আগস্ট ও মহররম মাসের শোকের ভেতর ভুরিভোজ ও গানের জলসা আয়োজন করে সবাইকে চমকে দিয়েছে এশিয়ার প্রাচীনতম ক্লাব চট্টগ্রাম ক্লাব (সিসিএল)। আগামী ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যাকাণ্ডের দিন। আগস্ট জুড়েই তাই শোকের আবহ থাকে বাংলাদেশে। এ মাসে আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠান আয়োজনে বিরত থাকেন সবাই। ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার সমাবেশে করা গ্রেনেড হামলায় ২৪ জন নিহত হওয়ার পর থেকে আরও বেশি শোকাবহ মাস হয়ে উঠেছে আগস্ট। তারওপর চলছে দেশের সর্ববৃহৎ সম্প্রদায় মুসলমানদের শোকের মাস মহররম। কিন্তু ওসবে 'থোড়াই কেয়ার' চট্টগ্রাম ক্লাবের।
আসছে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় বিশাল এক গানের জলসা আয়োজন করছে চট্টগ্রাম ক্লাব। নাম দিয়েছে গ্র্যান্ড মিউজিক নাইট। তাতে মনোরঞ্জনের জন্য আসছেন ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দের অল ইন্ডিয়া সা রে গা মা চ্যাম্পিয়ন ও বলিউড প্লেব্যাক সিঙ্গার দেবজিত সাহা।
চট্টগ্রাম ক্লাবের চেয়ারম্যান নাদের খানের আমন্ত্রণপত্রে দেখা যাচ্ছে, তিনিই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি। ক্লাবের সব সদস্যকে সপরিবারে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তিনি। সবাইকে বলেছেন, স্মার্ট ক্যাজুয়াল পোশাকে অনুষ্ঠানে আসতে। সংগীত উপভোগের পাশাপাশি অনুষ্ঠানে সবার জন্য থাকছে ভুরিভোজের আয়োজন। তবে ১২ বছরের কম বয়সিদের অনুষ্ঠানে আনতে বারণ করা হয়েছে।
পুরো আয়োজনের পৃষ্ঠপোশকতায় আছেন, ইঞ্জিনিয়ার আলি আহমেদ, শাহজাদা আলম, সোলায়মান আলম শেঠ, নুরুল আবেদিন (নোবেল), ক্যাপ্টেন সৈয়দ ইউসুফ আলী, ফাহিম আহমেদ ফারুক চৌধুরী, ইয়াকুব, মোরশেদ কাদের চৌধুরী, মোহাম্মদ ইমরান আলী ভুঁইয়া, ইমরান ফাহিম নুর, ইঞ্জিনিয়ার মো. গোলাম সারওয়ার কোহিনুর কামাল ও এসএস ট্রেডিং।
চট্টগ্রাম ক্লাবের এমন আয়োজন নিয়ে এরই মধ্যে সমালোচনা শুরু হয়েছে। শোকের মাসের আবহ ফিকে করতে এটা কোনো উদ্দেশ্যমূলক আয়োজন কি না তার যথাযথ তদন্ত হওয়া উচিত বলেও মনে করছেন অনেকে।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রামের এসএস খালেদ রোডে অবস্থিত চট্টগ্রাম ক্লাবে গত পাঁচ বছরে অন্তত ২০ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকির তথ্য উদঘাটন করেছে চট্টগ্রাম ভ্যাট কমিশনারেট। ক্লাবটির বিরুদ্ধে মদের বারসহ বিভিন্ন সেবায় বিপুল পরিমাণ ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক ফাঁকির অভিযোগ আছে। শুধু তাই নয়, ক্লাবের অডিটোরিয়াম, ব্যাঙ্কোয়েট হল, লাউঞ্জ, লাউঞ্জ স্টোর, ক্যাটারিং, মেস স্টোর, সেলুন, কনফারেন্স হল, গেস্ট হাউস, লন ক্যাফে, বেকারি স্টোর, মিষ্টান্ন, কনফেকশনারি, সুইমিং পুলসহ বিভিন্ন সেবার বিপরীতে ক্লাবটির বিপুল পরিমাণ ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পেয়েছে ভ্যাট গোয়েন্দারা। যদিও ক্লাব কর্তৃপক্ষের দাবি, যেসব পণ্য ও সেবায় ভ্যাট রয়েছে সেসব ক্ষেত্রে নিয়ম মেনে ভ্যাট দেয়া হয়েছে।