স্বাস্থ্যসম্মত খাবার কেনার সামর্থ্য নেই ৪১ শতাংশ পরিবারের - দৈনিকশিক্ষা

স্বাস্থ্যসম্মত খাবার কেনার সামর্থ্য নেই ৪১ শতাংশ পরিবারের

নিজস্ব প্রতিবেদক |

দেশের ৪১ শতাংশ পরিবারের হেলদি ডায়েট বা স্বাস্থ্যসম্মত খাবার কেনার সক্ষমতা নেই। দারিদ্র্যসীমার নিচে বা দারিদ্র্যসীমার ঠিক ওপরে থাকা পরিবারগুলো এমন খাবার কিনতে পারছে না। এ ক্ষেত্রে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা খুলনা বিভাগের মানুষের সক্ষমতা সবচেয়ে কম।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট এবং স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের যৌথ গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা এবং সরকারের খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় গবেষণাটি পরিচালিত হয়। বাংলাদেশের মানুষের খাদ্যাভ্যাস পর্যালোচনা করে পুষ্টির ঘাটতি চিহ্নিত করা ও সে ঘটতি পূরণে সুপারিশ তৈরি করাই ছিল গবেষণাটির লক্ষ্য। শিগগিরই গবেষণা প্রতিবেদনটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হবে বলে পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।

গবেষণায় দেখা গেছে, শহর ও গ্রামের পরিবারগুলোর মধ্যে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার কেনার সামর্থ্যরে তারতম্য আছে। শহরের ৩৯ শতাংশ পরিবারের স্বাস্থ্যসম্মত খাবার কেনার সামর্থ্য নেই। গ্রামে সামর্থ্য নেই ৪২ শতাংশ পরিবারের। গবেষকরা বলছেন, গ্রামের মানুষের আয় উপার্জন তুলনামূলক কম এবং তাদের ক্রয়ক্ষমতাও কম হওয়ায় সামর্থ্যও কম হতে পারে।
এতে দেখা গেছে, স্বাস্থ্যসম্মত খাবার কেনার ক্ষমতা সবচেয়ে কম জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা খুলনা বিভাগের মানুষের। খুলনা বিভাগের ৬৬ শতাংশ পরিবারের স্বাস্থ্যসম্মত খাবার কেনার সামর্থ্য নেই। সে সামর্থ্য আছে মাত্র ৩৪ শতাংশ পরিবারের। চট্টগ্রাম বিভাগের অবস্থা তুলনামূলক ভালো। এ বিভাগের ৭৫ শতাংশ পরিবারের স্বাস্থ্যসম্মত খাবার কেনার সামর্থ্য আছে।

৬৪ জেলার মধ্যে সামর্থ্যরে দিক দিয়ে দেশের সবচেয়ে ভালো অবস্থানে কক্সবাজার জেলা। এ জেলার ৯১ শতাংশ পরিবারের স্বাস্থ্যসম্মত খাবার কেনার সামর্থ্য আছে। অন্যদিকে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি মেহেরপুরের। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের এ জেলার ৭৬ শতাংশ পরিবারের স্বাস্থ্যসম্মত খাবার কেনার সামর্থ্য নেই।

প্রধান গবেষক এবং পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. নাজমা শাহীন বলেন, ‘স্বাস্থ্যসম্মত খাবার (হেলদি ডায়েট) হিসেবে আমরা যে খাবার “আন্ডার নিউট্রেশন এবং ওভার নিউট্রেশন প্রতিরোধ করতে পারে” তাকে বুঝিয়েছি। ডিজাইরেবল ডায়েটারি গাইডলাইন-২০২০ অনুযায়ী ফুড পিরামিড বিশ্লেষণ করে সেখানে থেকে কোন স্বাস্থ্যসম্মত খাবার, কী পরিমাণে এবং তার ওজন কতটুকু হবে তা নির্ধারণ করা হয়েছে। ২০২২-এর জানুয়ারির মূল্য তালিকা থেকে এর দামও নির্ধারণ করা হয়েছে।’ 

হেলদি ডায়েট নিশ্চিত করতে খাদ্যাভ্যাসে পুনর্বিন্যাস আনার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে গবেষণায়। এ বিষয়ে অধ্যাপক নাজমা শাহীন বলেন, ‘দেখা যাচ্ছে পরিবারগুলো ভাতের (সিরিয়াল) বা অধিক শক্তি জোগায় এমন খাবারের পেছনে বেশি ব্যয় করছে। কিন্তু দুধ বা প্রাণিজ আমিষের জন্য কম খরচ করছে। ফল খাচ্ছে না। এ ব্যয়কে পুনর্বিন্যাস করা গেলে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার নিশ্চিত করা যায়। মূল্য তালিকা অনুযায়ী সবচেয়ে ন্যূনতম দামে যেসব খাবার পাওয়া গিয়েছিল, স্বাস্থ্যসম্মত খাবারের বিষয়টি মাথায় রেখে সেগুলোর সমন্বয়ে “ফুড বাস্কেট” তৈরি করা হয়েছে। 

প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, যাদের হেলদি ডায়েট নিশ্চিত হচ্ছে না তাদের পুষ্টির বিষয়টি নিশ্চিতে এসব বাস্কেট ব্যবহার করা যেতে পারে।’ গবেষণায় দেশের খাদ্যপণ্যের মূল্য তালিকা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের হেলদি ডায়েটের জন্য ৮৩ টাকার প্রয়োজন হয়। গবেষণায় ভাতভিত্তিক খাদ্যাভ্যাস থেকে বের হতে দেশব্যাপী ব্যাপকহারে পুষ্টি শিক্ষা কর্মসূচি চালানোর সুপারিশ করা হয়েছে। 

এছাড়া জনগণের পুষ্টির বিষয়টি নিশ্চিতে খাদ্য নিরাপত্তা পলিসি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন, বাজারে পুষ্টিকর খাদ্যের সরবরাহ নিশ্চিতে পদক্ষেপ গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0033628940582275