হাওড় এলাকায় শিক্ষার বাস্তবতা - দৈনিকশিক্ষা

হাওড় এলাকায় শিক্ষার বাস্তবতা

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

পুরো সুনামগঞ্জ জেলা, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলার একটা বড় অংশ এবং সিলেট সদর উপজেলার একাংশ, পাশাপাশি কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলার বাইরের অংশ মিলে এই বিস্তৃত অঞ্চলটা হাওড় অববাহিকা বা হাওড় এলাকা হিসেবে পরিচিত। এই অববাহিকা নদী, স্রোত এবং সেচ খাল, মৌসুমি প্লাবন, চাষের সমভূমির বিশাল এলাকা এবং শত শত হাওড়-বিলসহ জলাভূমি-ইকোসিস্টেমের এক নান্দনিক মোজাইক- যা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। এই হাওড় অববাহিকায় প্রায় ৪০০টি হাওড় ও বিল রয়েছে, যাদের এক একটির আয়তন কয়েক হেক্টর থেকে কয়েক হাজার হেক্টর পর্যন্ত। সুনামগঞ্জ জেলার উল্লেখযোগ্য হাওড়গুলো হলো শনির হাওড়, মাটিয়ান হাওড়, হালির হাওড়, কড়চা হাওড়, পাকনা হাওড়, ধলা পাকনা হাওড়, আঙ্গরখালি হাওড়, খচ্চর হাওড়, নখলা হাওড়, সানুয়াডাকুয়া হাওড়, শৈল চকরা হাওড়, হৈশাম হাওড়, বড় হাওড়, হালিয়ার হাওড়, চন্দ্রসোনার থাল হাওড়, ডিঙ্গাপুতা হাওড়, দেখার হাওড় এবং পৃথিবীখ্যাত টাংগুয়ার হাওড়। সোমবার (১ মে) ভোরের কাগজ পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়।

নিবন্ধে আরও জানা যায়, সুনামগঞ্জের বিশাল এলাকাজুড়ে বিস্তৃত হাওড় অঞ্চলটি নিম্নভূমি এবং বন্যাপ্রবণ জলাভূমি দ্বারা আবৃত। এখানকার হাওড় পাড়ের মানুষ প্রাথমিকভাবে কৃষি থেকে জীবিকা নির্বাহ করে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি, অফুরন্ত প্রাকৃতিক সম্পদ ভাণ্ডার এবং রাজনৈতিক-অর্থনীতির সমীরণে অসাধারণ ইকোসিস্টেম সুযোগ থাকা সত্ত্বেও এলাকাটি দেশের সবচেয়ে অনুন্নত ও অবহেলিত এলাকা। ‘সরেজমিন হাওড়াঞ্চল-দুর্গম হাওড়ে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও জীবিকার সংকট’ শিরোনামে ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ প্রকাশিত প্রথম আলো প্রতিবেদন অনুসারে, “হাওড়ের বেশির ভাগ মানুষ কৃষিকাজ করে। কেউ কেউ কৃষিকাজের ফাঁকে মাছ ধরে। কিন্তু অবারিত হাওড়ে এখন আর আগের মতো মাছ ধরতে যেতে পারে না। কারণ হাওড়ের জলমহালগুলো স্থানীয় ভাষায় ‘ওয়াটারলর্ডদের’ দখলে।” হাওড় অঞ্চলের শিক্ষার অবস্থা খারাপ, তার মধ্যে সুনামগঞ্জ জেলার শিক্ষার অবস্থা একেবারেই বেহাল। এটা শুধু প্রাকৃতিক সীমাবদ্ধতা না; নেতৃত্ব দূরদর্শিতা, সক্ষমতা এবং আবেগ-বুদ্ধিমত্তা ও নৈতিকতাও এখানে বড় প্রশ্ন।

