হঠাৎ করে গজিয়ে ওঠা ফেসবুকভিত্তিক কথিত শিক্ষক সংগঠন ‘বাংলাদেশ বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারী ফোরামে’র স্বঘোষিত নেতারা নিজেদের মধ্যে হাতাহাতিতে লিপ্ত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। কথিত নেতা ও ভোলার এক জুনিয়র হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সাইদুল হাসান সেলিমের অনুসারি এবং বহিরাগতরা শিক্ষকদের একাধিক মোবাইল ও ব্যাগ নিয়ে যায়। হট্টগোলের পর কথিত ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন -২০২১ স্থগিত হয়েছে। উল্লেখ্য, নোট-গাইড কোম্পানীর কাছ থেকে পাওয়া টাকার ভাগাভাগি, ফেসবুকে আত্মপ্রচার ও অবসরের পর তাড়াতাড়ি অবসর সুবিধা ও কল্যাণট্রাস্টের টাকা পাওয়া এবং বিভিন্ন টেলিভিশন ও পত্রিকা থেকে রিপোর্ট চুরি করে নিজ নিজ ফেসবুকে দিয়ে বাহবা কুড়ানোসহ শিক্ষা বহির্ভূত নানা কাজে লিপ্ত থাকার হীন উদ্দেশ্যে প্রায় প্রতিমাসে একেকটি শিক্ষক সংগঠনের জন্ম হচ্ছে। ফেসবুকে কথিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ও নিজেদের তৈরি করা কথিত অনলাইন পেপার ও ফেসবুক গ্রুপে কথিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেই তারা নেতা বনে যাচ্ছেন। শুরু থেকেই এসব নেতারা দৈনিক শিক্ষাডটকম থেকে রিপোর্ট চুরি করে নিজেদের ফেসবুক পেজে দিয়ে দাবি করেন এসব তথ্য তারা শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর থেকে পেয়েছেন। স্বঘোষিত এসব নেতাদের নানা অপকর্মে বিরক্ত সাধারণ শিক্ষকরা। স্বঘোষিত নেতারা নিজেদের মধ্যে মারামারিতেও লিপ্ত হচ্ছেন। এতে শিক্ষক সম্পর্কে সাধারণ মানুষ, পেশাদার সাংবাদিক ও শিক্ষা প্রশাসনের কর্তাদের নেতিবাচক ধারণা তৈরি হচ্ছে। নেতা ও সংগঠনের সংখ্যা বেশি হওয়ায় নোট-গাইড কোম্পানীগুলো এদের কথিত সম্মেলনে চাঁদা দিতে দিতে ক্লান্ত।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সাধারণ শিক্ষক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, শিক্ষক ফোরামের কথিত অ্যাডহক কমিটি ও সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক বিপ্লব কান্তি দাস এর সভাপতিত্বে ১২ মার্চ সকালে রাজধানীর কুর্মিটোলা হাই স্কুল এন্ড কলেজের অডিটোরিয়ামে শুরু হয়। সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের কথিত মহাসচিব আব্দুল খালেক। উদ্বোধনী বক্তব্য দেন সংগঠনের কথিত সভাপতি সাইদুল হাসান সেলিম।
বক্তব্যে এক পর্যায়ে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য এবং বাংলাদেশে বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারী ফোরামের যুগ্ম মহাসচিব জি এম শাওন যখন বক্তব্য দিচ্ছেন, তখন সংগঠনের বর্তমান সভাপতি সাইদুল হাসান সেলিমকে পুনরায় সভাপতি করার দাবিতে তার কামরুল হাসান, আরিফুল ইসলাম, এর নেতৃত্বে বহিরাগত ২০/২৫ জন হামলা করে হামলা করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এসময় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্যএবং কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা নিরাপদে অবস্থান নেন। সাইদুল হাসান সেলিম ও এনামুল ইসলামের অনুসারিরা কয়েক ঘন্টা তারা এই তাণ্ডব চালান। বিকাল চারটা পর্যন্ত পর্যন্ত সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য, এডহক কমিটির সদস্য ও কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা আটকে থাকেন।
ভূইফোঁড় সাংবাদিক ও শিক্ষক জহিরুল ইসলাম নিজেকে অধিক যোগ মনে করেন আর সাইদুল হাসান সেলিমকে একজন নিম্ন মাধ্যমিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক হিসেবে তুচ্ছ করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। তারা দুইজন নিজেদের মধ্যে নেতৃত্বের সংঘাতে লিপ্ত।
ফোনে যোগাযোগ করা হলে সাইদুল হাসান সেলিম উত্তর না দিয়ে ফোন কেটে দেন। সংগঠনের মহাসচিব আবদুল খালেককেও পাওয়া যায়নি।