শিক্ষার্থীরা বানান ভুল করায় অধ্যক্ষের নোটিশ, ১৩ বানান ভুল - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষার্থীরা বানান ভুল করায় অধ্যক্ষের নোটিশ, ১৩ বানান ভুল

বরিশাল প্রতিনিধি |

বরিশালের বাবুগঞ্জে একটি ফাজিল মাদরাসায় শিক্ষার্থীদের হোমওয়ার্কের খাতায় কিছু বানানে ভুল দেখতে পান প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ। এজন্য ক্লাসের সহকারী শিক্ষক মোশাররফ হোসেনকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দেন অধ্যক্ষ মো. ফরিদুল আলম। তবে ২৯ লাইনের ওই নোটিশে ১৩টি বানান ছিল ভুল। বিষয়টি জানাজানি হলে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়।

এ ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার (৩০) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ক্লাস বর্জন করে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন। তাদের বিক্ষোভের মুখে বিকেল ৩টার দিকে নোটিশটি প্রত্যাহার করে নেন অধ্যক্ষ।

ঘটনাটি ঘটেছে বাবুগঞ্জের কেদারপুর ইউনিয়নের ফরিদগঞ্জ বহুমুখী ফাজিল মাদরাসায়।

মাদরাসার সহকারী শিক্ষক সাইদুজ্জামান ফকির বলেন, ‘৩৮ বছর ধরে শিক্ষকতা পেশায় রয়েছেন মোশাররফ হোসেন স্যার। তাকে যে কারণে শোকজ করা হয়েছে তা মোটেই ঠিক নয়। শিক্ষার্থীর বাড়ি থেকে লিখে নিয়ে আসা খাতায় বানান ভুল ঠিক না করার অজুহাতে শিক্ষকদের শোকজ করা হতে পারে সেটা আগে জানা ছিল না।’

কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়া সহকারী শিক্ষক মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘২৫ আগস্ট পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হোমওয়ার্কের খাতা দেখছিলাম। এরমধ্যে পিয়ন দিয়ে মাদরাসার অফিস কক্ষে যেতে বলা হয়। কয়েকজন শিক্ষার্থীর খাতা পুরোপুরি না দেখে সই করে সেখানে যাই। একইভাবে গত ২৮ আগস্ট ক্লাসে খাতা দেখছিলাম। তখন আমাকে মাদরাসার খাজনা দিতে তহশিল অফিসে পাঠানো হয়েছিল। ফিরে এসে জানতে পারি আমি তহশিল অফিসে যাওয়ার পর অধ্যক্ষ স্যার ক্লাসে এসে তার ফোনে শিক্ষার্থীদের খাতার ছবি তুলে নিয়ে গেছেন। এরপর গতকাল (সোমবার) শিক্ষার্থীদের হাতের লেখায় বানান ভুল শোধরাতে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগে তুলে নোটিশ দেওয়া হয়।’

তিনি বলেন, ‘২৯ লাইনের ওই নোটিশে ১৩টি বানান ছিল ভুল। আশ্চর্যের বিষয় হলো বানান ভুল শোধরাতে ব্যর্থতার কারণে আমাকে নোটিশ করা হয়। কিন্তু নোটিশে ১৩টি বানান ভুল। এর কারণ কে দর্শাবে?’

নোটিশে বহুমূখী (সঠিক বহুমুখী), বরিমাল (সঠিক বরিশাল), যাইতেযে (সঠিক যাইতেছে), শ্রেণীতে (সঠিক শ্রেণিতে), কিন্ত (সঠিক কিন্তু), ভ’ল (সঠিক ভুল), অমনোযোগি (সঠিক অমনোযোগী), সমুহের (সঠিক সমূহের) লেখা ছিল। এভাবে মোট ১৩টি বানান ভুল লেখা ছিল ওই নোটিশে।

সহকারী শিক্ষক মোশাররফ হোসেনের ভাষ্য, ‘আমি মাদরাসা পরিচালনা কমিটির শিক্ষক প্রতিনিধি সদস্য। সম্প্রতি পরিচালনা কমিটির সভার আগেই অধ্যক্ষ স্যার রেজুলেশন বইতে সই করতে বলেছিলেন। তবে আমি সই করতে রাজি হইনি। আমি সই না করায় অনেকেই রেজুলেশন বইতে সই করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এতে আমার ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন অধ্যক্ষ স্যার। সে কারণেই তুচ্ছ কারণে আমাকে কারণ দর্শনোর নোটিশ দেওয়া হয়। বিষয়টি জানাজানি হলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানান।’

জানতে চাইলে ফরিদগঞ্জ বহুমুখী ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মো. ফরিদুল আলম বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় মনোযোগী করতে সহকারী শিক্ষক মোশাররফ হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল।’

নোটিশে বানান ভুল থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অফিস সহকারী মোয়াজ্জেম হোসেন নোটিশ টাইপ করেছেন। কয়েকবার বানান ঠিক করে দিয়েছি। এরপরও বানান ভুল কীভাবে হয়েছে সে বিষয়ে অফিস সহকারীর কাছে জানতে চেয়েছিলাম। কম্পিউটার ও কি-বোর্ড খারাপ থাকায় ভুল হয়েছে বলে তিনি (অফিস সহকারী) জানিয়েছেন।’

অধ্যক্ষ আরও বলেন, দুপুরে বিষয়টি নিয়ে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠক হয়। পরে তাদের অনুরোধে নোটিশ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। বিষয়টি ভুল বোঝাবুঝির কারণে ঘটেছিল। এখন সমাধান হয়ে গেছে।’

শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0044031143188477