সার্ভার জটিলতায় জন্মসনদ প্রাপ্তিতে বিলম্ব হওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের শিক্ষার্থীদের ভর্তি ও উপবৃত্তি কার্যক্রম। বিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রেও জন্মসনদ বাধ্যতামূলক থাকায় সেখানেও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের পড়তে হচ্ছে বিপাকে। সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের উপবৃত্তির কার্যক্রম রূপালী ব্যাংকের শিওর ক্যাশ থেকে ডাক বিভাগের ডিজিটাল লেনদেন ‘নগদ’-এর মাধ্যমে প্রদান করতে হবে।
শিওর ক্যাশ পোর্টালে জন্মসনদ বাধ্যতামূলক ছিল না। কিন্তু নগদ পোর্টালে জন্মসনদ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সার্ভার জটিলতার কারণে জন্মসনদ প্রদান কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার উপবৃত্তির তথ্য সঠিক সময়ে জমা দেওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। উপজেলার খাউলিয়া ইউনিয়ন পরিষদে জন্মসনদ নিতে আসা অভিভাবক কবির হোসেন বলেন, আমি বেশ কয়েক দিন ধরে জন্মসনদ নেওয়ার জন্য পরিষদে যাচ্ছি। কিন্তু সার্ভার কাজ না করায় প্রতিদিন ঘুরতে হচ্ছে।
জন্মসনদ নিতে আসা আরেক অভিভাবক রুবি আকাতার বলেন, বিদ্যালয় থেকে বলে দিয়েছে জন্মসনদ ছাড়া উপবৃত্তির টাকা পাওয়া যাবে না। আজ নিয়ে তিন দিন আসলাম, কিন্তু এখনো সনদ পাইনি। যদি সঠিক সময়ে জন্মসনদ না দিতে পারি তাহলে তো উপবৃত্তির টাকা পাব না।
ইউনিয়ন পরিষদের সচিব শরিফ-উদ দৌলা বলেন, প্রতিদিন অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের জন্ম নিবন্ধন করতে এসে ফেরত যাচ্ছেন। গত ডিসেম্বর থেকে সার্ভারে কাজ করছে না। জন্ম নিবন্ধনের সার্ভারটি এ মাসের ১০ তারিখ থেকে নতুন ডাইমেনশনে যাবে। এর মধ্যেই আমাদের পাসওয়ার্ড দেওয়া হয়েছে। শুধু এই উপবৃত্তির কারণে বা বর্তমান প্রয়োজনের তাগিদে পুরাতন সার্ভারে কাজ চলছে। দ্রুতই এ সমস্যার সমাধান হবে।
মধ্য পুটিখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মল্লিক জাকির হোসেন বলেন, অনেক অভিভাবক এখনো আমাদের জন্মসনদ দিতে পারেনি। অপর দিকে জানুয়ারির ১০ তারিখের মধ্যে আমাদের উপবৃত্তির তথ্য প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে জমা দিতে হবে। এ সময়ের মধ্যে কোনো অবস্থাতেই তথ্য দেওয়া সম্ভব নয়। শিশু শ্রেণিতে ভর্তির জন্য আমরা টিকা কার্ড দিয়ে শিশু শিক্ষার্থীদের ভর্তি করছি। অভিভাবকদের বলে দেওয়া হয়েছে অবশ্যই জন্মসনদ লাগবে। সার্ভারের সমস্যার কারণে যেহেতু এই সমস্যা হচ্ছে, তাই উপবৃত্তির তথ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে সময় যেন বৃদ্ধি করা হয় সেই দাবি জানাচ্ছি। মোরেলগঞ্জ শিক্ষা কর্মকর্তা জালাল উদ্দিন খান বলেন, প্রধান শিক্ষকদের মাধ্যমে সার্ভার সমস্যার বিষয়টি শুনেছি, চলতি জানুয়ারি মাসের ১০ তারিখের মধ্যে উপবৃত্তির সব তথ্য শিক্ষা অফিসে জমা দেওয়ার কথা। তবে এখন পর্যন্ত জন্মসনদের সার্ভারের সমস্যার কারণে উপজেলার কোনো বিদ্যালয় উপবৃত্তির তথ্য শিক্ষা অফিসে জমা দেয়নি। বিষয়টি আমরা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসকে অবগত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।