নওগাঁর মহাদেবপুরে মেহেদী হাসান নামে এক যুবকের দ্বারা শ্লীলতাহানী সইতে না পেরে রাজিয়া নামে এক কলেজছাত্রী আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই ছাত্রী বাবা নওগাঁ আদালতের নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেছেন। গত ২২ এপ্রিল ওই ছাত্রী আত্মহত্যা করার পর গত ২৯ এপ্রিল ছাত্রীর বাবা আদালতে মামলাটি করেছেন। ছাত্রীর বাবা জুলফিকার আলী ভুট্টর অভিযোগ, মহাদেবপুর থানায় এ বিষয়ে অভিযোগ না নেয়ায় তিনি আদালতে মামলা করেছেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার রাইগাঁ ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের জুলফিকার আলী ভুট্টর মেয়ে রাজিয়া সুলতানা রাইগাঁ ডিগ্রি কলেজে এইচএসসির একজন শিক্ষার্থী ছিলেন। কলেজে যাওয়া-আসার সময় একই গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে মেহেদী হাসান প্রায়ই পথরোধ করে উত্যক্ত করতো ও নানা রকমের কুপ্রস্তাব দিতো। এই অত্যাচার থেকে মেয়েকে রক্ষা করার জন্য রাজিয়াকে তার বাবা অন্যত্র বিয়ে দেন। রাজিয়াকে অন্যত্র বিয়ে দেওয়ার কারণে মেহেদী আগে মোবাইলে তোলা রাজিয়ার বিভিন্ন ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয় এবং আরও ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। এ বিষয়গুলো রাজিয়া তার বাবাকে জানালে রাজিয়াকে ভুট্টু তার বাড়িতে নিয়ে আসে। এরপর মেহেদী গত ২২ এপ্রিল রাজিয়াকে বাড়ির সামনে একা পেয়ে ঝাপটে ধরে গালে চুমু খায়। এমতাবস্থায় রাজিয়া চিৎকার করলে মেহেদী বিভিন্ন রকমের হুমকি-ধামকী দিয়ে পালিয়ে যায়। এ অপমান সইতে না পেরে ওইদিন রাতে শয়ন ঘরে গলায় ফাঁস দিয়ে রাজিয়া আত্মহত্যা করে।
পরে পুলিশ রাজিয়ার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। এর পরবর্তিতে রাজিয়ার বাবা থানায় অভিযোগ দিতে গেলে পুলিশ রহস্যজনক কারণে অভিযোগ গ্রহণ না করায় মেয়ের সঠিক বিচার ও মেহেদীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আশায় ভুট্টু চলতি বছরের ২৯ এপ্রিল নওগাঁ আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেন।
এ বিষয়ে রাজিয়ার বাবা জুলফিকার আলী ভুট্টু দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমার মেয়ে আত্নহত্যা করেনি; তাকে আত্নহত্যার জন্য বাধ্য করা হয়েছে। আর এ ঘটনার মূল হোতা মেহেদী তার মা জেসমিন ও তার বাবা আনোয়ার। তারা এর সাথে জড়িত। তিনি এ ঘটনায় মেয়ের সঠিক বিচার ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে জানতে মেহেদী হাসানের মোবাইল ফোনে বার বার যোগাযোগ করা হলে তার ফোনটি বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এলাকাবাসী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানিয়েছেন, ওই ঘটনার পর থেকে মেহেদী ও তার পরিবার পলাতক রয়েছে। বাড়িতে তালা ঝুলছে।