বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসর সুবিধার টাকা দেরিতে পাওয়ার কারণ জানিয়েছেন বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী সুবিধা বোর্ডের সচিব অধ্যক্ষ শরীফ আহম্মদ সাদী। তিনি বলেছেন, শিক্ষক-কর্মচারীদের প্রতিমাসে অবসরের চেক ছাড়তে প্রয়োজন ৯০ কোটি টাকা। সেক্ষেত্রে শিক্ষকদের কাছ থেকে কর্তনের টাকায় প্রয়োজনের অর্ধেকও আসছেনা। এ অবস্থা নিরাসনের জন্য বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ১ হাজার ৩৫৭ কোটি টাকা অবসর কল্যাণ ফান্ডে দিয়েছেন। বর্তমান অবসরে যাওয়া শিক্ষক-কর্মচারীরা ২ বছর ১০ মাস পর অবসরের টাকা পাচ্ছেন বলেও বক্তব্যে উল্লেখ করেন তিনি।
শনিবার (১৬ অক্টোবর) যশোরের মণিরামপুর উপজেলার ভরতপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রাপ্তি ও প্রত্যশা বিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হলেন স্বপ্নের ফেরিওয়ালা। প্রধানমন্ত্রী স্বপ্ন রচনা করেন স্বপ্ন দেখান এবং সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেন। তার দেখানো স্বপ্নের পথে বাংলাদেশের বেসরকারি লাখ লাখ শিক্ষকের দুর্দশা ও বিড়ম্বনা দূর করতে অবসর বোর্ড কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী শিক্ষক বান্ধব নেত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া আর কেউ এমপিওভুক্ত বেসরকারি অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের প্রতি সদয় দৃষ্টিতে তাকাননি। তিনি শিক্ষকদের কল্যাণে অর্থ বরাদ্দ দিচ্ছেন। ইতোমধ্যে ১ হাজার ৩ ৫৭ কোটি টাকা দিয়েছেন অবসর ভাতা প্রদানের জন্য।
শরীফ আহম্মদ সাদী আরও বলেন, বেসরকারি শিক্ষকরা এখন অবসরে গেলে তজবি জায়নামায নিয়ে বাড়ি যেতে হয়না। শিক্ষকরা বর্তমানে একটি পর্যায়ে চলে এসেছেন। সরকার এ শিক্ষক-কর্মচারীদের সরকারিকরণ করতে কার্যক্রম শুরু করেছেন। তবে এখন থেকে আর যেন-তেন শিক্ষকের দিন শেষ। আগে শিক্ষক-কর্মচারীদের ন্যায্য পাওনার পিছনে দিনের পর দিন ঘুরতে হতো এবং ঘাটে ঘাটে নাজেহাল হতে হতো। এখন তাদের প্রাপ্য অর্থ নিজস্ব ব্যাংক অ্যাকাউন্টে চলে যাচ্ছে।
প্রধান শিক্ষক আব্দুল হামিদের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বরগুনা তালতলী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদ। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ গ্রন্থাগার সমিতির সভাপতি ড. মিজানুর রহমান।
এ সময় বক্তব্য রাখেন, বালিয়াডাংগা খানপুর কলেজের অধ্যক্ষ আসাদুজ্জামান শাহিন, গোপালপুর স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ রিজাউল করিম, খামারবাড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক নিমাই পাল, কুয়াদা ফাজিল মাদ্রাসার অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক আব্দুল খালেক, কেশবপুর ডিগ্রী কলেজের গ্রন্থাগারিক আবুবক্কর সিদ্দিকসহ অনেকে। অনুষ্ঠানে ৩৭ জন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারীর মাঝে ইএফটি’র মাধ্যমে প্রায় ৫ কোটি টাকা বিতরণ করেন।শরীফ আহম্মদ সাদী উপস্থিতি শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে আরও বলেন, এ মন্ত্রণালয়ে এখন ঘুষ লেনদেনের দিন শেষ। আপনারা অবসরের টাকা নিয়মের মধ্য থেকেই বাড়িতে বসে পাবেন। কেউ মধ্যসত্ত্ব ভোগীর কাছে যাবেন না। বর্তমান অবসরে যাওয়া শিক্ষক-কর্মচারীরা ২ বছর ১০ মাস পর অবসরের টাকা পাচ্ছেন। আগামীতে ৬ মাসের মধ্যে অবসরের টাকা নিজ নিজ ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ইএফটির মাধ্যমে চলে যাবে বলে আশা করছি। মানবতার জননী শেখ হাসিনার হাত দিয়েই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের অবসরভাতা প্রাপ্তির দীর্ঘ অপেক্ষার যন্ত্রণা দূর হবে।