শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই লকডাউনে, বাকি সব খোলা - দৈনিকশিক্ষা

শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই লকডাউনে, বাকি সব খোলা

নিজস্ব প্রতিবেদক |

দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়া আর সবই খোলা এখন। প্রায় দেড় বছর ধরে তালাবদ্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। পরীক্ষা ও ক্লাসে ফেরার অপেক্ষায় লাখ লাখ শিক্ষার্থী। এরই মধ্যে খুলে দেওয়া হয়েছে সরকারি-বেসরকারি অফিস, ব্যাংক-বীমা বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ সব ধরনের অফিস। চলছে গণপরিবহন। শপিং মল, বিপণিবিতান, মার্কেট সবই খোলা। এখন স্বাভাবিক নিয়মেই চলছে সচিবালয়ের কাজকর্ম। ব্যাংক-বীমা ও শেয়ারবাজারেও স্বাভাবিক লেনদেন শুরু হয়েছে। অভ্যন্তরীণ সব ফ্লাইট চলছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সৌদি আরব, ওমান, কাতার, জর্ডান ও সিঙ্গাপুরে ফ্লাইট চলা শুরু হয়েছে। আরও কিছু ফ্লাইট খোলার সিদ্ধান্ত হবে আগামী মাসে। উচ্চ আদালত চলছে ভার্চুয়ালে। রবিবার হাই কোর্টের সব বেঞ্চ ভার্চুয়ালে শুরু হবে। গত বুধবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব মো. রেজাউল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে চলমান বিধিনিষেধের (লকডাউন) মেয়াদ এক মাস বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হয়। স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্তে সব অফিস ও কর্মক্ষেত্র খুলে দেওয়া হয়েছে।

বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাবেক আঞ্চলিক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. মোজাহেরুল হক বলেন,  সরকার এখন স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার চিন্তাভাবনা করতে পারে।’

রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এভাবে দীর্ঘমেয়াদে বন্ধ রাখা উচিত হবে না। ঝুঁকিটা যত কমানো যায় সে চেষ্টাই করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি নেওয়া উচিত। ধাপে ধাপে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মৌখিক পরীক্ষা বা অন্য পরীক্ষা নেওয়া দরকার। এগুলো পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা যেতে পারে। তবে প্রাইমারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সবার পড়ে খুলতে হবে।’

দেড় বছর ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লকডাউন : করোনা সংক্রমণের কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এরপর সময় অতিবাহিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটিও। দফায় দফায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার তারিখ ঘোষণা করলেও সরকার খুলতে পারেনি স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়। সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী ৩০ জুন পর্যন্ত সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। কিন্তু মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ১৫ জুলাই পর্যন্ত বিধিনিষেধ আরোপ করায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এ ছুটি ফের বাড়বে। কবে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে। করোনার কারণে গত বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা না নিয়ে অটোপাস দেওয়া হয়েছে। স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় এখনো এসএসসি ও এইচএসসিতে পরীক্ষা নিতে পারেনি সরকার। সাধারণত প্রতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে এসএসসি ও এপ্রিলে এইচএসসি পরীক্ষার আয়োজন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কিন্তু চলতি বছর স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় কবে এসব পরীক্ষা নেওয়া হবে তা জানেন না সরকারের কর্তাব্যক্তিরাও। এমনকি পরীক্ষা না নেওয়ারও সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এক বক্তব্যে বলেছেন, এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব না হলে বিকল্প পদ্ধতিতে মূল্যায়ন করা হবে। সব মিলে করোনার কারণে এ বছরের এ দুই পাবলিক পরীক্ষা গ্রহণ অনেকটাই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকা ও পাবলিক পরীক্ষা নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীসহ সব শিক্ষার্থীই তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। টাঙ্গাইলের গুরুদয়াল সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির অপেক্ষায় থাকা উম্মে হাবিবা ইউশা প্রতিবেদককে বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবকিছুই যদি খোলা রাখা যায় তাহলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে সমস্যা কোথায়?’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ড. ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘করোনা সংক্রমণের কারণে গত বছরের মার্চে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটি ঘোষণার পাঁচ-ছয় মাস পর সংক্রমণের হার অনেক কম ছিল। তখন স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যেত, কিন্তু খোলা হয়নি। কারণ হিসেবে বলা হয়েছিল শীতে সংক্রমণ বাড়বে। কিন্তু শীতে করোনার সংক্রমণ বাড়েনি। তখনো স্কুল-কলেজ খোলা হয়নি। এখন সংক্রমণ ফের ঊর্ধ্বমুখী।’ এই শিক্ষাবিদ বলেন, ‘সংক্রমণের হার কমে এলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিতে হবে। সবাইকে করোনার ভ্যাকসিন নিশ্চিত করা গেলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা আরও নিরাপদ হবে।’