হাওড় অঞ্চলে শিক্ষা
শিক্ষা একটি মৌলিক মানবাধিকার এবং সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। কিন্তু দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত হাওড় জনপদে শিশুরা মানসম্মত শিক্ষা, এমনকি অনেকে মৌলিক শিক্ষার সুযোগ বঞ্চিত। হাওড় এলাকায় বসবাসকারী শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা বা কর্মমুখী শিক্ষার সুযোগ পাওয়া একটি উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ। হাইস্কুলের গণ্ডি পেরোনোর আগেই ঝরে পরে একটা বড় অংশ, হাইস্কুল পেরিয়ে যে সামান্য অংশটা কলেজে যায় তাদের অধিকাংশের ভিত থাকে খুব দুর্বল। এর মানে অধিকাংশ ক্ষেত্রে মাধ্যমিক শিক্ষা মান ও সুযোগও খারাপ, প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা অপ্রতুলতা তো আছেই। কলেজের সংখ্যাও অপ্রতুল এবং মানসম্মত কলেজ হাতেগোনা কয়েকটা মাত্র, তাও সেগুলো জেলা শহরগুলোতে। না আছে উচ্চশিক্ষা সুযোগ, না আছে কর্মমুখী শিক্ষার ভালো সুযোগ। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে নেত্রকোনা ও সুনামগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয় কেবল স্থাপিত হয়েছে। তার ফল পেতে আরো সময় লাগবে। নেত্রকোনায় ভর্তি প্রক্রিয়া চালু হলেও সুনামগঞ্জে তা চালু হতে আরো কয়েক বছর লাগবে। এর আগে পুরো হাওড় অববাহিকার জন্য ছিল সিলেটে একটিমাত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। যদিও সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলা এবং নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জ জেলার উচ্চশিক্ষা সুযোগপ্রত্যাশীরা সাধারণত চলে যেত ময়মনসিংহ বা ঢাকায়।

