সরকারের কাছে সরকারি হাইস্কুলে নিয়োগের ভাইভা প্রার্থীদের আকুল আবেদন
২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ৯ সেপ্টেম্বর সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয় এবং পরের বছর মানে ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ৬ সেপ্টেম্বর লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ওই বছরের ২০ নভেম্বর লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়। লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেয় ২ লক্ষ ৩৫ হাজার ২৯৩ জন পরীক্ষার্থী এবং পাস করে ৭ হাজার ২৬১ জন।প্রথমে পোস্ট ছিল ১৩৭৮টি কিন্তুু পরবর্তীতে পোস্ট বাড়িয়ে ১৯৯৯টি করা হয়।
সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সর্বশেষ নিয়োগ হয়েছিল ২০১১ খ্রিষ্টাব্দে। এরপর থেকে বিসিএস নন ক্যাডার থেকে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ করা হয়। তবে বিসিএস নন ক্যাডার থেকে বিষয়ভিত্তিক পর্যাপ্ত শিক্ষক পাওয়া যায় না। আবার, বিসিএস নন ক্যাডার থেকে যারা শিক্ষক পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হন তাদের বেশির ভাগই শিক্ষক পদে না থেকে অন্য চাকুরিতে যোগদান করে চলে যান। ফলে বছরের পর বছর মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। প্রকৃতপক্ষে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শূন্য পদের সংখ্যা প্রায় ৩৫০০’র বেশি। এছাড়াও বেশ কিছু বিদ্যালয় জাতীয়করণ হয়েছে, সেখানেও শিক্ষক সংকট প্রকট।
৭১৬১ জন পাসকৃত পরীক্ষার্থীর অনেকেই ০৯.০৯.২০১৮ হতে ১২.০৭.২০২০ তারিখে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর চাকুরির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন বা অপেক্ষায় আছেন। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য নিয়োগের পদসংখ্যা নিম্নরূপ-
৩৭ তম নন-ক্যাডার দ্বিতীয় শ্রেণীতে প্রায় ১৩৬৫ জন নিয়োগ পেয়েছেন।
৩৮ তম বিসিএসে ২২০৪ জন চূড়ান্তভাবে মনোনিত হয়েছে।
এছাড়াও ৪ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে ৪০ বিসিএসের রিটেন অনুষ্ঠিত হয়।
বিভিন্ন সরকারি ব্যাংকে ইতোমধ্যে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রায় ২৫০০ জন এবং কম্বাইন্ড সিনিয়র অফিসারের ১২০০+ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। আবার, কিছুদিন আগেই রূপালি ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার পদেও অনেকে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন।
এছাড়াও পুলিশের এস আইতে ১৪০২ জন সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছে।
এনএসআইতে ১ম ও ২য় শ্রেণির ২৮৪ জনের নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে।আবার,দুদকের বিভিন্ন পদে ২৮৮ জনের নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন আছে। এছাড়াও আরও প্রায় ৫০০ জনের অধিক ১ম ও ২য় শ্রেণির কর্মকর্তা হিসেবে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরে নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
উপর্যুক্ত বিশ্লেষণ হতে বোঝা যায় যে,২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের সেপ্টেম্বর থেকে অদ্যবধি প্রায় ১০ হাজারের অধিক চাকুরি প্রার্থী ১ম ও ২য় শ্রেণির সরকারি চাকুরিতে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন বা প্রক্রিয়াধীন রয়েছেন,যাদের অনেকেই সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। ফলে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে মৌখিক পরীক্ষার পর চূড়ান্ত নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়ার পরেও অনেকেই যোগদান করবেন না। সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের যে শিক্ষক সংকট চলছে, তাতে শূন্য পদে অপেক্ষমাণ তালিকা করাটা অতীব জরুরি। এছাড়া অনেক ভাইভা প্রার্থীর বয়স শেষ হয়ে গিয়েছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে ভাইভাও বিলম্বিত হচ্ছে। বিজ্ঞপ্তি প্রদানের তারিখ হতে প্রায় ২ বছর অতিক্রান্ত হতে চলল। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রমকে আরও এগিয়ে নিতে মানসম্মত শিক্ষকের প্রয়োজন হবে। এজন্য কর্তৃপক্ষের উচিত অনতিবিলম্বে শূন্য পদে অপেক্ষমাণ তালিকা করা,যার ফলে মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থা সচল থাকবে এবং অনেক শিক্ষিত চাকুরি প্রত্যাশী চাকুরি পাবেন যা হবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ঘোষিত মুজিব বর্ষে বেকারত্ব দূরীকরণের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের একটি পদক্ষেপ। এই পদক্ষেপটি গ্রহণের মাধ্যমে হয়ত অনেক শিক্ষিত তরুনের শিক্ষক হবার লালিত স্বপ্ন পূরণ হবে।
বিনীত
সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের
ভাইভা প্রার্থীবৃন্দ।