কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে জেন্ডার সমতাবিষয়ক এক প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে অর্থের নয়ছয়ের অভিযোগ উঠেছে। প্রশিক্ষণ চলাকালে প্রত্যেক শিক্ষকের জন্য নাশতা ও দুপুরের খাবার বাবদ ২৬০ টাকা বরাদ্দ রয়েছে। অথচ ২০০ টাকার খাবারও দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ প্রশিক্ষণার্থীদের। একই সঙ্গে নিম্নমানের খাবার সরবরাহের অভিযোগ করেন তারা।
সিডা ও প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের অর্থায়নে আরডিআরএস বাংলাদেশ বিল্ডিং বেটার ফিউচার ফর গার্লস (বিবিএফজি) প্রকল্পের অধীন জেন্ডার ইকুইটি মুভমেন্ট ইন স্কুলস (জেমস) বিষয়ক প্রশিক্ষণ চলছে। চার দিনব্যাপী শিক্ষক প্রশিক্ষণ শুরু হয় ৮ নভেম্বর। মাধ্যমিক স্কুল পর্যায়ে কন্যাশিশুদের মধ্যে প্রজনন ও স্বাস্থ্য পুষ্টি বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে শিক্ষকদের নিয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রশিক্ষণে উপজেলার বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার ৪৮ শিক্ষক দুটি ভেন্যুতে অংশ নেন। ফুলবাড়ী ডিগ্রি কলেজ রুমে ও মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন ভেন্যুতে চলছে এ প্রশিক্ষণ কর্মসূচি। প্রতিদিন ২৪ জন করে শিক্ষক প্রশিক্ষণে অংশ নেন। এ জন্য মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস থেকে চাহিদা নেওয়া হয়েছে। ২১৬ জন শিক্ষকের নামের তালিকা সংশ্নিষ্ট দপ্তরে জমা দিয়েছেন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানরা। তালিকাভুক্ত বিদ্যালয় থেকে পর্যায়ক্রমে দু'জন করে শিক্ষক প্রশিক্ষণে অংশ নিচ্ছেন। ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চলবে। প্রশিক্ষণ চলাকালে প্রত্যেক শিক্ষকের জন্য নাস্তা ও দুপুরের খাবর বাবদ ২৬০ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।
প্রশিক্ষণ নিতে আসা ফুলবাড়ী জছিমিয়া সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আমিনুল ইসলাম জানান, নাশতাসহ দুপুরের খাবারের বরাদ্দ ২৬০ টাকা থাকলেও খাবারের মান ভালো না, সরবরাহ করা উপকরণও নিম্নমানের। একইভাবে ছবিরন নেছা দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক হাওয়া পারভীন ও কুটিবাড়ী মডার্ন উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক সেলিম মিয়া বলেন, প্রশিক্ষণার্থীদর জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ দিয়ে সঠিকভাবে খাদ্য সরবরাহ করা হয়নি। তারা জানিয়েছেন, নাশতাসহ ২০০ টাকা খাবারের বরাদ্দ রয়েছে।
খাদ্য সরবরাহকারী রাঁধুনি হোটেল মালিক নোলা মিয়া বলেন, দুপুরের খাবারের জন্য প্যাকেটপ্রতি ১৬৭ টাকা নেওয়া হয়েছে। কত বরাদ্দ ছিল তা আমার জানা নেই।
ভেন্যু ভাড়া প্রসঙ্গে ফুলবাড়ী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম রিজু বলেন, দৈনিক এক হাজার টাকা ভাড়া দেওয়া হয়, আর পরিচ্ছন্নতা বাবদ দেওয়া হয় ৫০০ টাকা। ভেন্যু ভাড়া ও ডেকোরেশন বাবদ দুই হাজার ৫০০ টাকা বরাদ্দ থাকলেও সে বিষয়ে কিছুই জানি না।
বিবিএফজির প্রকল্প সমন্বয়কারী ঝরনা বেগম জানান, বরাদ্দকৃত অর্থ দিয়ে সঠিকভাবে খাদ্য সরবরাহ করা হয়েছে। কোনো সমস্যা থাকলে শিক্ষকরা জানালে তা সংশোধন করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদুর রহমান বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে খাদ্য সরবরাহের ব্যাপারে কোনো অনিয়ম হয়েছে কিনা আমার জানা নেই।