শিক্ষার্থীদের টিকা প্রদান কার্যক্রমে শিক্ষার্থী ও কর্তৃপক্ষকে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। এ ছাড়া অব্যবস্থাপনা ও বিশৃঙ্খলার অভিযোগও পাওয়া গেছে।
ঝিনাইদহের শৈলকুপায় টিকা নিতে আসা শিক্ষার্থীরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও স্বাস্থ্যকর্মীদের অবরুদ্ধ করে রাখে বলে জানা যায়। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও টিকা না পাওয়া এবং টিকা কর্মসূচি বন্ধ রাখায় স্বাস্থ্যকর্মীদের অবরুদ্ধ করা হয়। এ ছাড়া অনেক শিক্ষার্থীকে টিকা ছাড়াই বাড়ি ফিরতে হয়েছে।
রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে টিকা নিতে এসে দীর্ঘ সময় লাইনে অপেক্ষা করতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। একটি মাত্র কেন্দ্রে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করায় ভোগান্তি সৃষ্টি হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ভিড় বাড়ায় টিকা কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে বলেও জানা যায়।
গতকাল সোমবার শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে টিকা নিতে আসা শিক্ষার্থীদের একাংশ জানায়, কেন্দ্রে ছাত্রীদের টিকা কার্যক্রম চললেও ছাত্রদের টিকা প্রদান বন্ধ রয়েছে। টিকা না পেয়ে হাসপাতাল ক্যাম্পাসে অপেক্ষায় রয়েছে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী। পরে টিকা না পেয়ে বাড়ি ফিরতে হয়েছে তাদের।
সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক খাদিজা বেগম বলেন, তৃতীয় তলায় কনফারেন্স রুমে শুধু ছাত্রদের টিকা প্রদান করা হচ্ছিল। হঠাৎ নিয়ন্ত্রণহীন শিক্ষার্থীরা তাদের ধাক্কাতে ধাক্কাতে ওয়াশ রুমে অবরুদ্ধ করে। এ কারণে কর্তৃপক্ষ টিকা প্রদান বন্ধ করে দেয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রাশেদ আল মামুন বলেন, শিক্ষার্থীদের অসৌজন্যমূলক আচরণের কারণে টিকা প্রদান বন্ধ করা হয়েছে। ছাত্রদের সঙ্গে কোনো অভিভাবক শিক্ষক না থাকায় নিয়ন্ত্রণহীন ছাত্ররা টিকা প্রাদনকারী নার্স ও সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শককে অবরুদ্ধ করে রাখে।
রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, করোনার টিকা নিতে আসা শিক্ষার্থীদের উপচে পড়া ভিড়। দুই থেকে তিন ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষার পর মিলছে টিকা। টিকা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে। সঠিকভাবে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধিও। টিকা নিতে আসা ছেলেমেয়েদের আলাদা দুটি সারি হাসপাতালের করিডোর ছেড়ে প্রায় রাস্তার কাছে চলে গেছে। হাসপাতালের সামনের রাস্তায় সৃষ্টি হয়েছে যানজট। রাজবাড়ীর সিভিল সার্জন ডা. ইব্রাহীম হোসেন টিটন জানান, আগে শুধু রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল থেকে শিশুদের টিকা দেওয়া হতো। ভিড় কমানোর জন্য এখন থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে টিকাদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মাউশি থেকে নির্দেশনা আছে, ১৫ জানুয়ারির মধ্যে শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া শেষ করতে হবে। এ কারণে সব শিক্ষার্থী একত্রে চলে আসছে।
রাজবাড়ী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, আমরা স্কুল থেকে শিডিউল করে সিভিল সার্জন অফিসে জমা দিই। শিডিউলের বাইরে অনেকে চলে আসছে। হাসপাতালের স্থান সংকীর্ণ হওয়ায় ভিড় মনে হচ্ছে। এ পর্যন্ত ৬০ হাজার শিক্ষার্থীকে টিকা দেওয়া হয়েছে। আশা করি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সব শিক্ষার্থীকে টিকা দেওয়া সম্ভব হবে।