চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ অর্জন করেছেন। ২ লাখ ৬৯ হাজার ৬০২ শিক্ষার্থী এ পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন। গত বছর এসএসসি ও সমমানে জিপিএ-৫ এর সংখ্যা ছিলো ১ লাখ ৮৩ হাজার ৩০৪। গত বছরের তুলনায় এ বছর জিপিএ-৫ বেশি পেয়েছেন ৮৬ হাজার ২৬২ জন। এর আগে ২০২০ খিষ্টাব্দে ১ লাখ ৩৫ হাজার ও ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে ১ লাখ ৫ হাজার শিক্ষার্থী এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় সর্বোচ্চ ফল করেছিলেন। আর ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে এ সংখ্যা ছিলো ১ লাখ ১০ হাজার।
চলতি বছর এসএসসি ও সমমানে পাসের হার কিছুটা কমেছে। এসএসসি ও সমমানে গড় পাসের ৮৮ দশমিক ৪৪ শতাংশ। গতবার এই পাসের হার ছিলো ৯৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ।
শিক্ষা প্রশাসনের কর্তারা ও শিক্ষকরা বলছেন, সংক্ষিপ্ত সিলেবাস, পরীক্ষা পেছানোয় ভালো প্রস্তুতি এবং প্রশ্নে বেশি অপশন থাকায় চলতি বছরের ফলে বাজিমাত হয়েছে। এছাড়া করোনার বন্ধ এসব শিক্ষার্থীরা কাজে লাগিয়েছেন বলে ভালো ফল হয়েছে।
এসএসসি ও সমমানে সর্বোচ্চ সংখ্যক শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ অর্জনের বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষা বোর্ডগুলোর চেয়ারম্যানদের মোর্চা আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের পরীক্ষা হওয়ায় ফল ভালো হয়েছে। পরীক্ষা করোনা ও বন্যার কারণে পেছানোয় শিক্ষার্থীরা সময় বেশি পেয়েছেন প্রস্তুতি নেয়ার। এছাড়া ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে ৩টি বিষয়ে পরীক্ষা হলেও ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে পরীক্ষা হয়েছে ৯টি বিষয়ে। ইংরেজিসহ অন্যান্য বিষয়ের পরীক্ষা হওয়ায় পাসের হার কিছুটা কমেছে।
তিনি আরও বলেন, গত বছরের এসএসসির ফলের সঙ্গে যদি তুলনা করেন দেখবেন পাসের হার কমেছে। গত বছর জেএসসির ফল ও তিনটি বিষয়ের পরীক্ষার ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হয়েছিলো। গত বছর জিপিএ-৫ কিছুটা কম ছিলো। কিন্তু এবার নয় বিষয়ে পরীক্ষা হয়েছে তাই জেএসসির ফল থেকে সাবজেক্ট ম্যাপিং করা হয়নি। ফলে শিক্ষার্থীরা ভালো ফল করেছেন, জিপিএ-৫ বেড়েছে।
এ বিষয়ে যশোর শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক মাধব চন্দ্র রুদ্র দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা হয়েছে, শিক্ষার্থীরা ভালো প্রস্তুতি নিয়েছেন ফল ভালো করেছেন। করোনার ও বন্যায় পরীক্ষা পেছালে ছেলেমেয়েরা ভালো প্রস্তুতি নিতে পেরেছেন। সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা হওয়ায় শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ কিছুটা কম ছিলো।
মাধ্যমিক প্রতিষ্ঠান প্রধান পরিষদের সভাপতি ও মুন্সিগঞ্জে লৌহজং গার্লস্ পাইলট হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক নৃপেন্দ্র চন্দ্র দাসের মতের সংক্ষিপ্ত সিলেবাসই পরীক্ষায় ভালো ফলের কারণ। তিনি দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা হয়েছে। সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা হওয়ায় তারা কিছুটা বেশি সুবিধা পেয়েছেন।
রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক ফজিলাতুন নাহার শাম্মীর মতে করোনার সুযোগ কাজে লাগিয়ে ভালো প্রস্তুতি নেয়ায় শিক্ষার্থীরা ভালো ফল করেছেন। তিনি দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, এ শিক্ষার্থীরা করোনার বন্ধের সময় নবম শ্রেণিতে ছিলেন। প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হলেও তারা বাসায় অভিভাবকদের তত্ত্বাবধানে পড়াশোনার সুযোগ পেয়েছেন।