শিক্ষার্থীদের আবাসন নিশ্চিত করে সশরীরে পরীক্ষা নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্সি বিভাগ। বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ৭ম সেমিস্টারের পরীক্ষা রোববার দুপুর ১২টা থেকে শুরু হয়; চলে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনে ওই সেমিস্টারের ‘মেডিয়েবল ফার্সিয়ান প্রোস অ্যান্ড পয়েট্রি ইন ইরান’ কোর্সের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষায় ৮১ শিক্ষার্থীর সবাই উপস্থিত ছিলেন।
ফার্সি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী বখতিয়ার রাব্বী বলেন, ‘আমাদের বিভাগ অনেক সাহায্য করেছে। আমরা চাচ্ছিলাম আমাদের পরীক্ষাটা দ্রুত হয়ে যাক। হল বন্ধ থাকলেও যাদের আর্থিক ও আবাসন সমস্যা ছিল, বিভাগ মেয়েদের প্রাধান্য দিয়ে সেগুলোর পূর্ণ সমাধান করেছে। কয়েকজন মেয়ে শিক্ষকদের বাসায় থাকছে।’
বিভাগের ছাত্র উপদেষ্টা ও সহকারী অধ্যাপক আহসানুল হাদীর বাসায় থাকছেন শায়লা ফারজানা মিতুসহ আরও দুই শিক্ষার্থী।
মিতু বলেন, ‘আমিসহ আরেও কয়েকজন মেয়ের আবাসন সমস্যা ছিল। তাদের স্যারদের বাসায় রেখে আবাসন সমস্যার পূর্ণ সমাধান করে পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। পরীক্ষার হলে যতটা স্বাস্থ্যবিধি এবং দুরত্ব বজায় রাখা যায় সবকিছুই করা হয়েছে, যেন আমরা সর্বোচ্চ সুরক্ষা ও নিরাপত্তা পাই।’
এ বিষয়ে বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ বাহাউদ্দীন বলেন, ‘আমাদের ৮১ জন শিক্ষার্থীর সবাই আজকে পরীক্ষায় উপস্থিত হয়েছে। নরমাল সময়ে পরীক্ষা নিলেও তো দু-চারজন অনুপস্থিত থাকে। ১০-১৫ জনের ঝামেলা ছিল, আমরা তাদের সেভাবে সহযোগিতা করেছি।’
কী রকম সহযোগিতা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অনেক ছাত্রকে মেসে উঠিয়ে দিয়েছি, অনেককে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করেছি। আর মেয়েদের যাদের ঝামেলা ছিল, তাদের আত্মীয়-স্বজনের বাসায় এবং আমাদের দুইজন শিক্ষকের বাসায় রেখেছি। সব মেয়ে ও ছেলে যথাসময়ে এসে পরীক্ষায় উপস্থিত হয়েছে।’ পরীক্ষার হল পরিদর্শনে যান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড এ কে এম গোলাম রাব্বানী।
তিনি বলেন, ‘কঠিন সময় থাকলেও শিক্ষার্থী ও বিভাগের যৌথ ব্যবস্থাপনায় শতভাগ উপস্থিতিতে আজকে ফার্সি বিভাগের পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। এটি খুবই আশাবাদী ও ইতিবাচক পদক্ষেপ।
‘এ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে। সার্বিক সহযোগিতার ভিত্তিতে যে বিভাগেরই শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করবে তাদেরও পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা থাকলেও শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। এটিই তো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল্যবোধ।
‘পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে বিভাগগুলো তাদের নিজ নিজ শিক্ষার্থীদের নিয়ে কাজটি করছে। শিক্ষার্থীদের সম্ভাব্য সব উপায়ে যেনো সহযোগিতা করা হয় সে বিষয়টির প্রতি যত্নশীল থাকার জন্য সব বিভাগ ও ইনস্টিটিউটকে বলা হয়েছে।’