক সহকারি শিক্ষা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘ব্যক্তিগত ও জেলা পরিষদের অর্থায়নে বিভিন্ন সময়ে ২৬ টি প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে। তবে যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এখনও শহীদ মিনার নির্মাণ হয়নি, সেসব প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি ও প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের সঙ্গে কথা বলেছি। বরাদ্দ পেলে তারা দ্রুতই এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবেন।’
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন , ‘শহীদ মিনার নেই, এমন প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর তালিকা করা হয়েছে। মাত্র ২০ টি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার আছে। তবে সরকারি নকশা অনুযায়ী কোন শহীদ মিনার নেই। সারাদেশে একই রঙ ও আকৃতির শহীদ নির্মাণ করা হবে। বরাদ্দ পাওয়া গেলে দ্রুতই এসব বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণের পদক্ষেপ নেয়া হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিতান কুমার মন্ডল দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। কিন্তু করোনার কারণে তা সফল হয়নি। বিষয়টি নিয়ে সমন্বয় সভায় আলোচনা করা হবে।’
এদিকে এমাসের কর্মসূচি উপলক্ষে উপজেলাব্যাপী শুরু হয়েছে নানা আয়োজন। দিবসটির একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় শহীদরের শ্রদ্ধা নিবেদনের লক্ষ্যে শহীদ মিনারে পুষ্পস্ববক বা পুষ্প্যমাল্য অর্পণ। সাধারণত শহীদ মিনারগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অবস্থিত হয়ে থাকে। তাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চলছে অগ্রিম প্রস্তুতি। তবে যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই, সেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তেমন কোনো আয়োজনও নেই। অনেক প্রতিষ্ঠান বাঁশ, কাঠ ও কাগজ দিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে।