বেতন স্কেল বৈষম্য দূর করে প্রাথমিকের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের এক ধাপ নিচে বেতন স্কেল প্রদানের দাবিতে তৃতীয় দিনের মত চলছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষকদের আমরণ অনশন কর্মসূচি। রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আজ সোমবার (২৫শে ডিসেম্বর) আমরণ অনশনের তৃতীয় দিনসহ এ পর্যন্ত প্রায় ৪০ জন শিক্ষক অসুস্থ হয়ে হয়েছেন।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গত শনিবার সকাল ১০টা থেকে বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারি শিক্ষক মহাজোটের ব্যানারে এই কর্মসূচি শুরু হয়। সহকারি শিক্ষকদের ৮টি সংগঠন এই কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাবেন বলে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ঘোষণা দিয়েছেন।
আন্দোলনকারী শিক্ষক নেতা মোহাম্মদ সামছুদ্দীন বলেন, ‘আজ পর্যন্ত প্রায় ৪০ জন শিক্ষক অসুস্থ হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৭ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। আর কয়েকজন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। তিনি বলেন, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের আন্দোলন চলবে’
শনিবার সকাল ১০টা থেকে শুরু হওয়া এই কর্মসূচির আজ তৃতীয় দিনেও দেখা গেছে, অসংখ্য শিক্ষক কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে অনশন পালন করছেন। অনেকে এই শীতের রাতেও এখানে অবস্থান করেছেন।
শিক্ষকেরা বলছেন, তাঁরা এক দফা দাবিতে এখানে আন্দোলন করছেন। তাঁদের দাবি, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারি শিক্ষকদের বেতনস্কেল প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের এক ধাপ নিচে রাখতে হবে। বর্তমানে প্রধান শিক্ষকদের চেয়ে তিন ধাপ নিচের স্কেলে বেতন পান প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারি শিক্ষকরা। বর্তমানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকেরা বেতন স্কেলের ১১ তম গ্রেডে (এই গ্রেডের মূল বেতন ১২ হাজার ৫০০ টাকা) বেতন পান। আর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারি শিক্ষকেরা পান ১৪ তম গ্রেডে (এই গ্রেডের মূল বেতন ১০ হাজার ২০০ টাকা)।
সহকারি শিক্ষকদের দাবির প্রতি এখনও চুপ রয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষার সাথে সংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধারকরা। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান, প্রাথমিক শিক্ষা সচিব আসিফ-উজ- জামান এই ব্যাপারে এখনও কোন মন্তব্য করেননি। কারও পক্ষ থেকে কোন রকম আশার বাণী শোনা যায়নি। তবে গতকাল রোববার (২৪শে ডিসেম্বর) কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী শিক্ষকদের দাবির সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে উপস্থিত হন। তিনি শিক্ষকদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বক্তব্য দেন। সরকারকে এ দাবি মেনে নেয়ার জন্য আহ্বান জানান তিনি। এছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ তাদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে বক্তব্য দেন।