হঠাৎ ডিআইএর পরিচালক অধ্যাপক জাহাঙ্গীর - দৈনিকশিক্ষা

হঠাৎ ডিআইএর পরিচালক অধ্যাপক জাহাঙ্গীর

নিজস্ব প্রতিবেদক |

বিধান অনুযায়ী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর সরকারি কর্মচারীদের বদলি বন্ধ থাকে। কিন্তু ৮ নভেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার ঠিক ১০ দিন পর হঠাৎ এক আদেশে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদ্প্তরের (ডিআইএ) পরিচালক বনে গেলেন ঢাকা কলেজের ইংরেজির অধ্যাপক মো: জাহাঙ্গীর। ১৮ নভেম্বর তারঁ বদলির আদেশ হয় আর ডিআইএতে যোগদান করেন ২৫ নভেম্বর। হঠাৎ কেন জরুরি হয়ে পড়লো সাবেক পরিচালক আহাম্মদ সাজ্জাদ রশীদকে সরিয়ে জাহাঙ্গীরকে বসানোর? একই দিনের অপর এক আদেশে  ডিআইএর পরিচালক সাজ্জাদ রশীদকে নায়েমের মহাপরিচালক হিসেবে বদলি করা হয়। দুইজনই বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের অধ্যাপক। অধ্যাপক জাহাঙ্গীরের রাজনৈতিক বিশ্বাসই বা কি?  বদলির নেপথ্যে কি কাহিনী? এসব প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে শিক্ষা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মনে। যোগদানের কয়েকদিন পর দৈনিক শিক্ষার মুখোমুখি হন পরিচালক জাহাঙ্গীর। কিভাবে আপনি এই পদে এলেন? দৈনিক শিক্ষার এমন প্রশ্নের জবাবে, সহাস্যে পরিচালক জাহাঙ্গীর বলেন, ‘.......ফোন করে বললেন, স্যার আপনাকে একটা নতুন দায়িত্ব দেয়া হবে। কালই অর্ডার হবে, আপনি প্রস্তুত থাকুন। ব্যাস। এভাবেই আমার পদায়নের খবর পেলাম।’  জাহাঙ্গীরকে ফোন করেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন উপসচিব।

অধ্যাপক মো: জাহাঙ্গীর

দৈনিক শিক্ষার অনুসন্ধানে জানা যায়, এই উপসচিবকে টেলিফোন করার দায়িত্ব দিয়েছেন শিক্ষা প্রশাসনের সব অপকর্মের হোতা বিতর্কিত একজন অতিরিক্ত সচিব। শিক্ষা ক্যাডার থেকে কোনো পরীক্ষা ছাড়াই কোটায় বাংলাদেশ সরকারের উপসচিব ও পরে পদোন্নতি পেয়ে যথাক্রমে যুগ্ম-সচিব ও অতিরিক্ত সচিব পদ বাগান তিনি।  এই অতিরিক্ত সচিব সদ্যবিদায়ী শিক্ষামন্ত্রীর একান্ত সচিব ছিলেন দীর্ঘদিন। প্রায় আট বছর যাবত শিক্ষা মন্ত্রণালয়েই আছেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলা থেকে রেহাই পেতে নির্বাচনের আগেই দেশছাড়া হওয়া সাবেক শিক্ষামন্ত্রীর সাবেক একান্তসচিব মন্মথ বাড়ৈ সিন্ডিকেটের প্রভাবশালী সদস্য হিসেবে শিক্ষা প্রশাসনে পরিচিত এই অতিরিক্ত সচিব। শিক্ষা অধিদপ্তর, ঢাকা বোর্ড, যশোর বোর্ড, কুমিল্লা বোর্ড, নায়েম ও বড় বড় কলেজসহ  সারাদেশের শিক্ষা প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ প্রায় ২৫০ টি পদে বিতর্কিত, দুনীতিবাজ ও জামাত-বিএনপিপন্থীদের পদায়নের প্রধান কারিগরি এই অতিরিক্ত সচিব। 

