একাধিক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আবাসিক হলগুলো খুলে দেয়ার দাবি তুলেছে। আগামী ১৭ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল ও ২৪ মে থেকে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় খোলার কথা জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। কিন্তু শিক্ষার্থীরা সে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে নারাজ। কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের তালা ভেঙে সেখানে অবস্থান নিয়েছে শিক্ষার্থীরা। জাবি কর্তৃপক্ষ বলেছে, হল না ছাড়লে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নিবন্ধনে আরও জানা যায়, সরকার এখনই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে চাচ্ছে না কারণ কোভিড-১৯ মহামারীর ঝুঁকি এখনও চলে যায়নি। অগ্রাধিকারভিত্তিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের করোনা ভ্যাকসিন নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার কথা বলা হচ্ছে।
দেশে করোনা যখন দ্রুত বিস্তৃত হচ্ছিল, এর সংক্রমণের চিত্র সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট ধারণা পাওয়া যাচ্ছিল না তখন পোশাক কারখানা খুলে দেয়া হয়েছে। ৬৬ দিনের সাধারণ ছুটির মধ্যে হাজারও কারখানা চালু ছিল। ছুটি শেষ হওয়ার আগেই নানা পরিসরে খুলে দেয়া হয়েছিল ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। ছুটির পর কিছুদিন মানা হলেও এখন গণপরিবহনে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। এ অবস্থায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা কতটা যৌক্তিক সেই প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। উন্নত অনেক দেশেই করোনার সংক্রমণের মধ্যেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে দেখা গেছে। শীত মৌসুম চলে যাওয়ার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হতে পারে বলে সাধারণ মানুষ ধারণা করেছিলেন। ভ্যাকসিন আসার পর তাদের এ ধারণা আরও জোরালো হয়। কিন্তু ঈদ পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত তাদের হতাশ করেছে।
একটা যৌক্তিক সময়ের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হবে সেটা আমাদের আশা। বিশ্ববিদ্যালয়ের হল খোলার বিষয়েও দ্রুত একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে হবে। এক্ষেত্রে আবাসিক হলের শিক্ষার্থীদের সমস্যাগুলো আমলে নিতে হবে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে যেসব শিক্ষার্থী থাকে তারা করোনা মহামারীর সময় গত প্রায় এক বছর নানা প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছে। তারা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ছে, চাকরির বাজারে প্রবেশ বিলম্বিত হচ্ছে।
সমস্যা এখানেই সীমাবদ্ধ নয়। হলে থাকা-খাওয়ার সঙ্গে নিরাপত্তা ও আর্থিক সঙ্গতির যোগ রয়েছে। সমস্যাগুলো তারা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। শুধু আলটিমেটাম দিয়ে হল ছাড়ার কথা বললে সমস্যার সমাধান মিলবে না। বরং পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হতে পারে।
সূত্র: দৈনিক সংবাদ।