সেশনজটে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় : পরিস্থিতি উন্নয়নে অনলাইন পরীক্ষাই ভরসা - দৈনিকশিক্ষা

সেশনজটে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় : পরিস্থিতি উন্নয়নে অনলাইন পরীক্ষাই ভরসা

দৈনিক শিক্ষা ডেস্ক |

করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সেশনজটের সম্মুখীন হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় খুলে না দেওয়ায় সেশনজট কমাতে অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়াই এখন একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনলাইনে পরীক্ষা নিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা পাওয়ার পর বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষা নিতে শুরু করেছে। এ পদ্ধতির পরীক্ষায় নানা চ্যালেঞ্জ থাকলেও পরীক্ষার আয়োজনে সাধুবাদ জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, গত ৬ মে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে চূড়ান্ত পরীক্ষা চালুর সুপারিশ করে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন-ইউজিসি। শনিবার (১৪ আগস্ট) বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন আকতারুজ্জামান।

প্রতিবেদনে আরও জানা যায় সুপারিশে বলা হয়, কীভাবে অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়া হবে, সেটি নিজ নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় আলোচনা করে ঠিক করতে হবে। ইউজিসির এমন সুপারিশের পর অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর পরই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক কাউন্সিলে বৈঠক করে এ পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। জানা গেছে, অনলাইনে বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নিচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি), মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরও বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) অনলাইন পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিলেও এখনো পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করেনি। এ ছাড়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইন পরীক্ষার চিন্তাভাবনা করছে বলে জানা গেছে।

আরও পড়ুন : দৈনিক শিক্ষাডটকম পরিবারের প্রিন্ট পত্রিকা ‘দৈনিক আমাদের বার্তা’

সূত্র জানায়, সাধারণত অনলাইনে পরীক্ষা গ্রহণের জন্য শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা শুরুর আগে গুগল ক্লাসরুমে প্রবেশ করতে হয়। এখান থেকেই পরীক্ষার্থীরা প্রশ্নপত্র ডাউনলোড করে পরীক্ষায় অংশ নেয়। পরীক্ষা পর্যবেক্ষণের জন্য শিক্ষকরা অনলাইন মিটিং প্ল্যাটফরম ‘জুম’ ব্যবহার করেন। পরীক্ষা চলাকালীন ভিডিও চালু থাকে, যেন কেউ অসদুপায় অবলম্বন করতে না পারেন। পরীক্ষা শেষে তাদের উত্তরপত্র স্ক্যান করে বা ছবি তুলে পিডিএফ ফাইলে আপলোড করতে হয় পরীক্ষার্থীদের। পরীক্ষা চলাকালীন বৈদ্যুতিক বা যান্ত্রিক ত্রুটি অথবা ইন্টারনেটের সমস্যার কারণে কোনো পরীক্ষার্থী জুম থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে মোবাইল ফোনে পর্যবেক্ষককে জানাতে হয়। তবে পরীক্ষার পদ্ধতির ব্যাপারে স্ব স্ব বিশ্ববিদ্যালয় নির্ধারণ করে থাকে।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ এ প্রতিবেদককে বলেন, গত ১ জুলাই থেকে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা অনলাইনে নেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, করোনা থেকে রাতারাতি আমরা মুক্তি পাব না, তাই বলে তো শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা বন্ধ করে বসিয়ে রাখা যাবে না। অনলাইন পরীক্ষার চ্যালেঞ্জ রয়েছে, তবে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই এগিয়ে যেতে হবে। হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি  বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম কামরুজ্জামান বলেন, শিক্ষার্থীদের সেশনজট থেকে মুক্ত করতে গত ৪ আগস্ট থেকে বিভিন্ন বর্ষের অনলাইনে পরীক্ষা শুরু হয়েছে। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হাসিবুর রশীদ জানান, বিভিন্ন বর্ষের অসমাপ্ত পরীক্ষাগুলো গত ১২ আগস্ট থেকে অনলাইনে নেওয়া হচ্ছে। প্রায় শতভাগ শিক্ষার্থী স্বতঃস্ফুর্তভাবে অনলাইনে পরীক্ষা দিচ্ছে, এক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।

অনলাইন পদ্ধতির পরীক্ষাকে স্বাগত জানিয়েছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও। হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি প্রকৌশল বিভাগের ছাত্র শোভন শীল বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে। অনলাইনে ক্লাস হলেও পরীক্ষা না হওয়ায় সেশনজটের সম্মুখীন হয়েছি। অনলাইনে পরীক্ষা চালু করার ফলে আমাদের সংকট কাটবে বলে আশা করি।

তবে এ প্রক্রিয়ার পরীক্ষায় নানা সংকট ও প্রতিবন্ধকতা রয়েছেও বলে জানান ছাত্রছাত্রীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নাসিমুল হুদা বলেন, অনলাইন ক্লাসের মতো অনলাইন পরীক্ষার ক্ষেত্রেও ইন্টারনেট সরবরাহে বিঘ্নতা বড় প্রতিবন্ধকতা। গ্রামাঞ্চলে অবস্থানকারী শিক্ষার্থীদের নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট পেতে হলে উপজেলা শহরে যেতে হবে। একই সঙ্গে জুমে ভিডিও অন রেখে বসে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থাও করতে হবে, যা অধিকাংশ শিক্ষার্থীর জন্য চ্যালেঞ্জ। এ ছাড়া পরীক্ষা দেওয়ার জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ডাটা ক্রয় করতে হবে। এর ভর্তুকি হিসেবে পরীক্ষার ফি না নেওয়ার বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে বিবেচনা করার দাবি জানান ছাত্রছাত্রীরা।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব ও ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন

ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি - dainik shiksha ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে - dainik shiksha ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে মাকে ভরণপোষণ না দেয়ায় শিক্ষক গ্রেফতার - dainik shiksha মাকে ভরণপোষণ না দেয়ায় শিক্ষক গ্রেফতার ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0039570331573486