সারাদেশে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এন্ট্রিলেভেলের শিক্ষক পদে নিয়োগে এনটিআরসিএর মাধ্যমে প্রাথমিক সুপারিশপ্রাপ্ত ৩৮ হাজার প্রার্থীকে দ্রুত চূড়ান্ত সুপারিশ বা যোগদানের দাবিতে প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষা উপমন্ত্রী ও শিক্ষা সচিব বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন প্রার্থীরা।
বুধবার (১ ডিসেম্বর) পক্ষে প্রাথমিক সুপারিশপ্রাপ্ত প্রার্থীদের প্রতিনিধি দল প্রথমে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে, পরে সচিবালয়ে শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষা উপমন্ত্রী ও শিক্ষা সচিব বরাবর স্মারকলিপি দেন।
স্মারকলিপির মাধ্যমে এনটিআরসিএর তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তির ৩৮ হাজার প্রাথমিক সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষককে দ্রুত যোগদান বা চূড়ান্ত সুপারিশের দাবি জানান তারা।
গত ৩০ মার্চ শিক্ষক নিয়োগের গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার পর আবেদন গ্রহণ করে ১৫ জুলাই প্রাথমিক সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকদের ফলাফল ঘোষণা করা হয়। ফলাফল ঘোষণার প্রায় চার মাসেও যোগদান সম্পন্ন হয়নি। বর্তমানে তাদের পুলিশ ভেরিফিকেশন চলমান।
প্রার্থীদের দাবি, ২০১৮ সালের ২৮ নভেম্বর ১৫তম নিবন্ধনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তির নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হলেও প্রায় তিন বছরেও এর কার্যক্রম শেষ হয়নি। প্রাথমিক সুপারিশপ্রাপ্ত প্রার্থীরা অনিশ্চয়তা ও দুশ্চিন্তায় চূড়ান্ত নিয়োগের অপেক্ষায় দুর্বিষহ জীবন পার করছেন। প্রতিনিয়ত পারিবারিক, সামাজিক ও আর্থিকভাবে তারা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
সারাদেশে লক্ষাধিক শিক্ষক সংকট রয়েছে। করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধারাবাহিক পাঠদানে সমস্যা হচ্ছে। প্রতিষ্ঠান প্রধানরাও শিক্ষক সংকটের ফলে পাঠদান স্বাভাবিক করতে ব্যর্থ হচ্ছেন। এসব কিছু বিবেচনায় নিয়ে ৩৮ হাজার শিক্ষকের দ্রুত যোগদান জরুরি বলে মনে করছেন প্রার্থীরা।
সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকরা বলছেন, মুজিববর্ষেই এ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মুজিববর্ষ শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে। তাই দ্রুত এ নিয়োগ প্রক্রিয়ার সম্পন্ন করতে হবে।
তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতে প্রাথমিক সুপারিশপ্রাপ্ত শান্ত আহমেদ বলেন, শিক্ষার সার্বিক উন্নয়ন, মুজিববর্ষে বেকারত্ব হ্রাসের অঙ্গীকার বাস্তবায়ন, অসহায় শিক্ষকদের আর্থিক দুরবস্থাসহ সামাজিক মর্যাদার কথা চিন্তা করে চলতি ডিসেম্বর মাসেই চূড়ান্ত যোগদানের ব্যবস্থা করতে হবে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী সাহাদাত হোসাইন আক্ষেপ করে বলেন, তিল তিল করে গড়ে তোলা শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন আজ ম্লান হতে চলেছে। তিন বছর থেকে একটি নিয়োগের জন্য অপেক্ষা। এখনো শিক্ষক হতে পারলাম না। পরিবার ও সমাজ থেকে আমরা বিচ্যুত। শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখাই কি আমাদের অপরাধ? মুজিববর্ষেই এ নিয়োগ সম্পন্ন করতে সরকারের কাছে জোর দাবি জানান তিনি।