ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নূরুল করীম আকরামের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলা ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, হায়রানীমূলক ও মিথ্যা দাবি করে তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা। সভাপতির বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করা না হলে দেশব্যাপি কঠোর আন্দোলন ঘোষণা করা হবে বলেও জানান তারা। একইসাথে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ‘অপব্যবহার উদ্বেগজনকভাবে’ বেড়েছে দাবি করে তা সংশোধন করার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
সোমবার (১৮ অক্টোবর) পুরানা পল্টনে সংগঠনটিন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান প্রধান বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার উদ্বেগজনক মাত্রায় বেড়ে চলেছে। ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশে এ আইনের অধীনে দায়ের করা হয়েছে মোট ১৯৮টি মামলা। আসামী করা হয়েছে ৪৫৭ ব্যক্তিকে। অন্যদিকে ৪১টি মামলায় আসামি করা হয়েছে ৭৫ জন সাংবাদিককে। এই আইনে অধিকাংশ নিরপরাধ মানুষ জামিনে মুক্তির অধিকার থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে। অনেককেই রিমান্ডে নিয়ে শারীরিক-মানসিকভাবে নির্যাতন করার অভিযোগও উঠেছে।
তিনি আরও বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অনেক ধারা দেশের সংবিধানের মৌলিক চেতনা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, অবাধ তথ্যপ্রবাহ ও মৌলিক মানবাধিকার সম্পর্কিত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী। আমরা সংবিধানে দেওয়া স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকার নিশ্চিত করে আইনটির সংশোধনের দাবি জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নূরুল করীম আকরাম ও ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন ঢাকা মহানগর পশ্চিমের সাবেক সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার গিয়াস উদ্দিন পরশের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা দুরভিসন্ধিমূলক ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমরা এ হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলার প্রত্যাহারের দাবি করছি।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি শরীফুল ইসলাম রিয়াদ বলেন, ইশা ছাত্র আন্দোলন ১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ আগষ্ট প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিগত তিন দশকের পথচলায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং সুখী-সমৃদ্ধশীল একটি কল্যণরাষ্ট্র গড়ে তোলার লক্ষে দেশের সর্বস্তরের শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে ধারাবাহিক কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পক্ষে নানামুখী কর্মসূচি গ্রহণ ও পরিচালনা করে আসছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমরা মনে করি, আইন ও আদালত জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য, অহেতুক নিরপরাধ মানুষকে হয়রানি করার জন্য নয়।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি শরিফুল ইসলাম রিয়াদ অনতিবিলম্বে কেন্দ্রীয় সভাপতির বিরুদ্ধে দায়েরকৃত হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান। অন্যথায় দেশব্যাপী আন্দোলন গড়ে তোলার ঘোষণা দেন।
সংবাদ সম্মেলনে কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। আগামী ২০ অক্টোবরের মধ্যে মামলা প্রত্যাহার করা না হলে আগামী ২১ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) দুপুর ২টায় জাতীয় প্রেসক্লাব চত্ত্বরে মানববন্ধন করবেন সংগঠনটির নেতারা। এরপরও যদি এই মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা না হয়, তাহলে দেশব্যাপী পর্যায়ক্রমে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও জানান তারা।