শিক্ষার প্রকল্প বাস্তবায়নে সমন্বয়হীনতা এবং আর্থিক ও বাস্তব অগ্রগতি একই হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছে অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের আওতাধীন শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের চলমান ১৭টি প্রকল্পের মধ্যে আটটির অগ্রগতি ২৫ শতাংশের কম। আর কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের আওতার ১১টি প্রকল্পের মধ্যে ৮টির মেয়াদকাল শেষ হলেও অগ্রগতি কম। এসব প্রকল্পের মধ্যে ছয়টির অগ্রগতি ২০ শতাংশের কম।
রোববার (২২ আগস্ট) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে আলোচনাকালে অসন্তোষ প্রকাশ করেন সদস্যরা। এছাড়া পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের প্রকল্পের ধীরগতি নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেছে কমিটি।
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি আব্দুস শহীদ সাংবাদিকদের বলেন, আমরা দুটি মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করেছি। বাস্তবায়নে খুবই ধীরগতি। আমাদের মনে হচ্ছে, প্রকল্প বাস্তবায়নে সমন্বয় নেই। তাছাড়া বেশ কিছু প্রকল্পে দেখা গেছে আর্থিক ও বাস্তব অগ্রগতি হুবহু একই। এটা হওয়ার কথা নয়। আমাদের মনে হয়েছে প্রকল্প বাস্তবায়নে তাদের ঘাটতি রয়েছে।
সংসদীয় কমিটির বৈঠকের কার্যপত্রে দেখা গেছে, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের আওতাধীন শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের চলমান ১৭টি প্রকল্পের মধ্যে আটটির অগ্রগতি ২৫ শতাংশের কম। তিনটির অগ্রগতি ৫০ শতাংশের কম। বাকি ছয়টির অগ্রগতি ৫০ শতাংশের বেশি।
আর কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের আওতার ১১টি প্রকল্পের মধ্যে ৮টির মেয়াদকাল শেষ হলেও অগ্রগতি কম। এসব প্রকল্পের মধ্যে ছয়টির অগ্রগতি ২০ শতাংশের কম। একটির অগ্রগতি মাত্র নয় শতাংশ। সর্বোচ্চ অগ্রগতি হওয়া দুটি প্রকল্পের অগ্রগতি যথাক্রমে ৬৫ ও ৮০ শতাংশ। ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারি শুরু হওয়া দেড় বছরে এই বিভাগের একটি প্রকল্পের বাস্তব অগ্রগতি শূন্য শতাংশ।
কমিটির সভাপতি আব্দুস শহীদ আরও বলেন, প্রকল্প নিয়ে কথা বলার সময় মন্ত্রণালয় কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কথা তুলেছে। আমরা বলেছি, ওয়ার্ক অর্ডার হয়ত এখন দিচ্ছেন না। কিন্তু তার আগের কাজগুলো তো ঠিকমতো করা যায়। প্রকল্পের সমীক্ষা, সক্ষমতা যাচাই, প্রাক্কলন এসব বিষয় যদি ঠিকমতো হয় তবে বাস্তবায়ন সহজ হয়।
সংসদীয় কমিটির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বৈঠকে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীন চলমান প্রকল্পগুলেঅর আর্থিক বিবৃতিসহ প্রতিবেদন আগামী দুই মাসের মধ্যে কমিটির কাছে জমা দেওয়ার সুপারিশ করা হয়। এছাড়া যোগাযোগ ব্যবস্থা ও জমি অধিগ্রহণে সুবিধাজনক জায়গা নির্ধারণ করতে যে কেনো প্রতিষ্ঠান নির্মাণের ক্ষেত্রে জায়গা একবারে নির্দিষ্ট (যেমন সদর) না করে প্রকল্প গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।
প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় সক্ষমতা থাকা সাপেক্ষে এবং সময় বৃদ্ধি রোধে পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা ও আগাম প্রস্তুতি নিয়ে বৈঠকে প্রকল্প গ্রহণের সুপারিশ করা হয়। বৈঠকে কাজের সুবিধার্থে ও আর্থিক খরচ কমাতে বড় প্রকল্পগুলো মন্ত্রণালয়কে একাধিক ভাগে ভাগ করে গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।
আব্দুস শহীদের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটি সদস্য প্রধান হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী, এ বি তাজুল ইসলাম, ফজলে হোসেন বাদশা, বজলুল হক হারুন, আহসান আদেলুর রহমান, ওয়াসিকা আয়শা খান, গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ ও খাদিজাতুল আনোয়ার অংশ নেন।