১৫ আগস্ট ১৯৭৫। সেদিনের হত্যাযজ্ঞের প্রথম শিকার ছিলেন বঙ্গবন্ধু পুত্র শেখ কামাল। রাষ্ট্রের সর্বময় ক্ষমতাধর ব্যক্তির সন্তান হয়েও রাজনীতি-ক্ষমতার বাইরে শেখ কামাল নিজেকে বিকশিত করেছিলেন ভিন্নধারায়। মাত্র ২৬ বছর বয়সে তার চলে যাওয়া স্বাধীনতা পরবর্তী তারুণ্যের উদ্দীপনাকেই থমকে দিয়েছিল।
সেনাবাহিনী বাড়ি ঘেরাও করে আছে জেনে নিচে নেমে এসেছিলেন শেখ কামাল। আর ঘাতকরা তাকে দেখতে পেয়েই গুলি করে হত্যা করে। বঙ্গবন্ধুর বড় ছেলে তখন মাত্র ২৬ বছর বয়সের তরুণ। ঘাতকরা তাঁর জীবনপ্রদীপ নিভিয়ে দিয়ে শেষ করে দেয় ক্রীড়া ও সংস্কৃতির এক অনন্য প্রতিভাকে।
লেখাপড়ার পাশাপাশি শেখ কামাল তার চারপাশের মহলে নিজেকে পরিচিত করেছিলেন ভিন্নধর্মী এক সংগঠক হিসেবে। শাহীন স্কুল থেকে মাধ্যমিক আর ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর পড়ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। পঁচাত্তরে ছিলেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শেষ পর্বের পরীক্ষার্থী। তুমুল জনপ্রিয় শেখ কামালের প্রাণচাঞ্চল্যে ভরপুর ছিল ক্রীড়াঙ্গণ ও সংস্কৃতিজগত।
সদা উদ্যমী শেখ কামাল দেশ স্বাধীনের পর একদিকে গড়ে তোলেন আবাহনী ক্রীড়াচক্র, অন্যদিকে নিজেকে ব্যস্ত রাখেন অভিনয় ও সংস্কৃতির নানা শাখায়। গ্রুপথিয়েটার নাট্যচক্রের প্রথম সারির মঞ্চকর্মী ও সংগঠক ছিলেন তিনি। গান গাইতেন, ছায়ানটে শিখতেন সেতার বাদন।
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে সরাসরি রণাঙ্গণে চলে যান শেখ কামাল। লেফটেনেন্ট হিসেবে বাংলাদেশ বাহিনীর প্রধান সেনাপতি জেনারেল ওসমানীর এডিসি ছিলেন তিনি।
৭৫ এর ১৪ জুলাই সেসময়ে দেশসেরা অ্যাথলিট সুলতানা খুকুর সঙ্গে বিয়ে হয় শেখ কামালের। কিন্তু জীবনের শেষ দিনটি পর্যন্ত কর্মউদ্যোগী এই উজ্জ্বল তরুণ হয়তো জানতেন না যে তাঁর জন্মদিনের মাসেই তাকে এভাবে চলে যেতে হবে।