সুনামগঞ্জের বাস্তবতা
২০২১ সালে পরিচালিত জনশুমারি ও গৃহগণনার প্রাথমিক প্রতিবেদন ২০২২-এ প্রকাশিত হয়। এতে দেখা যায় সাত বছর বা তার বেশি বয়সিদের মধ্যে বাংলাদেশের গড় সাক্ষরতার হার ৭৪.৬৬ শতাংশ, যা ২০১১ সালে পরিচালিত আদমশুমারি থেকে ২২.৮৯ শতাংশ বৃদ্ধি দেখায়। আগের শুমারিতে সাক্ষরতার হার ছিল ৫১.৭৭ শতাংশ। জনশুমারি ও গৃহগণনা প্রাথমিক প্রতিবেদন ২০২২ অনুযায়ী জাতীয় গড় থেকে সবচেয়ে কম সাক্ষরতার হার পাঁচটি জেলার একটি সুনামগঞ্জ। বাকি চারটি হচ্ছে জামালপুর, শেরপুর, বান্দরবান ও কুড়িগ্রাম। সুনামগঞ্জের সাক্ষরতার হার ৬৪.৭৭ শতাংশ। অন্যদিকে সিলেট বিভাগের চারটি জেলার মধ্যেও সবচেয়ে কম সাক্ষরতার হার সুনামগঞ্জে। ইউনিসেফ প্রকাশিত ২০১০ সালের এক প্রতিবেদন বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলাকে ‘বঞ্চনা সূচক’ অনুযায়ী ভাগ করে। সেই প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশের আটটি জেলা ‘সবচেয়ে বেশি বঞ্চিত’, তার দুটিই (অর্থাৎ সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জ) সিলেট বিভাগে। সিলেট বিভাগের দুটি জেলায় সাক্ষরতার হার জাতীয় গড় থেকে অনেক কম। সিলেটের এই দুটি জেলাকে অর্থাৎ সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জকে সম্পূর্ণ অর্থেই দুর্বল অবকাঠামোর ও প্রাকৃতিক বিপর্যয় ভঙ্গুর হাওড় শিক্ষা ব্যবস্থা বলা যায়। তার মধ্যে সুনামগঞ্জ জেলা শুধু সাক্ষরতার হার না, শিক্ষার উৎকর্ষতার সব দিক দিয়েই জাতীয়ভাবে এবং সিলেট বিভাগের মধ্যে পিছিয়ে, অর্থাৎ শিক্ষামান, শিক্ষা সুযোগ-সুবিধা এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যায় পিছিয়ে।
সারাদেশের মধ্যে ঝরে পড়ার হার সুনামগঞ্জে সর্বাধিক। অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা যেমন- কমিউনিটির প্রয়োজন অনুযায়ী পর্যাপ্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পর্যাপ্তসংখ্যক ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, নিম্ন গ্রেড এবং ঊর্ধ্ব গ্রেডের নিবন্ধন সংখ্যার মধ্যে স্থিতি, সারা বছর চালু থাকার সুযোগ, সারা বছর পাওয়া খেলার মাঠ, স্কুলে যাতায়াত ব্যবস্থা এবং যাতায়াত অবকাঠামো, স্কুলে বিদ্যুৎ, খাবার পানি এবং মেয়েদের শৌচাগার- প্রতিটি ক্ষেত্রেই সুনামগঞ্জ দেশ এবং বিভাগ থেকে পিছিয়ে। পাঁচটি সংসদীয় নির্বাচনী এলাকার ৪টি পৌরসভা ও ১২টি উপজেলায় ৩৭৪৭.১৮ বর্গ কি.মি. আয়তনে মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাত্র ২৩১টি। অনেক গ্রামে এখনো প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই। মেডিকেল কলেজ চালু হয়েছে সবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য মাত্র ভূমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে। ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা একেবারেই কম। তারপরও যেগুলো আছে তার বেশির ভাগই পৌর এলাকায় বা জেলা শহরে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উপাত্ত অনুযায়ী জেলায় প্রাক প্রাথমিক পাঠের সুযোগ উপযোগী বিদ্যালয়ের সংখ্যা যথেষ্ট। কিন্তু এগুলোর বেশির ভাগই মানসম্মত না এবং বছরব্যাপী চলার অনুপযোগী। ঝরে পড়া ও সাইকেল পূর্ণতার হারের দিক থেকে সুনামগঞ্জ অনেক পিছিয়ে আছে। শিশুদের দেরিতে ভর্তি ও আগাম ঝরে পড়া এখানকার একটা খুব স্বাভাবিক চিত্র। হাওড় অধ্যুষিত সুনামগঞ্জের শিক্ষা ক্ষেত্রে কিছু এনজিও এবং বেসরকারি উদ্যোগও লক্ষণীয়- যা প্রশংসার দাবি রাখে। তার মধ্যে ব্র্যাকের ‘শিক্ষা তরী’ অন্যতম। ব্র্যাকের উদ্যোগে ২০১২ সালে দুর্গম হাওড়াঞ্চলে সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য নৌকায় চালু করা হয় ভাসমান প্রাথমিক স্কুল- যা ‘শিক্ষা তরী’ নামে এলাকায় পরিচিত।

