বিতর্কিত শাহেদুল-মাসুদা-আক্তারুজ্জামন গংদের বিরোধীতা ও হুমকি উপেক্ষা করে সারা দেশ থেকে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তারা আজ ঢাকা কলেজের এসেছেন। প্রায় তিন বছর ধরে অচল করে রাখা হয়েছে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি। এই সময়ে সমিতির সদস্যদের দেয়া চাঁদার টাকা আত্মসাৎ করেছে শাহেদুল গংরা। সরকারি কলেজ শিক্ষকদের এই সংগঠনটির নির্বাচন না দিয়ে শাহেদুল গংরা দখল করে আছে। এ নিয়ে সাধারণ শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভের অন্ত নেই। এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন গ্রুপের সিনিয়র শিক্ষক নেতারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে সাধারণ সভা ডেকেছেন। আজ বিকালে ডাকা এই সভায় যোগ দিতে ঢাকা কলেজে জড়ো হয়েছেন তারা।
সভায় দুটি কমিশন গঠন করা হবে। নির্বাচন হবে ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে। দৈনিক আমাদের বার্তাকে এ তথ্য জানিয়েছেন একাধিক নেতা। তারা বলেছেন আজকের সভা ভণ্ডুল করার জন্য গুলিবিদ্ধ শাহেদুল-তোফা-আক্তারুজ্জামান গং ফেসবুক-মোবাইল এসএমএসসহ নানা মাধ্যমে অপপ্রচার চালিয়েছে। বেসরকারি রতনও শাহেদুলদের সঙ্গে। বেসরকারি হয়েও ক্যাডার কর্মকর্তাদের ওপর ছড়ি ঘোরানোয় রতনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার দাবি এসেছে সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায় থেকে।
সংগঠনের সর্বশেষ কমিটির সভাপতি ছিলেন ঢাকা কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ অধ্যাপক আইকে সেলিমউল্লাহ খোন্দকার এবং মহাসচিব ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) পরিচালক অধ্যাপক শাহেদ খবির চৌধুরী। মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও সংগঠনের পদ আঁকড়ে থাকা প্রসঙ্গে সেলিমউল্লাহ খোন্দকার বলেন, এটা ঠিক যে যথাসময়ে নির্বাচন দেওয়া যায়নি। মূল মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে গঠনতন্ত্র মেনে ২ বারে মোট ৪ মাস কমিটির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল। কিন্তু এতবড় সংগঠনের পদ-পদবির পরিচয় দিয়ে কেউ কেউ ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিল করেছে। যে কারণে মেয়াদ শেষেও নির্বাচন দেওয়া যায়নি। তিনি বলেন, ‘শুধু তাই নয়, আমি বিদেশে অবস্থানকালে স্বার্থান্বেষী মহল গোপনে একটি আহ্বায়ক কমিটিও গঠন করে ফেলেছিল। পরে অবশ্য ওই কমিটি ভাঙতে বাধ্য হয়। পাশাপাশি যে ৬ মাসের জন্য আহ্বায়ক কমিটি করা হয়। কিন্তু সেই কমিটিও চিহ্নিত স্বার্থান্বেষীদের কারণে নির্বাচন দিতে পারেনি। ফলে সারা দেশের সদস্যরা এখন একত্রিত হচ্ছেন।’
আজ সকালে ঢাকা কলেজে আয়োজিত জরুরি সাধারণ সভাটি ডেকেছেন সাবেক ৫ শিক্ষক নেতা। তারা হলেন, বিদায়ী কমিটির সভাপতি অধ্যাপক সেলিমউল্লাহ খোন্দকার, সাবেক মহাসচিব অধ্যাপক মাসুমে রাব্বানী খান ও অধ্যাপক অলিউল্লাহ আজমতগীর, স্বাধীনতা বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সংসদের আহ্বায়ক অধ্যাপক নাসির উদ্দিন, সদস্য সচিব সৈয়দ জাফর আলী। একজন শিক্ষক নেতা জানান, তারা গঠনতন্ত্রের ৮ ধারা মোতাবেক এই সভা ডেকেছেন। সভাটি আরও পরে ডাকার চিন্তা ছিল। কিন্তু দুষ্কৃতকারীরা সমিতির নামে টাকা তোলা শুরু করেছেন।
সমিতির জবরদখলকারীরা শিক্ষাপ্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকায় ভয়ে জুনিয়র কর্মকর্তারা মুখ খুলতে পারছিলেন না। পাশাপাশি তারা টাকা দিতে বাধ্য হচ্ছেন। এ অবস্থায় সভাটি ডাকা হয়েছে। ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের ১ জুন ২ বছরের জন্য সর্বশেষ সমিতির নির্বাচন হয়। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের জুনে মেয়াদ শেষ হয়। অধ্যাপক সেলিমউল্লাহ বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে সভা অনুষ্ঠিত হবে।