ডিআইএর পরিচালক জাহাঙ্গীরের বলেন, ‘আমি টিকিউআইতে ডিপিডি (Deputy Project Director) ছিলাম প্রায় পাঁচ বছর। সম্প্রতি অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পেলাম। ঢাকা কলেজে যোগদান করলাম মাত্র দুই মাস আগে। আমার স্ত্রীও ঢাকা কলেজে কর্মরত। তিনি আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে সহপাঠী। স্ত্রীর নিজ জেলা উত্তরবঙ্গে। মন্ত্রী মহোদয়ের (নুরুল ইসলাম নাহিদ) শ্বশুরবাড়ীও ওইদিকেই। টিকিউআই অফিস এই ভবনেই (শিক্ষা ভবনের দ্বিতীয় ব্লকে), আবার পেলাম ডিআইএতে পদায়ন। আমাকে যেন এই ভবন ছাড়ছে না।’ 

বিদেশী অর্থলগ্নীকারীদের কাছ থেকে লোন করা টাকায় পরিচালিত প্রকল্প টিকিউআইতে (Teaching quality improvement project) দেশ-বিদেশে শিক্ষক প্রশিক্ষণ ছিলো প্রধান কাজ। আর ডিআইএ একটি টেকনিক্যাল ও টেকটিক্যাল কাজের জায়গা, আপনি কিভাবে এখানে ধাতস্থ হবেন? দৈনিক শিক্ষার এমন প্রশ্নের জবাবে জাহাঙ্গীর বলেন, প্রথমে কয়েকদিন আমি বোঝার চেষ্টা করছি। আমার যুগ্ম-পরিচালক একজন দক্ষ কর্মকর্তা। উপ-পরিচালকরাও খুবই দক্ষ। আট/দশ বছর যাবত কর্মরত আরো কয়েকজন কর্মকর্তা খুবই দক্ষ।  তাদেরকে আলাদা আলাদা করে জানতে চেয়েছি কীভাবে ডিআইএ চালানো যায়। তাদের কাছ থেকে বুদ্ধি-পরামর্শ নিচ্ছি। উনারা যা বলেন সবকিছু সেরকম করবো না। উনাদের দেয়া তথ্য ও পরামর্শ আর নিজের বুদ্ধি মিলিয়ে একেকটা সিদ্ধান্ত নিবো।  আশাকরি এভাবে ভালো চালাতে পারবো।  

এ পর্যন্ত কি কি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এমন প্রশ্নের জবাবে জাহাঙ্গীর বলেন, ‘ডিআইএর কর্মকর্তা সালেহ উদ্দিন সেখ ও অদুত রহমানকে ফের এখানেই পদায়নের জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছি। তারা এখানে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তাদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর জন্যই তাদেরকে আবারও এখানেই দরকার।’  জানা যায়, জাহাঙ্গীরের দেয়া চিঠির নেপথ্যে অন্যকিছু টনিক হিসেবে কাজ করেছে। তাদেরকে ফের পদায়নে আর্থিকভাবে লাভবান হবে মন্ত্রণালয়ের সেই বিতর্কিত অতিরিক্ত সচিব। 

জাহাঙ্গীরের শিক্ষাজীবনের রাজনৈতিক বিশ্বাসের নিষয়ে জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে তার এক সহপাঠী গতকাল দৈনিকশিক্ষাকে বলেন, ‘শ্রেণিকক্ষের বাইরে একজন সহপাঠীর সঙ্গে বেশি সময় দিতেন। আর মাঝে মাঝে দূর অথবা কাছে থেকে ছাত্র ইউনিয়নের মিছিল দেখেছেন ও শুনেছেন। সেই সুবাদে তিনি গত দশ বছর যাবত ছাত্র ইউনিয়নের কর্মী দাবি করে আসছেন। 

শিক্ষা মন্ত্রণালয়াধীন সরকারি-বেসরকারি স্কুল-কলেজ ও মাদরাসায় পরিদর্শন, নিরীক্ষা, অনুসন্ধান ও তদন্ত কাজের দায়িত্ব ডিআইএর। 

স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও - dainik shiksha স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি - dainik shiksha সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা - dainik shiksha ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0036718845367432