মানিকগঞ্জ নার্সিং ইনস্টিটিউটের কার্যক্রম শুরুর তিন বছরের মাথায় কলেজে রূপান্তরিত হলেও শিক্ষক-কর্মচারী সংকট, শিক্ষা উপকরণের স্বল্পতা ও শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার অভাব দূর হয়নি। ফলে এই কলেজের শিক্ষার্থীরা কতটুকু দক্ষতা অর্জন করতে পারছেন—তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা গেছে, অবকাঠামো নির্মাণের পর গত ২০১৫ সালে মানিকগঞ্জ নার্সিং ইনস্টিটিউটের কার্যক্রম শুরু হয়। তিন একর জমির ওপর গড়ে তোলা হয় প্রশাসনিক, শিক্ষা ও ছাত্রী নিবাসের ছয়তলা ভবন।
এ ছাড়া রয়েছে আলাদাভাবে দোতলা মিলনায়তন ও শিক্ষকদের জন্য চারটি দোতলা কোয়ার্টার। ২০১৫ সালে প্রথম ব্যাচে ডিপ্লোমা ইন নার্সিং কোর্সে ১০০ জন ও ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফার কোর্সে ২৫ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হন। পরবর্তী সময়ে ২০১৮ সালে এটি কলেজে রূপান্তরিত হয়। এর পর থেকে চার বছরের বিএসসি নার্সিং কোর্সে ১০০ জন ও তিন বছরের ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফার কোর্সে ২৫ জন করে শিক্ষার্থীকে ভর্তি করা হয়। এ হিসাবে বর্তমানে মোট শিক্ষার্থী আছে ৪৭৫ জন।
সঠিকভাবে শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখতে ৪৭৫ জন শিক্ষার্থীর জন্য প্রয়োজন কমপক্ষে ৪০ জন শিক্ষক; কিন্তু এই প্রতিষ্ঠানে আছেন মাত্র ১৮ জন শিক্ষক। তাঁরা আবার নিয়মিত নন। প্রেষণে বিভিন্ন হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্সদের (সেবিকা) দিয়ে পাঠদান চলছে। এমনকি অধ্যক্ষের দায়িত্বে থাকা পদ্মা রাণী ঘোষ শিবালয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র স্টাফ নার্স হিসেবে কর্মরত।
অন্যদিকে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর প্রয়োজন কমপক্ষে ৩০ জন হলেও আছেন মাত্র আটজন। তাঁদেরও প্রেষণে অন্যান্য জায়গা থেকে আনা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, শ্রেণিকক্ষ এতটাই ছোট যে প্রতি ব্যাচের ১০০ শিক্ষার্থী স্বাভাবিকভাবে বসতে পারেন না। শ্রেণিকক্ষের সাউন্ড সিস্টেম বেশির ভাগ সময়ই বিকল থাকে। পর্যাপ্ত শিক্ষা উপকরণ নেই। হোস্টেলে গ্যাস সংযোগ নেই। বাবুর্চি না থাকায় শিক্ষার্থীদেরই রান্নাবান্না করতে হয়। ইলেকট্রিশিয়ান এবং পানির পাম্প মেশিন চালানোর কর্মচারী না থাকায় প্রায়ই দুর্ভোগে পড়তে হয় শিক্ষার্থীদের।
কলেজের দায়িত্বপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদ্মা রাণী ঘোষ সমস্যার কথাই স্বীকার করে বলেন, ‘কলেজের একটা গাড়ি আছে; কিন্তু ড্রাইভার না থাকায় গাড়িটি পড়ে আছে। মালি না থাকায় কলেজের বাগানটি জঙ্গলাকীর্ণ হয়ে পড়েছে। নিয়মিত শিক্ষক নিয়োগ না দেওয়ায় কোয়ার্টারগুলো খালি পড়ে আছে। কলেজের বিভিন্ন সমস্যার কথা উল্লেখ করে এরই মধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে; কিন্তু কোনো আশ্বাস পাওয়া যায়নি। ’