সার্টিফিকেট অবৈধ যে তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের - দৈনিকশিক্ষা

সার্টিফিকেট অবৈধ যে তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

অবশেষে তিনটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার বিষয়ে সতর্ক করতে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।  শিগগিরই এই বিষয়ে গণবিজ্ঞপ্তি দেবে উচ্চশিক্ষা দেখভালের দায়িত্ব থাকা সংস্থাটি। ইউজিসি বলছে, ওই তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনানুযায়ী বৈধ সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিল না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একাডেমিক, প্রশাসনিক, আর্থিক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি, পরীক্ষা, ফলাফল এবং একাডেমিক সনদের আইনগত কোনো বৈধতা নেই।

বিশ্ববিদ্যালয় তিনটি হলো ইবাইস ইউনিভার্সিটি, আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি (আমবান) এবং দি ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লা। ইউজিসির একজন কর্মকর্তা বলেছেন, এই তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ যাচাইয়ের জন্য তাঁদের কাছে অনেকেই আসছেন। এ জন্যই এই সতর্কতা জারি করা হচ্ছে।   

শিক্ষাবিদদের মতে, বছরের পর বছর  এসব বিশ্ববিদ্যালয় সনদ বিক্রি করলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসির এক শ্রেণির কর্মকর্তা ও কর্মচারী এদেরকেই পরোক্ষাভাবে সহায়তা করে আসছিলো। দেরিতে হলেও ইউজিসি পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে। 

ইউজিসির মতে, তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ইবাইস ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজ নিয়ে দ্বন্দ্ব ও আদালতে একাধিক মামলা চলছে। বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদিত কোনো ক্যাম্পাস ও ঠিকানা নেই। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে আচার্য হিসেবে রাষ্ট্রপতির নিয়োগ করা উপাচার্য, সহউপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নেই। এমনকি কোনো পদেই আইনানুযায়ী বৈধভাবে কেউ নিয়োজিত নেই। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বর্তমানে কোনো কর্তৃপক্ষ নেই। বিশ্ববিদ্যালয়টির সব শিক্ষাক্রমও মেয়াদোত্তীর্ণ। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক, প্রশাসনিক, আর্থিক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি, পরীক্ষা এবং এর ফলাফল ও একাডেমিক সনদের আইনগত কোনো বৈধতা নেই।

আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি সম্পর্কে ইউজিসি মন্তব্য: সাময়িক অনুমতিপত্রের শর্তাবলি প্রতিপালন এবং গুণগত মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হওয়ার কারণে সরকার বিশ্ববিদ্যালয়টি বন্ধ ঘোষণা করেছিল। তবে ওই বন্ধের আদেশের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উচ্চ আদালতে রিট করলে আদালত বিশ্ববিদ্যালয়টির পক্ষে রায় দেন। ইউজিসি এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে। অনুমোদনকালীন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ঠিকানা ছিল রাজধানীর বনানীর ৩৫ কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউয়ে। পরে অবশ্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক পত্রে বারিধারা-নদ্দা এলাকার ৫৪/১ প্রগতি সরণির ঠিকানায় বিশ্ববিদ্যালয়টির ক্যাম্পাসের অনুমোদন দেয়। কিন্তু ইউজিসি এই ঠিকানা সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখতে পায়, সেখানে আইনানুযায়ী জায়গা (ফ্লোর স্পেস), শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার মতো কোনো রকম সুযোগ-সুবিধা নেই। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে আচার্য হিসেবে রাষ্ট্রপতির নিয়োগ করা উপাচার্য, সহউপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নেই। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বর্তমানে কোনো কর্তৃপক্ষ নেই। শিক্ষাক্রমও মেয়াদোত্তীর্ণ। বৈধ সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিল না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়টির একাডেমিক, প্রশাসনিক, আর্থিক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি, পরীক্ষা, ফলাফল এবং একাডেমিক সনদের আইনগত কোনো বৈধতা নেই।

দি ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লার বিষয়ে ইউজিসি বলেছে, এই বিশ্ববিদ্যালয়টি ১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দে সরকারের অনুমোদন পায়। কিন্তু আইন না মানায় ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দের অক্টোবরে সরকার এটি বন্ধ করে দেয়। তখন বিশ্ববিদ্যালয়টির অনুমোদিত ঠিকানা ছিল কুমিল্লায়। বিশ্ববিদ্যালয়টি তখন সরকারের বন্ধ ঘোষণার আদেশের বিরুদ্ধে রিট করলে তারা শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার অনুমোদন পায়। তখন ঠিকানা নিয়ে অস্পষ্টতা দেখা দিলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আবেদনপত্রে উল্লিখিত (১৫, ছায়া বাড়ি ভবন, রোড-৩১, সেক্টর-৭, উত্তরা, ঢাকা) ঠিকানায় পরিদর্শনের জন্য ইউজিসিকে বলে। ইউজিসি এই ঠিকানায় পরিদর্শনের জন্য চিঠি পাঠালে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ওই পরিদর্শনপত্র দেওয়ার বিরুদ্ধে আবার আদালতে রিট করে। এই রিটের আলোকে ইউজিসির ওয়েবসাইটে বিশ্ববিদ্যালয়টির ২৭টি প্রোগ্রাম এবং ওই ঠিকানা আপলোড করা হয়। 

পরবর্তী সময়ে কতিপয় প্রতারক আবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চিঠি এবং আদালতের আদেশ অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়টির ঠিকানা হিসেবে উত্তরার ৯/বি পলওয়েল কারনেশনকে ইউজিসির ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়। কিন্তু ইউজিসি সরেজমিনে গিয়ে ওই ঠিকানায় (৯/বি পলওয়েল কারনেশন) দি ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লার কোনো অস্তিত্ব পায়নি। বর্তমানে ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্যদের বিরুদ্ধেও বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পেয়েছে ইউজিসি। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে সনদ বিক্রির অভিযোগও আছে। অথচ ইউজিসি বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়ে এখনো কোনো অনুমোদন দেয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে আচার্য হিসেবে রাষ্ট্রপতির নিয়োগ করা উপাচার্য, সহউপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নেই। এই বিশ্ববিদ্যালয়টির একাডেমিক, প্রশাসনিক, আর্থিক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি, পরীক্ষা এবং এর ফলাফল ও একাডেমিক সনদের আইনগত কোনো বৈধতা নেই।

এছাড়া সিলেটের লিডিং ইউনিভার্সিটি, বগুড়ার পুন্ড্রসহ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। 

মাধবীলতা নয়, স্কুলের নাম কচুগাড়ি পুনর্বহালের দাবি - dainik shiksha মাধবীলতা নয়, স্কুলের নাম কচুগাড়ি পুনর্বহালের দাবি খুদে শিক্ষার্থীর হাতে অস্ত্র কেনো! - dainik shiksha খুদে শিক্ষার্থীর হাতে অস্ত্র কেনো! এইচএসসির ফরম পূরণ শুরু আজ - dainik shiksha এইচএসসির ফরম পূরণ শুরু আজ মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে - dainik shiksha মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে মুজিবনগর দিবসে সব স্কুল-কলেজে আলোচনা - dainik shiksha মুজিবনগর দিবসে সব স্কুল-কলেজে আলোচনা মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ফটোকপি পোড়ানো কেমন প্রতিবাদ! - dainik shiksha মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ফটোকপি পোড়ানো কেমন প্রতিবাদ! কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.00307297706604