মণিরামপুরে একটি বিদ্যালয়ের জমি দখল করে দোকানঘর তৈরির ঘটনা নিয়ে দৈনিক শিক্ষা ডটকমে প্রতিবেদন প্রকাশের পর এলাকায় তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে। সংবাদ প্রকাশে দখলকারী মশিয়ার গংরা স্কুলের জমিতে নির্মিত দোকানঘর বহাল রাখতে বিভিন্ন মহলে দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন। অপরদিকে স্কুল কর্তৃপক্ষও বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসতে শুরু করেছেন বলে জানা গেছে। গত ৭ মে মণিরামপুর উপজেলার মনোহরপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের জমি দখলে নিয়ে দোকানঘর নির্মাণ নিয়ে ‘স্কুলের জমি দখল করে প্রভাবশালীর দোকান!’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় দৈনিক শিক্ষাডটকমে।
সংবাদটি প্রকাশ হওয়ার পর দখলকারী মনোহরপুর গ্রামের মৃত. মোবারক আলী গাজীর ছেলে ডা. মশিয়ার রহমান গাজী ও একই এলাকার মৃত. ইসমাইল সরদারের ছেলে আহম্মদ আলী দফাদার ‘তেলেবেগুনে’ চটে গেছেন। এমনকি দোকানঘর যাতে কর্তৃপক্ষ ভেঙে না দেয় এবং জমি বেদখল না হয়, তা বহাল রাখতে সরকারি বিভিন্ন মহলে দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন। ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় চলছে।
এদিকে স্কুল কর্তৃপক্ষসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে ঘটনাটি দিয়ে ব্যাপক তৎপর রয়েছেন। তারা যেকোন মূল্যে অবৈধ দখলকারীদের হাত থেকে স্কুলের জমিটি উদ্ধারের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফজলুর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, ওই অবৈধ দখলকারীদের শালিস বৈঠকের মাধ্যমে বারবার জমি ছাড়ার তাগাদা দেয়া হলেও তাতে তারা কোন কর্ণপাত করছেনা। যে কারণে কঠোর অবস্থানে যেতে বাধ্য হচ্ছি আমরা।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মাস্টার মশিয়ূর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, বিষয়টি নিয়ে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর দখলকারী মশিয়ার রহমান ও আহম্মদ আলী জমিটি জোরপূর্বক দখলে রাখতে এবং দোকানঘর বহাল রাখতে বিভিন্ন মহলে দৌড়ছুট দিয়ে বেড়াচ্ছেন। এমনকি জমির বিষয়টি নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ যাতে তৎপর না হয় তার জন্য ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষদের বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিয়ে চলেছেন।উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিকাশ চন্দ্র সরকার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, স্কুলের জমি জোরপূর্বক দখলের ক্ষমতা কারোর নেই। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে, যদি প্রকৃতপক্ষে মশিয়ার এবং আহম্মদ আলীদের দখলে থাকে তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নয়া হবে।
মনোহারপুর ২৩৯নং মৌজা ওই মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যায়লয়টি অবস্থিত। ওই মৌজার ৩৩৯নং দাগের ১০ শতাংশ জমি ৫নং খতিয়ানে স্কুলে নামে হাল রেকর্ডভূক্ত রয়েছে। এরমধ্যে তহসীল অফিসের তথ্যমতে, এসএ রেকর্ডভূক্ত ৭০১ ও ৭০২নং দাগের জমির হালদাগ নং ৩৩৭ ও ৩৩৮। যা ৩টি খতিয়ানে রেকর্ডভূক্ত হয়েছে। এরমধ্যে ৩৪৮২নং খতিয়ানে মনোহরপুর বালিকা বিদ্যালয়ের নামে রেকর্ডভূক্ত হয়েছে। ওই সাবেক দুইদাগে (৭০১ ও ৭০২)-এর রেকর্ড অনুযায়ী হালদাগের ( ৩৩৭ ও ৩৩৮) মধ্যে মশিয়ার রহমান ও আহম্মদ আলীর নাম নেই।