২০২২ খ্রিষ্টাব্দের জন্য সরকারি স্কুলে ভর্তি হতে সরকারি স্কুলের শিক্ষক-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য বিশেষ সুযোগ দিয়েছে সরকার। সরকারি স্কুলের শিক্ষক-কর্মচারীদের ভর্তিচ্ছু সন্তানের জন্য ওই স্কুলের আসন সংরক্ষিত থাকবে। তাদের অনলাইনে আবেদন করতে হবে না। সরকারি বয়েস স্কুলে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীদের মেয়ে সন্তানের জন্য পাশের গার্লস স্কুলে সিট বরাদ্দ থাকবে। একইভাবে সরকারি গার্লস স্কুলে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীদের ছেলে সন্তানের জন্য পাশের বয়েস স্কুলে সিট বরাদ্দ থাকবে। আগে সরকারি স্কুলে ভর্তি হতে শিক্ষক কর্মচারীদের সন্তানের জন্য ২ শতাংশ কোটা থাকলেও তা তুলে নেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে সরকারি ও বেসরকারি স্কুলে ভর্তির নিয়ম ও আবেদন প্রক্রিয়া তুলে ধরে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর।
জানা গেছে, সরকারি ও বেসরকারি স্কুলগুলোতে প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী ভর্তির আবেদন আগামী ২৫ নভেম্বর থেকে শুরু হবে। ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত আবেদন গ্রহণ চলবে। ভর্তির আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১১০ টাকা। চলতি বছর লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। সরকারি স্কুলে ভর্তির লটারি হবে ১৫ ডিসেম্বর। আর বেসরকারি স্কুলের লটারি ১৯ ডিসেম্বর। করোনার কারণে গত বছরের মতো এ বছর বিদ্যালয় থেকে ভর্তি ফরম বিতরণ করা হবে না। শুধু অনলাইনে (https://gsa.teletalk.com.bd) আবেদন করা যাবে।
সরকারি স্কুলে ভর্তির আবেদন নিয়ে অধিদপ্তরের জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক বা কর্মচারীদের ভর্তির উপযুক্ত সন্তান সংখ্যার সমসংখ্যক আসন ঐ প্রতিষ্ঠানে সংরক্ষিত থাকবে। এক্ষেত্রে তাদের অনলাইনে আবেদন করার প্রয়োজন নেই। শিক্ষক বা কর্মচারী সরকারি মাধ্যমিক বালক বিদ্যালয়ে কর্মরত থাকলে এবং তার ভর্তি উপযুক্ত সন্তান বালিকা হলে পার্শ্ববর্তী সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে আসন সংরক্ষিত রাখতে হবে। একইভাবে শিক্ষক-কর্মচারী সরকারি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে কর্মরত থাকলে এবং তার ভর্তি উপযুক্ত সন্তান বালক হলে পার্শ্ববর্তী সরকারি বালক বিদ্যালয়ে আসন সংরক্ষিত রাখতে হবে। অর্থাৎ সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক বা শিক্ষিকাদের সন্তান ভর্তির যে ২ শতাংশ কোটা নীতিমালায় সংরক্ষিত ছিল তা তুলে দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ঢাকা মহানগরীসহ সারাদেশের সব সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ২০২২ শিক্ষাবর্ষে বিভিন্ন শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে বিদ্যালয় হতে কোনো ভর্তি ফরম বিতরণ করা হবে না। ভর্তির আবেদন ফরম শুধুমাত্র অনলাইনে (http://esa.teletalk.com.bd)পাওয়া যাবে। অনলাইনে আবেদন গ্রহণের প্রক্রিয়া ২৫ নভেম্বর সকাল ১১টা থেকে শুরু হয়ে ৮ ডিসেম্বর বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে। ২০২২ শিক্ষাবর্ষে ভর্তির আবেদন ফি ১১০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা শুধুমাত্র টেলিটক প্রি-পেইড মোবাইল থেকে এসএমএসের মাধ্যমে প্রদান করা যাবে।
ঢাকা মহানগরীর ৪৪ টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় (৩টি ফিডার শাখাসহ) ৩টি ভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত থাকবে। আবেদনের সময় একজন প্রার্থী একই গ্রুপে পছন্দের ক্রমানুসারে সর্বাধিক ৫টি বিদ্যালয় নির্বাচন করতে পারবে। এছাড়াও সারাদেশে আবেদনকারীরা আবেদনের সময় প্রতিষ্ঠান নির্বাচনের সময় থানা ভিত্তিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা পাবেন। এক্ষেত্রে প্রার্থীরা প্রাপ্যতার ভিত্তিতে প্রতিটি আবেদনে সর্বোচ্চ ৫টি বিদ্যালয় পছন্দের ক্রমানুসারে নির্বাচন করতে পারবে।
ডাবল শিফটের প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে দুই শিফট পছন্দ করলে দুইটি পছন্দক্রম সম্পন্ন হয়েছে বলে বিবেচিত হবে। একই পছন্দক্রমের বিদ্যালয় কিংবা শিফট দ্বিতীয় বার পছন্দ করা যাবে না। ২০২২ শিক্ষাবর্ষে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে অনুষ্ঠেয় ডিজিটাল লটারি কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের বাইরের প্রতিষ্ঠানগুলোকেও স্ব স্ব ভর্তি কমিটির মাধ্যমে লটারি প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থী নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে স্ব স্ব ভর্তি কমিটির উপস্থিতিতে লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী নির্বাচন প্রক্রিয়া ছাড়া অন্য কোন পরীক্ষা গ্রহণ করা যাবে না।
সারাদেশে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে লটারি প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থী নির্বাচন আগামী ১৫ ডিসেম্বের অনলাইনে মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হবে। অন-লাইনে আবেদন ফরম পূরণ ও ভর্তি সংক্রান্ত বিস্তারিত নিয়মা ওয়েবসাইট (www.dshe.gov.bd এর secondary circular/order & www.teletalk.com.bd) থেকে জানা যাবে।
এদিকে মঙ্গলবার জারি করা অপর এক চিঠিতে সরকারি স্কুলেগুলোতে ভর্তির জন্য প্রতিষ্ঠান প্রধানদের ১৭ নভেম্বর থেকে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত শূন্য আসনের তথ্য ওয়েবসাইটে (https://gsa.teletalk.com.bd) অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। একইসাথে শিক্ষক কর্মচারীদের সন্তানদের প্রতিষ্ঠানে আসন সংরক্ষণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর ভর্তিচ্ছু শিক্ষক সন্তানদের তথ্য পাঠাতে বলা হয়েছে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের।
নির্ধারিত ছকে যে প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক সন্তানের জন্য আসন সংরক্ষণ করা হয়েছে তার নাম, ভর্তিচ্ছুর শিক্ষক বা কর্মচারী অভিভাবকের নাম, ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর নাম ও শ্রেণি নির্ধারিত ছকে উল্লেখ করে ইমেইলে ([email protected]) ঠিকানায় ২২ নভেম্বরের মধ্যে পাঠাতে আঞ্চলিক উপপরিচালকদের বলেছে শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।