সিরাজগঞ্জ বাস-ট্রাকের মাঝে চাপা পড়ে শিশুপুত্র ও কন্যাসহ অন্তঃসত্ত্বা শিক্ষিকা ইফরাত সুলতানা রুনীর মৃত্যুর বিচারের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষকরা। এ দুর্ঘটনার সাথে জাড়িতদের বিচার দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে সিরাজগঞ্জ শহরের বাজার স্টেশন মুক্তির সোপান এলাকায় সিরাজগঞ্জে জেলার শিক্ষকদের আয়োজনে এ মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করা হয়।
মানববন্ধন থেকে ৫ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়। দাবিগুলো হচ্ছে-শিক্ষক ও তার দুই শিশু সন্তান হত্যার সুষ্ঠু বিচার করতে হবে, ঢাকা-এনায়েতপুর-বেলকুচিগামী বাসস্ট্যান্ড শহর থেকে মিরপুরে স্থানান্তর করতে হবে। দিনের বেলা শহরে ট্রাক-লড়ি চলাচল বন্ধ করতে হবে। শহরের বিভিন্ন মোড় প্রশস্ত করতে হবে ও শহরের ভিতর দিয়ে আন্তঃজেলা বাস চলাচল সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করতে হবে।মানববন্ধন শেষে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বরাবর একটি স্মারকলিপি দেয়া হয়।
মানববন্ধনে বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারি শিক্ষক সমিতি সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি আমিনুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা শাখার সভাপতি উদয় কুমার পাল, সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হাসান ভুঞা, বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতি জেলা শাখার সভাপতি অশীষ কুমার ঘোষ, সাধারণ সম্পাদক কে এম ছানোয়ার হোসেনসহ স্থানীয় শিক্ষকরা অংশগ্রহণ করেন।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে অন্তঃসত্ত্বা স্কুলশিক্ষিকা রুনী তার ছেলে ও এক মেয়ে ব্যাটারিচালিত রিকশায় করে শহরে যাচ্ছিলেন। পৌর এলাকার কালাচাঁন মোড় এলাকায় পৌঁছালে সিরাজগঞ্জগামী যাত্রীবাহী বাস সামনের ট্রাককে ওভারটেক করতে গিয়ে তাদের চাপা দেয়। এতে ছেলেমেয়েসহ শিক্ষিকা রুনী মারা যান।
জানা গেছে, সিরাজগঞ্জের পৌর এলাকা মিরপুরের নিজ বাড়ি থেকে স্কুল শিক্ষিকা রুনি খাতুন তার ১২ বছরের ছেলে আদি ও ৭ বছরের মেয়ে ছয়েবা কে নিয়ে কেনাকাটা করার জন্য রিকশা যোগে শহরে যাচ্ছিলেন। রিকশাটি মিরপুর কালা চান মোড়ে পৌছালে একটি ট্রাকের পিছনে পড়ে। সেই সময় বেলকুচি থেকে একটি দ্রুতগামী বাস রিকশাটিকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই স্কুল শিক্ষিকা রুনি খাতুর ও তার ছেলে আদি নিহত হয়। আহত হয় মেয়ে ছয়েবা ও রিকশা চালক। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় ছয়েবা। বাসের চালক ও সহকারী দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসীর। দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে পালিয়ে যায় বাসের চালক ও সহকারী।
নিহত রুনি খাতুন বনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ছিলেন। তার ছেলে আদি ৫ম শ্রেণি আর মেয়ে ছয়েবা শিশু শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন।
ঘটনায় মামলা দায়েরের পাশাপাশি বাসের চালক ও সহকারিকে আটকের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে সদর থানার অফিসাস ইনচার্জ বাহাউদ্দিন ফারুকি।