করোনাভাইরাসের টিকার দিকে তাকিয়ে আছেন দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর এক লাখ ৩০ হাজার শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নির্দেশে গত মার্চে তারা টিকার জন্য নিবন্ধন করেন। এরপর আড়াই মাস পেরিয়ে গেছে। সেই থেকে অপেক্ষা, পাশাপাশি টিকা না পেয়ে দীর্ঘ হচ্ছে তাদের শিক্ষাজীবন। করোনার কারণে এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রায় এক বছরের সেশনজট তৈরি হয়েছে।
আবাসিক শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া নিশ্চিত করে তবেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলতে চায় সরকার। তাই টিকার সঙ্গে স্বাস্থ্যগত দিকটির সঙ্গে বড় বিবেচনায় আসছে শিক্ষাজীবনও।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, 'সব শিক্ষার্থীর তালিকা সরকারের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি। আমাদের অনুমান উচ্চশিক্ষা পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের টিকা দিতে হলে মোটামুটি ১০ লাখ ডোজ নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে আমরা সেসব জানিয়েছি।'
বর্তমানে দেশে মোট ৫০টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এগুলোর মধ্যে ৪৬টিতে শিক্ষা কার্যক্রম চালু আছে। বাকিগুলো নতুন। এ ছাড়া সরকার অনুমোদিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আছে ১০৭টি। সব ধরনের বিশ্ববিদ্যালয় (অধিভুক্ত ও উপাদানকল্প কলেজ ও মাদ্রাসা) মিলিয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৯ লাখের বেশি। তবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় বাদে বাকি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের (অধিভুক্ত কলেজ বাদে) নিজস্ব শিক্ষার্থীর সংখ্যা পৌনে চার লাখের মতো।
ইউজিসির তথ্যমতে, দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ২২০টি আবাসিক হল আছে। এগুলোতে শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় এক লাখ ৩০ হাজার। আবাসিক হলে থাকা এই এক লাখ ৩০ হাজার শিক্ষার্থীর টিকা নিশ্চিত করে খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত রয়েছে সরকারের।
আরও পড়ুন : দৈনিক শিক্ষাডটকম পরিবারের প্রিন্ট পত্রিকা ‘দৈনিক আমাদের বার্তা’
ইউজিসির একজন কর্মকর্তা জানান, দেড় মাস আগে ইউজিসি থেকে টিকা পাওয়ার যোগ্য আবাসিক শিক্ষার্থীদের তালিকা করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। বাকিটা মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ার।
তিনি জানান, শিক্ষার্থীদের যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই, তারা হল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়পত্র দিয়েই টিকা নিতে পারবেন।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব ও ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন
ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীরা একই সঙ্গে পড়বে, চলাফেরা করবে, তাদের মধ্যে কেউ টিকার বাইরে থাকলে তা সবার জন্যই ঝুঁকি তৈরি হবে। এ জন্য সব শিক্ষার্থীকে টিকার আওতায় এনে তারপর বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া হবে।
তবে কবে টিকার বন্দোবস্ত হবে তা বলতে পারছে না স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বক্তব্য :বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের টিকাদানের বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের অনেকের এনআইডি আছে, অনেকের নেই। এ বিষয়ে কিছু জটিলতা আছে। এ বিষয়ে আইসিটি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা চলছে। দ্রুতই এ বিষয়ে একটা সুরাহা হবে। এর পরই এই শিক্ষার্থীদের টিকাদান শুরু হবে।