শিশু কথা বলতে শুরু করে মায়ের কাছ থেকে এবং তার প্রাতিষ্ঠানিক ভাষা শিক্ষা শুরু হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়ার পর। বাড়িতে বর্ণমালার প্রাথমিক পরিচয় সম্পন্ন হয়। তারপর প্রাক প্রাথমিক শ্রেণিতে ভর্তি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শিখন প্রক্রিয়া শুরু হয় আনুষ্ঠানিকভাবে। বর্ণের ব্যবহার, শব্দ তৈরি, শব্দ থেকে বাক্য তৈরি এবং বাংলাভাষার মাধুর্যের সঙ্গে ক্রমেই তার পরিচিতি ঘটতে থাকে। সোমবার (৮ ফেব্রুয়ারি) ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানা যায়।
চিঠিতে আরও জানা যায়, প্রতি বছর একুশে ফেব্রুয়ারিতে ভাষাশহিদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরা অংশ নেয়। ভাষা আন্দোলনে জীবন উত্সর্গকারীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে বাংলাভাষার সেই গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের সঙ্গে পরিচয় ঘটতে থাকে তাদের। আর এই ভাষার প্রতি যে দায়িত্ব রয়েছে তা তারা বুঝতে শেখে। তবে দুঃখজনক হলো, দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার নেই।
বিভিন্নভাবে ভাষার যে বিকৃতি চলছে তা রোধ করতে ভাষার প্রতি মমত্ববোধ একান্ত প্রয়োজন। ভাষা হিসেবে বাংলা অত্যন্ত সমৃদ্ধ। বাংলা বর্তমানে বিশ্বে অন্যতম প্রভাবশালী ভাষাগুলোর একটি। ভাষার মাধ্যমেই আমাদের ব্যক্তিত্বের প্রকাশ ঘটে। তাই নিজ ভাষাকে প্রথমে জানতে হবে, বুঝতে হবে ও আত্মস্থ করতে হবে। এজন্য বাংলাভাষার সেই ইতিহাস যা নিয়ে আমরা গর্বিত, যে সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের কারণে আমরা বাংলাভাষা নিজেদের করে পেয়েছি এবং যা পাকিস্তান শাসকগোষ্ঠী বদলে দিতে চেয়েছিল—সেই ইতিহাস তাদের জানাতে হবে। আর ভাষাশহিদদের স্মরণে নির্মিত শহিদ মিনার আত্মপ্রত্যয় জোগাবে বাংলাকে সর্বক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত করার। প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার থাকার অর্থ হলো শিক্ষার্থী প্রতিদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে শহিদ মিনার দেখবে এবং তার মনে দায়িত্ববোধের জন্ম নেবে। এ ব্যাপারে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
লেখক : অলোক আচার্য, পাবনা