নওগাঁর পত্নীতলায় এক শিক্ষককে কলেজের অফিসে রুমে আটকে মারধর করে অব্যাহতিপত্রে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগী শিক্ষকের নাম আব্দুর রশিদ। তিনি নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার চৌরাট শিবপুর বরেন্দ্র ডিগ্রি কলেজের ইসলাম শিক্ষা বিষয়ের প্রভাষক। কলেজ অধ্যক্ষ দীপক কুমার সরকার তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে স্বাক্ষর নিয়েছেন বলে অভিযোগ তার।
আব্দুর রশিদ মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের মকিম উদ্দিনের ছেলে। তিনি জানান, এর আগে কলেজ অধ্যক্ষ দীপক কুমার তার বেতন-ভাতার কাগজপত্র তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে না পাঠিয়ে অন্য কাউকে ইসলাম শিক্ষা প্রভাষক হিসাবে নিয়োগের পাঁয়তারা করেছিলেন। এটি বিষয়ে বুঝতে পেরে তিনি গত বছরের ৯ ডিসেম্বর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা রাজশাহী অঞ্চলের পরিচালকসহ পত্নীতলা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছেও এর অনুলিপি পাঠিয়েছেন। আব্দুর রশিদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ১ জানুয়ারি এ নিয়ে একটি দৈনিকে খবর প্রকাশিত হয়। এতে তার ওপর ক্ষিপ্ত হন অধ্যক্ষ দীপক কুমার। ১৫ জানুয়ারি আব্দুর রশিদকে কলেজের অফিস কক্ষে আটকে রেখে গালাগাল ও মারধর করেন। পরে তাকে অব্যাহিতপত্রে স্বাক্ষর দিতে বাধ্য করেন।
এরপর আব্দুর রশিদকে কলেজ থেকে বের করে দেন তিনি। আব্দুর রশিদকে আটকে স্বাক্ষর নেওয়ার সময় তিনি তার মোবাইল ফোনে অডিও ধারণ করেছিলেন। প্রায় ১৫ মিনিটের এ অডিওতে দীপক কুমারকে (আব্দুর রশিদের দাবি অনুযায়ী) গালাগাল করতে শোনা যায়।
এ বিষয়ে প্রভাষক আব্দুর রশিদ জানান, গত বছরের নভেম্বরে মন্ত্রণালয় থেকে তৃতীয় শিক্ষক এমপিও ভুক্তকরণের চিঠি আসার পর কলেজ অধ্যক্ষ দীপক কুমার মণ্ডল তাকে ডেকে ১৫ লাখ টাকা দাবি করে বলেন, এই কলেজে যারা প্রভাষক হিসাবে যোগদান করেছেন তাদের প্রত্যেককে ১৫ লাখ টাকা দিতে হয়েছে। টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে অধ্যক্ষ তার পরিবর্তে অন্য কাউকে নিয়োগ দেওয়ার পাঁয়তারা শুরু করেন। এরপরই তিনি অভিযোগ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে শুক্রবার রাত ৮টায় চৌরাট শিবপুর বরেন্দ্র ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ দীপক কুমারের মোবাইলে কল করলে রিসিভি করেন তিনি। কিন্তু সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে ফোন কেটে দেন। পরে তিনি আর ফোন ধরেননি।
এ বিষয়ে চৌরাট শিবপুর বরেন্দ্র ডিগ্রি কলেজের সভাপতি ও পত্নীতলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. লিটন সরকার বলেন. প্রভাষক আব্দুর রশিদ তাকে লাঞ্ছিত করার বিষয়টি আমাকে মৌখিকভাবে জানিয়েছেন। অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নওগাঁ থেকেও একজন একই ধরনের অভিযোগ করেছেন। এ কারণে ৩য় শিক্ষকদের বেতন-ভাতা ধরার কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। বিষয়টি সুষ্ঠু সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।