হাই কোর্টে সব বেঞ্চ বসবে ভার্চুয়ালি : বিচারকাজ পরিচালনার জন্য সুপ্রিম কোর্টের হাই কোর্ট বিভাগের ৫৩টি বেঞ্চ খুলে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। আগামী রবিবার থেকে ভার্চুয়ালি সব বেঞ্চে বিচারকাজ চলবে। তবে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত হাই কোর্টে আগাম জামিন শুনানি বন্ধ থাকবে। সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র ও হাই কোর্ট বিভাগের স্পেশাল অফিসার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান এমন তথ্য জানান। এর আগে ১ জুন সপ্তাহের সব কার্যদিবসে ভার্চুয়ালি আপিল বিভাগে বিচারকাজ শুরু হয়। অন্যদিকে নিম্ন আদালতে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে জামিন শুনানি ও শারীরিক উপস্থিতিতে আত্মসমর্পণ আবেদনের শুনানি অব্যাহত রয়েছে। সাইফুর রহমান বলেন, ‘দ্বিতীয় দফা করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ৪ এপ্রিলের পর এই প্রথম আগামী রবিবার থেকে হাই কোর্টের সব বেঞ্চ ভার্চুয়ালি বিচারকাজ পরিচালনা করবে। এর ফলে আগামী রবিবার সুপ্রিম কোর্টের দুই বিভাগে (আপিল ও হাই কোর্ট) পুরোপুরি ভার্চুয়ালি বিচারকাজ শুরু হচ্ছে।’

ব্যাংকে লেনদেন : মহামারীর বিস্তার ঠেকাতে বিধিনিষেধের মেয়াদ আরও এক দফা বর্ধিত করার মধ্যেই ব্যাংকে লেনদেনের সময় আরও ৩০ মিনিট বাড়ানো হয়েছে।

বিধিনিষেধের মধ্যে এত দিন ব্যাংকগুলোয় ৩টা পর্যন্ত লেনদেন চলছিল। সর্বশেষ ৩০ মে লেনদেনের সময় আধা ঘণ্টা বাড়িয়ে ৩টা পর্যন্ত করা হয়। স্বাভাবিক সময়ে ব্যাংকে লেনদেন হয় ৪টা পর্যন্ত এবং কর্মকর্তারা অন্যান্য কাজের জন্য ৫টা বা এর বেশি সময় শাখা খোলা রেখে কাজ করেন। লেনদেন-পরবর্তী আনুষ্ঠানিক অন্যান্য কাজের জন্য বিকাল ৫টা পর্যন্ত ব্যাংক খোলা থাকবে।

এমপিও কোড পেলো আরো ১৪ স্কুল-কলেজ - dainik shiksha এমপিও কোড পেলো আরো ১৪ স্কুল-কলেজ নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হিটস্ট্রোকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তূর্যের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তূর্যের মৃত্যু পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ - dainik shiksha পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী - dainik shiksha ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ - dainik shiksha প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0044040679931641