অভাব আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের কারণে কুড়িগ্রামে বাড়ছে বাল্যবিয়ে। করোনার দুর্যোগে দরিদ্র পরিবারে অভাব দেখা দেয়া এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অভিভাবকরা বিয়ে দিচ্ছেন। আর এতে করে জেলায় বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি। সচেতনতা আর অর্থনৈতিক সংকটকে দায়ি করছেন জনপ্রতিনিধিরা।
জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা ও দুধকুমারসহ ১৬টি নদ-নদীর ছোট-বড় প্রায় সাড়ে ৪ শতাধিক চর রয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পার হতে না হতেই ছাত্রীদের বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়। চরাঞ্চলসহ প্রত্যন্ত এলাকার চিত্র এমনটাই। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় মেয়েদের বিয়ে দিচ্ছেন বাবা-মা। মেয়েদের জন্য সৃষ্টি হয়েছে প্রতিকুল পরিবেশ আর দরিদ্রতার সাথে সামাজিক সমালোচনা। প্রভাব রয়েছে বয়স বাড়ার সাথে সাথে যৌতুকের টাকার অঙ্ক বেশি হবার শংকা। এসব চিন্তা ভাবনা থেকেই অভিভাবকরা কম বয়সে বিয়ে দিচ্ছেন।
এছাড়াও মেয়েরা সংসারের বোঝা এ কুসংস্কার থেকেও বিয়ে দেয়া হয়ে থাকে বলে মত অভিভাবকদের। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই গর্ভধারণ করে কিশোরীরা। এতে করে অপুষ্টিতে ভুগে হারিয়ে ফেলে শারিরিক সক্ষমতা।
একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের জরিপে উঠে এসেছে কুড়িগ্রামের বাল্যবিবাহের ভয়াবহতা। পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর থেকে ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের আগস্ট পর্যন্ত ৩৩ মাসে বাল্যবিয়ে হয়েছে ২ হাজার ৬০৩টি। বাল্যবিয়ে বন্ধ হয়েছে ৯৬১টি। ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত বাল্যবিয়ে হয়েছে ৩৩৯টি এবং বন্ধ হয়েছে ৭১টি। শুধুমাত্র আগস্ট মাসে ৪৭টি বাল্যবিয়ে হয়েছে। বন্ধ হয়েছে ১১টি।
ভূরুঙ্গামারী উপজেলার বলদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান বাাল্যবিয়ে বৃদ্ধি পাওয়ার কথা স্বীকার করে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান,বাল্যবিয়ে রোধে আরো কঠোর আইনের প্রয়োগসহ সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর জোড় দেয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, স্থানীয় প্রশাসনের পাশাপাশি জেলায় বাল্যবিয়ে রোধে কাজ করে যাচ্ছে আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী।