শ্রেণিকক্ষে শিক্ষকতা সবচেয়ে উপভোগ করেছি, শেষ কর্মদিবসে ঢাকা কলেজ অধ্যক্ষ - দৈনিকশিক্ষা

শ্রেণিকক্ষে শিক্ষকতা সবচেয়ে উপভোগ করেছি, শেষ কর্মদিবসে ঢাকা কলেজ অধ্যক্ষ

নিজস্ব প্রতিবেদক |

রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার অবসরে যাচ্ছেন। আজ বৃহস্পতিবার শেষ কর্মদিবসে দায়িত্বে পালন করেছেন তিনি। শুক্রবার থেকে তাঁর পিআরএল শুরু হচ্ছে। শেষ কর্মদিবসে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে দেয়া এ সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, দীর্ঘ কর্মজীবনে শ্রেণি কক্ষে পাঠদান সবচেয়ে বেশি উপভোগ করেছি। 

১৯৮৭ খ্রিষ্টাব্দে কর্মজীবন শুরু করেন আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার। বাংলাদেশ ব্যাংকে কর্মজীবনের সূচনা হলেও পরে তিনি বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে যোগ দিয়ে সরকারি কলেজে শিক্ষকতা শুরু করেন। দীর্ঘ ৩২ বছরের শিক্ষকতা জীবনে ঐতিহ্যবাহী দুইটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকা কলেজ ও কবি নজরুল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা। নেতৃত্ব দিয়েছেন শিক্ষা ক্যাডারকে। পালন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের সমন্বয়কের দায়িত্ব। বাংলাদেশ স্কাউটস্ আন্দোলনের সঙ্গেও ওতপ্রোতভাবে জড়িয়েছেন নিজেকে।

পয়োত্রিশ বছরের কর্মজীবনে সবচেয়ে বেশি উপভোগ কোন বিষয়টি করেছেন জানতে চাইলে তিনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ব্যাংকিং জীবন থেকে কর্মজীবন শুরু হলেও আমার মূল জায়গাটা হচ্ছে আমি শিক্ষক। আমি শ্রেণিকক্ষে পাঠদানকেই সবচেয়ে বেশি উপভোগ করেছি। 

সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার বলেন, শিক্ষার্থীদের অবশ্যই পড়াশোনায় ফিরে আসতে হবে। সামনে যে চ্যালেঞ্জগুলো আছে, আতিমারির ক্ষতি ইত্যাদি তাদের পুষিয়ে নিতে হবে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে। শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে ফিরে আসতেই হবে। গাইড বই নির্ভর পড়ালেখা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। শ্রেণিকক্ষে পড়ালেখা বিকল্প নেই। 

‘সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের মনে রাখতে হবে তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত শিক্ষার্থী। তাই তাদের মৌলিক পড়াশোনা ও গবেষণায় গুরুত্ব দিতে হবে। এটার বিকল্প নেই’ যোগ করেন এই অভিজ্ঞ শিক্ষক। 

শিক্ষা ক্যাডারে কর্মজীবন নিয়ে আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার বলেন, কর্মজীবনে আসার আগে শিক্ষক হওয়ার লক্ষ্য আমার ছিলোনা। কিন্তু আসার পর শিক্ষকতার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গিয়েছি। আমার মনে হয়না আমার অতৃপ্তি আছে। আমার কোনো অসন্তুষ্টি নেই।  ১৮০ বছরে ঐতিহ্যবাহী ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে অবসরে যাবো এটা আমার জন্য বিশাল প্রাপ্তি।

 

শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার বলেন, শিক্ষকরা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ মুখোমুখি। কারণ অতিমারির কারণে আমাদের শিক্ষা বিশাল ক্ষতি হয়েছে। এটা থেকে রিকোভারি করতে অনেক প্রচেষ্টা করতে হবে। সেক্ষেত্রে আমাদের অনলাইন অফলাইন দুই ধরণের পাঠদানেই অভ্যস্ত হতে হবে। আমাদের তথ্য প্রযুক্তিতে অভ্যস্ত হতে হবে। যেকোন পরিস্থিতির জন্য নিজেকে প্রস্তুত রাখতে হবে। 

তিনি আরও বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যে চ্যালেঞ্জ আমাদের সামনে আসছে তা মোকাবেলায় আমাদের শিক্ষা ক্ষেত্রে অনেক পরিবর্তন দরকার। দক্ষতা নির্ভর শিক্ষায় সর্বোচ্চ জোড় দিতে হবে। এ জন্য শিক্ষকদের মূল ভূমিকা পালন করতে হবে। আমাদের অনেকগুলো এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন হচ্ছে। সেখানে অনেকের কর্মসংস্থান হবে। এ জন্য আমাদের যে ধরণের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে আগের চেয়ে অনেক বেশি ভূমিকা রাখতে হবে শিক্ষকদের। 

ঢাকা কলেজের ৭৪তম অধ্যক্ষ অধ্যাপক আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হিসাব বিজ্ঞানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পড়াশোনার পর ১৯৮৭ খ্রিষ্টাব্দের ২৭ জুন পূবালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার হিসেবে কর্মজীবনে প্রবেশ করেন। এরপর ১৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক হিসেবে যোগ দেন। সর্বশেষ ১৯৮৯ খ্রিষ্টাব্দে ৮ম বিসিএস বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন। ঢাকা কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন পান গত বছরের ২ ফেব্রুয়ারি। এর আগে তিনি কবি নজরুল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

অধ্যাপক সেলিম শুধু শিক্ষা ক্ষেত্রেই নয় বরং সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী কার্যক্রমেও সমান অবদান রেখেছেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ স্কাউটসের এক্সটেনশন স্কাউটিং বিভাগের জাতীয় কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতিতেও পরপর দুবার সভাপতি ও মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব (লিংক যাবে) করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল  SUBSCRIBE  করতে ক্লিক করুন।

মাধবীলতা নয়, স্কুলের নাম কচুগাড়ি পুনর্বহালের দাবি - dainik shiksha মাধবীলতা নয়, স্কুলের নাম কচুগাড়ি পুনর্বহালের দাবি খুদে শিক্ষার্থীর হাতে অস্ত্র কেনো! - dainik shiksha খুদে শিক্ষার্থীর হাতে অস্ত্র কেনো! এইচএসসির ফরম পূরণ শুরু আজ - dainik shiksha এইচএসসির ফরম পূরণ শুরু আজ মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে - dainik shiksha মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে মুজিবনগর দিবসে সব স্কুল-কলেজে আলোচনা - dainik shiksha মুজিবনগর দিবসে সব স্কুল-কলেজে আলোচনা মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ফটোকপি পোড়ানো কেমন প্রতিবাদ! - dainik shiksha মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ফটোকপি পোড়ানো কেমন প্রতিবাদ! কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0033130645751953