নীলফামারীর ডিমলায় জাল সনদে চাকরি নিয়ে এমপিওভুক্ত হওয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে আকাশ কুড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জমশেদ আলীর বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা অফিসারকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন স্থানীয়রা।
লিখিত অভিযোগে সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত জাল সনদধারী শিক্ষক ১৯৭৯ খ্রিষ্টাব্দে ডিমলা নিজ পাড়া কামিল মাদরাসা থেকে দাখিল পাসের সনদ দিয়ে চাকরি নিয়েছেন। ওই সময়ে তিনি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হন। কিন্তু তিনি তথ্য গোপন করে ১৯৭৯ খ্রিষ্টাব্দে জাল সনদ তৈরি করেন। ওই ভুয়া সনদ দিয়ে তিনি পরবর্তীতে গোলমুন্ডা ফাযিল মাদরাসায় ভর্তি হয়ে আলিমে তৃতীয় বিভাগ ও ফাযিলে তৃতীয় বিভাগ পেয়ে উত্তীর্ণ হন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, তিনি স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় সে সময় কমিটির মাধ্যমে সনদবিহীন যোগ্যতায় সহকারী মৌলভী পদে নিয়োগ নিয়ে জাল সনদে এমপিওভুক্ত হন। শুধু দাখিল পাসের সনদ নয় পরবর্তীতে তিনি আবারও ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে বিএড পাসের ভুয়া সনদ নেন। ওই সনদ দিয়ে বিএডস্কেল পেয়েছেন। প্রথমে তিনি দাখিলের ভুয়া সনদ দিয়ে এমপিও হয়ে কোনো কিছু না হওয়ায় পরবর্তীতে বিএড পাসের ভুয়া সনদ দিয়ে বিএড স্কেল নিয়ে সরকারি কোষাগার থেকে বেতন ভাতা উত্তোলন করে আসছেন। এছাড়া তিনি তার জাতীয় পরিচয় পত্রের জন্ম তারিখ পরিবর্তন করে এমপিও শিটে নতুন জন্ম তারিখ স্থাপন করেছেন।
লিখিত অভিযোগকারী বাবুল হোসেন, গোলজারসহ আরও কয়েকজন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, স্থানীয় এলাকাবাসী সহকারী শিক্ষক জমশেদ আলীর জাল সনদ দিয়ে চাকরিসহ মিথ্যা তথ্য দিয়ে চাকরি নিয়ে সরকারি কোষাগার থেকে যে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তা ফেরতসহ তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক জমশেদ আলী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এমপিও কপিতে ভুলবশত ১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দের পরিবর্তে ১৯৮৪ খ্রিষ্টাব্দ হয়েছে। যা সংশোধনের জন্য আমি আবেদন করেছি। তিনি আরও দাবি করেন, ১৯৭৯ খ্রিষ্টাব্দে এক বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী দাখিল পাস না করেও আলিম পরীক্ষায় অংশ নেয়া যেত।
বিএড সনদের বিষয়ে তিনি বলেন, আমি বিএড স্কেল গ্রহণ করিনি। চাকরি যোগ্যতা অনুযায়ী উচ্চতর স্কেল পেয়েছি।
ডিমলা আকাশকুড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামিনী রায় দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, সভাপতি বরাবর ওই সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরীক্ষা সংক্রান্ত কাজে ব্যস্ততার কারণে বিষয়টি সভাপতি ও কমিটির অন্যান্যদের সঙ্গে আলোচনা করা সম্ভব হয়নি। তবে তার সনদ ভুয়া কি না তা তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত আমি বলতে পারবো না।
জেলা শিক্ষা অফিসার মো. শফিকুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ডিমলা উপজেলা একাডেমিক সুপার ভাইজারকে বিষয়টি তদন্ত করতে বলা হয়েছে।