কারণ ও ফলাফল
সুনামগঞ্জ ভৌগোলিক দিক থেকে দেশের অপরাপর এলাকাগুলো থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রকৃতির, একটি হাওড় অধ্যুষিত এলাকা। এটি হাওড়-বাঁওড়, বিল-ঝিল, নদী-নালা-খাল, বিস্তীর্ণ নিচু কৃষি ভূমি, সমভূমি ও নিচু ভূমির বসত ভিটা এবং পাহাড়ঘেঁষা নান্দনিকতায় এক বৈচিত্র্যময় ভূপ্রকৃতি, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের সমীরণে সংস্কৃতি-ইতিহাস-ঐতিহ্য সমৃদ্ধ এক জনপদ। মাছ, ধান, শস্য, বালু, পাথর, কয়লাসহ নানা প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর এই বিস্তীর্ণ ভূখণ্ড। কিন্তু বৈচিত্র্যের মাঝে ঐক্য স্থাপনে এবং প্রকৃতির খেয়াল জয়ের সক্ষমতা সাধারণ জীবন ধারায় পৌঁছাতে যে দূরদর্শী, সক্ষম এবং ইথিকাল ও ইম্প্যাক্ট লিডারশিপের মেলবন্ধন প্রয়োজন তার অনুপস্থিতি এখানে সবসময়ই কমবেশি ছিল। এখানকার মানব উন্নয়ন সূচকের তাৎপর্যপূর্ণ উন্নয়ন ঘটেনি। এমনকি এখানকার গৃহায়ণ, আর্থসামাজিক অবকাঠামো, যাতায়াত ব্যবস্থা, শিক্ষা-স্বাস্থ্য সুবিধা এবং জনমানুষের পেশাসহ বেঁচে থাকার নানা অনুষঙ্গে গণ-অসচেতনতা, ভঙ্গুরতা ও প্রকৃতির কাছে অসহায়ত্ব প্রকাশের ছাপ প্রখরভাবে ফুটে উঠেছে।
উপর্যুক্ত প্রেক্ষিত থেকে উদ্ভূত আর্থসামাজিক অবকাঠামো ও যাতায়াত ব্যবস্থার পশ্চাৎপদতা, শিক্ষা অবকাঠামো ও সুযোগের অপ্রতুলতা, দুর্বল অভিযোজন যোগ্যতা, আর্থিক অনগ্রসরতা এবং সামাজিক অসমতা আর বৈষম্যের কারণে এই অঞ্চলের শিশুরা বিদ্যালয়ে ভর্তি হয় কম। যারা ভর্তি হয় তাদের একটা বড় অংশ প্রাথমিকেই ড্রপআউট হয়ে যায় বা ঝরে পড়ে। যারা মাধ্যমিকে যায় তাদের অল্পসংখ্যক ভালো করে শিক্ষার সুযোগ পায়; ফলে উচ্চশিক্ষার অথবা কারিগরি শিক্ষা লাভের ভিত হয় দুর্বল। মাধ্যমিক স্তরেও ঝরে পড়ার সংখ্যা পর্যাপ্ত। যারা কলেজ পর্যন্ত শিক্ষার সুযোগ পায় তাদের মধ্যেও উদ্যোক্তা মনোভাব ও দক্ষতা প্রান্তিক পর্যায়ে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো এবং শেখার সুযোগ-সুবিধা শিক্ষার্থীদের মানসম্মত শিক্ষার্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সুনামগঞ্জ জেলার প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো দেশের অন্যান্য অঞ্চলের প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে বিদ্যুৎ, পানীয় জল, সারা বছর খেলার উপযোগী মাঠ, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন দেয়াল ও মেঝে এবং ভালো মানের ব্ল্যাকবোর্ডের অভাব রয়েছে। অন্যদিকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর অবস্থা সারাদেশের মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর গড় মানের কাছাকাছি হলেও বেশ কিছু ক্ষেত্রে ভালো বিজ্ঞানাগারের অভাব রয়েছে এবং মাধ্যমিক স্কুল অপ্রতুলতার কারণে অধিকাংশ শিক্ষার্থীকে অনেক দূর-দূরান্ত থেকে দুর্গম পথ পেরিয়ে স্কুলে আসতে হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং বর্ষা প্রতিবন্ধকতাতো আছেই।

সুপারিশ
এপ্রিল ২৫, ২০২৩ সুনামগঞ্জে অনুষ্ঠিতব্য ‘হাওড় এলাকায় শিক্ষার বাস্তবতা : সুনামগঞ্জের গল্প’ শীর্ষক সেমিনার ও মতবিনিময়ে সুধীজনের মুক্ত আলোচনা এবং নীতি আলোচকদের নীতি প্রণয়ন ও নীতি বাস্তবায়ন আলোচনার ভিত্তিতে এভিডেন্স বেসড প্রায়োগিক, ইনক্লুসিভ এবং কৌশলগত সুপারিশমালা লিপিবদ্ধ করা হবে।

