শিক্ষার্থীদের করোনা টিকা নিবন্ধনে জটিলতা - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষার্থীদের করোনা টিকা নিবন্ধনে জটিলতা

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

আবদুল্লাহ মাহি ২০০৬ সালের জুনে জন্মগ্রহণ করে। সে ঢাকার মতিঝিলে একটি স্কুলে নবম শ্রেণীতে পড়ে। সে করোনা টিকার জন্য নিবন্ধনের চেষ্টা করেছিল, কিন্তু নিবন্ধন প্রক্রিয়া আটকে যায়।

ওই শিক্ষার্থীর বাবা আবদুল্লাহ আজাদ বলেন, ‘আমি সিটি করপোরেশনের অফিসে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, ২০০৭ সালের আগে যারা জন্ম নিবন্ধন সনদ নিয়েছে তা অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে না। ২০০৭ সালের পরবর্তীতে যারা জন্ম নিবন্ধন করেছে তাদের সনদ ওয়েবসাইটে আছে। এ কারণে টিকার জন্য আমার ছেলের জন্ম নিবন্ধন নতুন করে করতে হয়েছে।’বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) দৈনিক সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখছেন রাকিব উদ্দিন।

প্রতিবেদনে আরও জানা যায় মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ছেলের টিকার জন্য নিবন্ধন করতে গেলে দেখা যায়, ওয়েবসাইটে বাংলায় সব তথ্য শো করছে, কিন্তু ইংরেজিতে কোন তথ্য দেখা যাচ্ছে না। এই জটিলতার কারণে তিনদিন চেষ্টা করে আবেদন করা সম্ভব হয়। এরপর টিকা মেলে।’

ওইসব জটিলতার কারণে নিবন্ধন ছাড়াই শিক্ষার্থীদের করোনা টিকা দেয়া হচ্ছে। সারা দেশের স্কুল-কলেজ থেকে ‘সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ ডাটা’ না আসায় ‘সুরক্ষা অ্যাপে’ টিকার নিবন্ধন যথাযথ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হচ্ছে না। আবার তৃণমূল পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা স্থানীয় পর্যায়ের কম্পিউটার দোকান থেকে নিবন্ধন ফরম পূরণ করতে গিয়ে নানা রকম ‘ভুল’ ও ‘অসঙ্গতিপূর্ণ’ তথ্য ইনপুট হচ্ছে।

এই ধরনের ভুল সংশোধনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বারবার তথ্য চাইতে হচ্ছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরকে (মাউশি)। কারণ এই তালিকা আইসিটি বিভাগে পাঠানো হলে তাদের সবার নাম ‘সুরক্ষা অ্যাপে’ অন্তুর্ভুক্তিতে জটিলটা হচ্ছে। এই ‘জটিলতা’ কাটাতেই আপাতত নিবন্ধন ছাড়াই শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়া শুরু হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের করোনা টিকাদান কার্যক্রম সমন্বয় করছেন মাউশির পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) প্রফেসর শাহেদুল খবির চৌধুরী। তিনি গতকাল জানান, ‘এখন নিবন্ধন ছাড়াই শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে এই কার্যক্র শুরু হয়ে গেছে। দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার আগে সবাইকে নিবন্ধনের চেষ্টা করতে হবে। নিবন্ধন করতে না পারলেও দ্বিতীয় ডোজ দেয়া হবে। তবে নিবন্ধন ছাড়া কেউই টিকার সনদ পাবে না।’ নিবন্ধন ছাড়া টিকাদানের কারণ জানতে

চাইলে শাহেদুল খবির চৌধুরী বলেন, ‘বার্থ রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে নিবন্ধন করতে গিয়ে কিছু জটিলতা হচ্ছে। অনেকেই গ্রামাঞ্চলের মোবাইল ফোন, কম্পিউটার অপারেটরের দোকান থেকে নিবন্ধন ফরম পূরণ করছে, এতে অনেক সময় ভুল ডাটা ইনপুট হচ্ছে। আমরা এসব ডাটা আইসিটি বিভাগে পাঠালে ‘সুরক্ষা অ্যাপে’ তা নিচ্ছে না। পরবর্তীতে আবারও স্কুল-কলেজে তথ্য চাওয়া হচ্ছে। এসব জটিলতার কারণেই নিবন্ধন ছাড়াই টিকা দেয়া হচ্ছে।’

গত ১ নভেম্বর থেকে ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের করোনার টিকাদান শুরু হয়। এরপর ১৩ নভেম্বর থেকে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের টিকাদান শুরু হয়। প্রথম পর্যায়ে ১৫ দিনের মধ্যে ঢাকা মহানগরীর সব শিক্ষার্থীকে টিকাদানের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছিল। কিন্তু ১৫ দিনের স্থলে এক মাসেও ঢাকার মাত্র অর্ধেক শিক্ষার্থীকে টিকা দেয়া সম্ভব হয়েছে।

মাউশি পরিচালক শাহেদুল খবির চৌধুরী ঢাকার শিক্ষার্থীদের টিকা কর্মসূচির অগ্রগতির বিষয়ে গতকাল জানান, ঢাকায় টিকা পাওয়ার উপযোগী শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ছয় লাখ। এর মধ্যে ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত তিন লাখের কিছু বেশি শিক্ষার্থী টিকা পেয়েছে।

ঢাকায় টিকা কর্মসূচি শেষে ২৫ নভেম্বরের মধ্যে ৩৫ জেলায় এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের টিকা কর্মসূচি শেষ করার পরিকল্পনা নিয়েছিল মাউশি। এরপর জেলায় পর্যায়ে ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের টিকাদান শুরু হয়।

অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী জানিয়েছেন, কারিগরি ও মাদ্রাসাসহ সারা দেশে ১২ বছরের বেশি বয়সের প্রায় এক কোটি শিক্ষার্থী রয়েছে। সবাইকে টিকা দেয়ার সিদ্ধান্ত রয়েছে সরকারের।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ১২ বছরের বেশি বয়সী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৪ লাখ ৬৬ হাজার ৭৪৫ জন শিক্ষার্থী টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছে। এই সময়ে টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছে দুই লাখ ৬১ হাজার ৩৮৪ জন। আর এই সময়ে জন্ম নিবন্ধন সনদের মাধ্যমে নিবন্ধন হয়েছে দুই লাখ ৭৬ হাজার ৮৯৫ জনের।

গত ১৪ অক্টোবর মানিকগঞ্জের কয়েকটি স্কুলের ১২০ শিক্ষার্র্থীকে পরীক্ষামূলকভাবে ফাইজারের টিকার প্রথম ডোজ দেয়া হয়। এরপর গত ১ নভেম্বর ঢাকা মহানগরীতে শিক্ষার্থীদের টিকাদান শুরু হয়।

সরকার স্কুল-কলেজ পর্যায়ের ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের যুক্তরাষ্ট্রের উদ্ভাবিত ‘ফাইজার’ টিকা দিচ্ছে। ইতোমধ্যে বিশ^বিদ্যালয় পর্যায়ের অর্থাৎ ১৮ বছরের বেশি বয়সী শিক্ষার্থীদের টিকাদান সম্পন্ন হয়েছে।

জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ - dainik shiksha পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা - dainik shiksha হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে - dainik shiksha সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো - dainik shiksha ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা - dainik shiksha তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0043449401855469