প্রশ্নপত্র ফাঁস আগেও হয়েছে। এখন এটা অনেক বেড়ে গেছে। কিন্তুু যারা ফাঁস করছে, তাদের ধরা হচ্ছে না । কেন ধরা হচ্ছে না ? কেন শাস্তি হচ্ছে না ? অপরাধের যদি শাস্তি না হয়, তাহলে অপরাধ বাড়বেই। এমন মন্তব্য বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর।
দৈনিকশিক্ষাকে তিনি বলেন, আমাদের গোয়েন্দারা দক্ষ, দুর্ধর্ষ জঙ্গিদের ধরে ফেলেন। তাঁরা ফেসবুকে কোন আপত্তিকর মন্ত্যব করলে তাকে ত্বরিত গতিতে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসেন। তাহলে এ ক্ষেত্রে কেন হচ্ছে না ? আসলে এখন দুর্নীতি সমাজের সর্বত্র প্রবেশ করেছে। প্রশ্নপত্র ফাঁস তার থেকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। আর এ বিষয় গুরুত্ব দেয়ো হচ্ছে না। আমি মনে করি না, এটা কোন অসম্ভ কাজ। ইংরেজি মাধ্যমের পরীক্ষাগুলো তো প্রশ্নপত্র ফাঁস ছাড়ায় হচ্ছে। আমার মনে হয়, বাংলা মাধ্যমের প্রতি আমাদের কার্তাব্যক্তিরা অতটা গুরুত্ব দেন না।
এভাবে গোটা শিক্ষাব্যবস্থাই ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। বিষয়টিতে অত্যন্ত গুরুত্ব দিতে হবে। পরীক্ষার ফল নিয়ে এতো উল্লাস করা হয়, পরীক্ষার ফল ভালো হলে শিক্ষার অগ্রগতি হচ্ছে, সরকারের বিরাট সাফল্য- এভাবে দেখানোটাও ভুল। এখন পরীক্ষা ও ফলের ওপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়, এটা শিক্ষার দুর্বলতা। এটা আগেও ছিলো। এখন বেড়ে গেছে। শ্রেণিকক্ষে শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে না, পরীক্ষার উপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা কোচিং সেন্টারে যাচ্ছে, গাইড় বই পড়ছে এবং প্রশ্নপত্র ফাঁসের দুর্নীতিটা এখান থেকে তৈরি হচ্ছে। এখান বের হয়ে আসতে হলে প্রশ্নপত্র ফাঁসকারীদের অবশ্যই ধরতে হবে, শাস্তি দিতে হবে। কিন্তুু বেরোনোর আসল উপয় হচ্ছে আমরা গুরুত্ব দেব পাঠকে,গুরুত্ব দেব না পরীক্ষাকে। সব পরীক্ষাই স্কুলে হবে। একটা মাত্র পাবলিক পরীক্ষা হবে। আরও দুটি পাবলিক যুক্ত করা হয়েছে, সেটা অন্যায়। এগুলোই প্রশ্ন ফাঁসকে উ?সাহিত করছে। এমসিকিউ তুলে দেওয়ার চিন্তা ভালো। সৃজনশীলও অনেকে বোঝে না। ফলে এটা ক্ষতি করছে। ভালো শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে। তাদের সম্মানজনক বেতন- ভাতা দিতে হবে। পরীক্ষার প্রশ্ন গুরুত্বপূর্ণ হবে উত্তর। প্রশ্ন সরল হবে, সেখানে ছাত্র বুঝল কি না, প্রকাশ থাকতে হবে লেখার মাধ্যমে। সবচেয়ে বড় কথা হলো, শিক্ষাকে শ্রেণিকক্ষে ফিরিয়ে নিতে হবে।