কুমিল্লার লালমাই উপজেলার হাজতখোলা বাজারের পাশে বেতুয়া গ্রামে চার বছর ধরে একটি অবৈধ ইটভাটা চালানো হচ্ছে। মেসার্স নিউ ইউনাইটেড ব্রিকস নামে ভাটাটির পরিবেশ অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসনসহ সংশ্নিষ্ট দপ্তরের অনুমোদিত কোনো কাগজপত্র নেই। এরই মধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে জরিমানা করাসহ ইটভাটা অন্যত্র সরিয়ে নিতে নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু মালিকপক্ষ দাপটের সঙ্গে সব ধরনের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
আসন্ন মৌসুমে ফের ভাটায় ইট পোড়ানো শুরু হলে বিষাক্ত ধোঁয়ার কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়বে পাশের দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শত শত শিক্ষার্থী। কৃষিজমি ও গাছপালারও ক্ষতি হবে। কৃষিজমির ওপর প্রতিষ্ঠিত এ ইটভাটা স্থাপন করে সরকারদলীয় প্রভাবশালী একটি সিন্ডিকেট। শুরুতে পরিবেশ সনদ নিয়ে কাজ শুরুর বিধান থাকলেও তা করা হয়নি। নেওয়া হয়নি জেলা প্রশাসনের লাইসেন্সও। এ ছাড়া ভাটা নির্মাণের সময় গ্রামের লোকজন আপত্তি তুললেও তা আমলে নেননি উদ্যোক্তারা।
জানা গেছে, পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে অবৈধভাবে ইটভাটা পরিচালনা করায় ভাটা মালিককে দু'দফায় সাড়ে তিন লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বর্তমানে প্রভাবশালীদের সহায়তায় এ ভাটা পরিচালনা করছেন বোরহান উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি। গ্রামের কৃষিজমি রক্ষা, শিশুদের স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা বিবেচনা করে ভাটার কার্যক্রম বন্ধ রাখার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে ইটভাটা মালিক বোরহানউদ্দিন বলেন, আমরা ইটভাটার লাইসেন্সের জন্য কাগজপত্র তৈরি করছি। আমাদের ভাটায় পরিবেশের কোনো ক্ষতি না হলেও এটি অন্যত্র সরিয়ে নিতে পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে চিঠি দিয়েছে, আমরা চেষ্টা করছি সরিয়ে নিতে।
পরিবেশ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপপরিচালক শওকত আরা কলি বলেন, অবৈধ ভাটাটি বন্ধের জন্য আমরা কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। অবৈধভাবে এ ভাটা পরিচালনার জন্য গত বছর আমরা ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে মালিকপক্ষকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করেছি। এ বছর পরিবেশ আইনে আরও দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ ছাড়াও পরিবেশ রক্ষায় গত সপ্তাহে তাদের চিঠি দেওয়া হয়েছে ভাটাটি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার জন্য। যাবতীয় সনদ নেওয়া ছাড়া ব্রিক ফিল্ড চালানো যাবে না। মালিকপক্ষকে এখান থেকে ভাটাটি সরিয়ে নিয়ে যাবতীয় আইনগত প্রক্রিয়া শেষ করে বৈধ প্রক্রিয়ায় চালাতে হবে। সরকারি এ নির্দেশনা না মানলে সংশ্নিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।