আসন্ন জাতীয় সংসদ অধিবেশনে আমাদের দেশের ৫১তম জাতীয় বাজেট অর্থাৎ ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপিত হবে। এ বাজেটকে ঘিরে জাতির অনেক প্রত্যাশা। কেননা বিগত দু’বছর ধরে সারা বিশ্বের সব দেশের মতো আমরাও ভয়ঙ্কর করোনা মহামারির কবল হতে মুক্ত হওয়ার জন্য যুদ্ধ করে চলেছি। দেশের প্রতিটি ক্ষেত্র-শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ক্ষেতখামার, কলকারখানা উৎপাদন, যোগাযোগ ব্যবস্থা, সর্বপরি স্বাভাবিক জীবনযাত্রাই কেবল ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি বরং আমাদের অস্তিত্ব হয়েছে বিপন্ন। তাছাড়া এখনও যে সম্পূর্ণ করোনামুক্ত হতে পেরেছি তা নিশ্চিত করে বলা যাবে না। সে কারণে আমাদের অস্তিত্ব ও অগ্রগতি এ দুই বিষয়কেই সমান গুরুত্ব দিয়ে সুপরিকল্পনার ভিত্তিতে বাজেটে অর্থ বরাদ্দ দিতে হবে।
তবে, এ কথা সর্বজন স্বীকৃত যে, শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। কিন্তু করোনা মহামারির প্রকোপে শিক্ষায় যে ধস নেমেছে তা থেকে পুনরুদ্ধার পেতে এবং করোনার কারণে উদ্ভূত যে কোনো অশুভ পরিস্থিতি মোকাবিলা করার কথা সামনে রেখে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ দিতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে যেন যে কোনো ধরনের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিপত্তি বা ঝুঁকি মোকাবিলা করা যায় সে ব্যবস্থা থাকতে হবে। জাতীয় পর্যায় থেকে তৃণমূল পর্যায়ের শিক্ষা ব্যবস্থা সমন্বয় থাকতে হবে, এ জন্য সুষ্ঠু পরিকল্পনা প্রণয়ন নিশ্চিত করতে হবে। সাবধানতা অবলম্বনের বিষয়ে অবশ্যই গুরুত্বারোপ করতে হবে। তবে, অহেতুক ভীতি বা সংশয়ের যাতে কোনো অবকাশ না থাকে। সে জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ করতে হবে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে পাঠ্যসূচি প্রণয়ন, পরীক্ষা পরিচালনা সফল ব্যবস্থাপনার জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক বরাদ্দ থাকতে হবে। এ বাজেটে শিক্ষাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে আর্থিক বরাদ্দ দিলে যে ক্ষতি হয়েছে পর্যায়ক্রমে তা পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হবে।
আরও একটি বিষয় অবশ্যই বিবেচনায় রাখতে হবে। শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নে শিক্ষা ব্যবস্থায় বৈষম্য দূরীকরণের জন্য ক্রমান্বয়ে যাতে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারিকরণের লক্ষ্য অর্জন করতে পারে সেভাবে আর্থিক বরাদ্দ থাকতে হবে।
লেখক : অধ্যক্ষ মোহাম্মদ মাজহারুল হান্নান, সভাপতি, বাংলাদেশ অধ্যক্ষ পরিষদ