চন্দনা সাহা। দুই সন্তানের জননী। টাঙ্গাইল ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের ভালকুটিয়া গ্রামের অধিবাসী। চাকরি করতেন স্থানীয় গোবিন্দাসী ক্যাডেট স্কুলে। ৮ বছর ধরে স্কুলে চাকরি করে আসছিলেন। স্বামী বিপ্লব সাহা ২ বছর আগে ব্রেইন স্ট্রোক করে চিকিৎসাধীন।
তার চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা খরচ হয়। এরই মাঝে শুরু হয় বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস। লন্ডভন্ড হয়ে যায় চন্দনা-বিপ্লবের সুখের সংসার। সন্তানদের মুখের আহার ও স্বামীর ওষুধের টাকা জোগাড় করতে হিমশিম খেয়ে যান চন্দনা।
নিরূপায় হয়ে তিনি এখন নিজ বাড়িতেই মুদিদোকান দিয়ে কোনো রকমে জীবন ধারণ করছেন। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলায় ব্যক্তি মালিকানায় পরিচালিত ৩৫টি কিন্ডারগার্টেনের কর্মজীবী ৫শ শিক্ষক-কর্মচারী বেতন-ভাতা না পেয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। চন্দনা সাহা তাদেরই একজন সংগ্রামী নারী।
চন্দনা সাহা জানান, আমি ৮ বছর ধরে গোবিন্দাসী ক্যাডেট স্কুলে চাকরি করি। স্বামী বিপ্লব সাহা একটি ফ্লেক্সিলোডের দোকান দিয়েছিলেন। যা রোজগার হতো তা দিয়ে আমাদের ৪ সদস্যের সংসার ভালোই চলত।
কিন্তু ২ বছর আগে হঠাৎ আমার স্বামীর ব্রেইন স্ট্রোক হয়। তাই কোনো উপায় না দেখে ধারদেনা করে নিজ বাড়িতেই একটি মুদিদোকান দিয়েছি।
গোবিন্দাসী ক্যাডেট স্কুলের পরিচালক হারুন অর রশিদ বলেন, বিদ্যালয়গুলোতে পাঠদান বন্ধ থাকায় অভিভাবকরা বেতন পরিশোধ না করায় স্কুল মালিকরা শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে পারছেন না।
এমন দুর্দিনে কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের বিষয়টি মাথায় রেখে সরকারের পক্ষ থেকে আর্থিক সহযোগিতাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্কুল খোলার উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।