সব মুক্তিযোদ্ধাকে ‘অপমান’ করেছে শিক্ষা ক্যাডারের লতিফ : অধিদপ্তরের নীরবতায় ক্ষোভ - দৈনিকশিক্ষা

সব মুক্তিযোদ্ধাকে ‘অপমান’ করেছে শিক্ষা ক্যাডারের লতিফ : অধিদপ্তরের নীরবতায় ক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক |

জাতীয় শোক দিবসের আলোচনায় বিসমিল্লাহ, খোদা হাফেজ, সুপ্রভাত ইত্যাদির ব্যবহার নিয়ে মনগড়া বক্তব্য দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করার অভিযোগ উঠেছে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ আবদুল লতিফ ভূইয়ার বিরুদ্ধে।  মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের কলেজ ও প্রশাসন শাখার পরিচালক ও শিক্ষা ক্যাডার সমিতির সাবেক মহাসচিব মো. শাহেদুল খবির চৌধুরীর উপস্থিতিতেই লতিফ অমন বক্তব্য দেন। কিন্তু তিনদিন পার হলেও শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষা ক্যাডারে কর্মরত মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী কর্মকর্তাসহ সচেতন মানুষেরা। চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সেই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি কুমিল্লা-৬ (সদর) আসনের এমপি মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার। শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক শাহেদুল খবির, অধ্যক্ষ আবু জাফর খানসহ লতিফের বিচার দাবি করেছেন সবাই।   

দুই বছর আগে শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিকল্পনা শাখার পরিচালক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীরও ১৫ ও ২১ আগস্ট নিয়ে কটূক্তি করলেও তার বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়নি অদ্যাবধি। উল্টো প্রতিবাদকারী শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের বাড়ীতে বাড়ীতে বিভিন্ন পরিচয়ে খোঁজ-খবর নিয়েছে। মিছিলকরা ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাদের হয়রানি করা হয়েছে। প্রতিবাদ করায় বদলি করা হয়েছে মাধ্যমিক শাখার পরিচালক সরকার আবদুল মান্নানকে।  

সংশ্লিষ্টরা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ কর্র্তৃপক্ষ জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে গত রোববার ভার্চুয়াল আলোচনা সভার আয়োজন করে। এতে অংশ নিয়ে কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবদুল লতিফ বলেন, ‘দেশ স্বাধীন হবার পর এদেশের মানুষ ‘আসসালামু আলাইকুম’, ‘বিসমিল্লাহ’, ‘খোদা হাফেজ’ বলতে পারতেন না। বলতে হতো ‘সুপ্রভাত’। বঙ্গবন্ধু ১০ জানুয়ারি দেশে ফেরার পর এ পরিস্থিতি আর ছিল না।’

অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া প্রধান অতিথি মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার তাৎক্ষণিকভাবে এ শিক্ষককে থামিয়ে দেন। তাকে নিজের বক্তব্যের সপক্ষে দলিল নিয়ে আসতে বলেন। একপর্যায়ে আয়োজকরা আবদুল লতিফকে বাদ রেখে অনুষ্ঠান শেষ করেন।

লতিফকে রক্ষায় দায়সারা গোছের কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়েছে কলেজ কর্র্তৃপক্ষ। ভিডিও দেখতে এখানে ক্লিক করুন

গত ৮ আগস্ট কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগ দেওয়া অধ্যাপক ড. আবু জাফর খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করেন জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবু নাসের চৌধুরী। এতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর কুমিল্লা অঞ্চলের পরিচালক অধ্যাপক সোমেশ কর চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য দেন।  

কলেজের ফেইসবুকসহ কয়েকটি পেজে অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার হওয়ায় মুহূর্তে সবখানে ছড়িয়ে পড়ে। এতে রাজনৈতিক মহল, সুশীল সমাজসহ কুমিল্লার সর্বস্তরের মানুষ ওই শিক্ষকের বক্তব্যের কড়া প্রতিবাদ ও তার বিচার দাবি করেন।

পরে এ বিষয়ে আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার এমপি দেশ, ‘ওই শিক্ষক (আবদুল লতিফ) রাজাকারের উত্তরসূরি। সরাসরি চ্যালেঞ্জ করার পর এখন পর্যন্ত তিনি বক্তব্যের সপক্ষে কোনো প্রমাণ নিয়ে আসেননি। তাকে শোকজ করতে বলেছি। তার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠনে অধ্যক্ষকে অনুরোধ করেছি। ইতিহাস বিকৃতির ঘটনায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তার এ বক্তব্য গোটা মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে। তিনি সব মুক্তিযোদ্ধাকে অপমান করেছেন।’

জানা গেছে, আবদুল লতিফ জাতীয় শোক দিবসের পূর্বনির্ধারিত কোনো আলোচক ছিলেন না। 

এ বিষয়ে অধ্যক্ষ বলেন, ‘আবদুল লতিফ ভূইয়াকে সোমবার কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়েছে। আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে তাকে নোটিসের জবাব দিতে হবে। তার বক্তব্য সন্তোষজনক না হলে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।’ 

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0033979415893555