শিক্ষকের দানশীলতায় রক্ষা পেলো স্কুলটি - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষকের দানশীলতায় রক্ষা পেলো স্কুলটি

নীলফামারী প্রতিনিধি |

 নীলফামারী-ডোমার সড়ক প্রশস্তকরণে শালমারা বন্দরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনসহ সব জায়গা সরকারিভাবে অধিগ্রহণ করা হয়। এতে আর কোনো জায়গা না থাকায় বিদ্যালয়টি বিলুপ্ত করার সিদ্ধান্ত নেয় উপজেলা শিক্ষা কমিটি। ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাশের অন্যান্য বিদ্যালয়ে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। তবে, বিদ্যালয় বিলুপ্তির বিষয়টি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেননি ওই বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক জগদিশ চন্দ্র রায়। যখন বিদ্যালয়টি রক্ষা করা যাচ্ছে না, সেই সময় তিনি বিদ্যালয়ের পাশে প্রায় ৩০ লাখ টাকা মূল্যের নিজের ২৭ শতক জমি দান করে দেন।

ছবি : নীলফামারী প্রতিনিধি 

গত বুধবার বিকেলে সাব-রেজিস্ট্রি কর্মকর্তার কার্যালয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোস্তাফিজার রহমান, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আমীর হোসেনসহ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি, শিক্ষক ও এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে ২৭ শতক জমি বিদ্যালয়ের নামে রেজিস্ট্রি করে দেন। আর এতেই প্রাণের প্রতিষ্ঠান শালমারা বন্দরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিলুপ্তি আটকে দিলেন সাবেক প্রধান শিক্ষক।

আরও পড়ুন : দৈনিক শিক্ষাডটকম পরিবারের প্রিন্ট পত্রিকা ‘দৈনিক আমাদের বার্তা’

বিদ্যালয়টি টিকে থাকায় মহা খুশি ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষকসহ গোটা শালমারা এলাকার মানুষ। সেইসঙ্গে সাবেক প্রধান শিক্ষক জগদিশ চন্দ্র রায়কে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানিয়েছে। 

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মহামায়া দেব বর্মা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, ১৯৮৯ খ্রিষ্টাব্দে এলাকার কিছু মানুষ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করে। এরপর ১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দে বিদ্যালয়টি নিবন্ধিত হয়। ২০১৩  খ্রিষ্টাব্দে জাতীয়করণ করে সরকার। ১৯৯০  খ্রিষ্টাব্দে জগদিশ চন্দ্র রায় প্রধান শিক্ষক হিসেবে এ বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। আর ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে অবসরে যান।

বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র মাসুদ রানা ও জিয়ন রায় সন্তোষ প্রকাশ করে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, যখন দেখলাম আমাদের বিদ্যালয়ের ওপর দিয়ে রাস্তার কাজ চলছে। কয়েক দিন পরে শুনলাম বিদ্যালয়টি আর থাকবে না। তখন খুবই মন খারাপ হয়েছিল। আমাদের বিদ্যালয়টি বিলুপ্ত হবে না শুনে খুব ভালো লাগছে। নিজের বিদ্যালয়ে আমরা আবার ক্লাস করতে পারবো, এটা আমাদের জন্য অনেক আনন্দের।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব ও ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন

জমি দাতা ও সাবেক প্রধান শিক্ষক জগদিশ চন্দ্র রায় দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ২৮ বছর ধরে আমি ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলাম। নিজের সন্তানের মতো করে বিদ্যালয়টি সাজিয়েছি। জমির কারণে বিদ্যালয়টি বিলুপ্ত হবে, তা আমি মানতে পারি নাই। সেজন্য সিদ্ধান্ত নেই যত মূল্যবান জমিই হোক না কেন, বিদ্যালয়টি বিলুপ্তি বন্ধে আমি জমি দান করবো। জমি দানের বিষয়টি পরিবারের সবার সঙ্গে আলোচনা করলে, সবাই আমাকে জমি দানে উৎসাহ দেয়। আমার দেয়া জমিতে বিদ্যালয়টি টিকে থাকায় মনে হচ্ছে, নিজের সন্তানকে বাঁচাতে পেরেছি।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমীর হোসেন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, বিদ্যালয়ের উপর দিয়ে সড়ক প্রশস্তকরণে জমির অভাব পড়ে, এতে বিদ্যালয়টি বিলুপ্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সাবেক প্রধান শিক্ষক জগদিশ চন্দ্র রায় জমি দান করায় বিদ্যালয়টি আর বিলুপ্ত করা হবে না।

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, জগদিশ চন্দ্র রায় মহান একটি কাজ করেছেন। তিনি সাবেক এ প্রধান শিক্ষকের মহৎ এ কাজে নিজেও অনুপ্রাণিত হয়েছেন এবং সমাজের সবাইকে এ মানুষটিকে অনুসরণ করার আহবান জানিয়েছেন।

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল   SUBSCRIBE  করতে ক্লিক করুন।

স্কুল-কলেজ, মাদরাসা খুলবে ২৮ এপ্রিল - dainik shiksha স্কুল-কলেজ, মাদরাসা খুলবে ২৮ এপ্রিল সাত দিন বন্ধ ঘোষণা প্রাথমিক বিদ্যালয় - dainik shiksha সাত দিন বন্ধ ঘোষণা প্রাথমিক বিদ্যালয় তীব্র গরমে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসও বন্ধ ঘোষণা - dainik shiksha তীব্র গরমে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসও বন্ধ ঘোষণা প্রাথমিকের শিক্ষকদের ফের অনলাইনে বদলির সুযোগ - dainik shiksha প্রাথমিকের শিক্ষকদের ফের অনলাইনে বদলির সুযোগ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ছাত্ররাজনীতি লাভজনক পেশায় পরিণত হয়েছে : ড. আইনুন নিশাত - dainik shiksha ছাত্ররাজনীতি লাভজনক পেশায় পরিণত হয়েছে : ড. আইনুন নিশাত কারিগরির সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটির প্রজ্ঞাপন জারি - dainik shiksha কারিগরির সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটির প্রজ্ঞাপন জারি মাদরাসায় ছুটির প্রজ্ঞাপন জারি - dainik shiksha মাদরাসায় ছুটির প্রজ্ঞাপন জারি দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0070939064025879