উপসংহার
শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অবকাঠামো ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় সুনামগঞ্জের পিছিয়ে পড়া শুধু পরিবেশগত ও প্রাকৃতিক সীমাবদ্ধতা না; স্থানীয় নেতৃত্ব, বিশেষ করে সাংসদদের নেতৃত্ব দূরদর্শিতা, ইমপ্যাক্ট লিডারশিপ সক্ষমতা এবং আবেগ-বুদ্ধিমত্তা ও নৈতিকতাও এখানে বড় প্রশ্ন। কালের কণ্ঠের সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২২ প্রতিবেদন অনুসারে সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২২ সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর থেকে ‘বিজ্ঞান তরী’, ‘গণিত তরী’ ও ‘মূল্যবোধ তরী’ নামের তিনটি নৌকা নিয়ে আনন্দময় শিশুশিক্ষার এক অভিনব নৌযাত্রার সূচনা করেছে ব্র্যাক। এটি আবেগ বুদ্ধিমত্তার একটি উদাহরণ। অন্যদিকে এখানে নেতৃত্ব দূরদর্শিতা, ইমপ্যাক্ট লিডারশিপ ও আবেগ বুদ্ধিমত্তা সমীরণের একটি বড় উদাহরণ হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে হাওড়ে উড়াল সেতু ও দীর্ঘ সংযোগ রাস্তা স্থাপনের উদ্যোগ, মেডিকেল কলেজ স্থাপন এবং সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন প্রণয়ন। পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের উদ্যোগে সিলেট-সুনামগঞ্জ রেল স্থাপন উদ্যোগ এবং সুনামগঞ্জে অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর স্থাপন উদ্যোগ নেতৃত্ব দূরদর্শিতা ও ইমপ্যাক্ট লিডারশিপ সক্ষমতা এবং আবেগ-বুদ্ধিমত্তার উদাহরণ। এই ধারা হাওড়-বাঁওড়ের জনপদ পিছিয়ে পড়া সুনামগঞ্জে বিলম্বে হলেও চালু হয়েছে; উত্তরসূরি নেতৃত্বের তা অব্যাহত রাখতে হবে।
নৈতিকতার প্রশ্নটা আসে যখন আমরা দেখি হাওড় লুটপাটের চিত্র; অত্যন্ত ভঙ্গুর উন্নয়ন, যেমন- দুর্বল এবং ভঙ্গুর সাবমারসিবল রোড, রাস্তাঘাটসহ অবকাঠামোগত উন্নয়নের স্থায়িত্বহীনতা বা অতি ভঙ্গুরতা, হাওড় সম্পদের (অর্থাৎ জলমহাল-বালু-পাথর-কয়লার) অন্যায্য-অনৈতিক বণ্টন ও চরম অব্যবস্থাপনা এবং হাওড়-বাঁধ নির্মাণকাজে পিআইসি নিয়োগে চরম অনৈতিক পন্থা অবলম্বনের ট্রেন্ডস বা দৃষ্টান্ত। এসব কাজে যদি কোনো আইন প্রণেতার সংযোগ থাকে, তা হবে অত্যন্ত গর্হিত। এমন নেতৃত্বকে আমাদের সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে সাহসিকতার সঙ্গে বর্জন করতে হবে। হাওড় জনপদ সুনামগঞ্জের শিক্ষাব্যবস্থায় তাৎপর্যপূর্ণ ও স্থায়িত্বশীল উন্নয়ন নিশ্চিতকল্পে হাওড় নান্দনিকতা ও প্রতিকূলতা বৈচিত্র্যের মাঝে ঐক্য স্থাপনে এবং এর মাধ্যমে প্রকৃতির খেয়াল জয়ের সক্ষমতা সাধারণ জীবন ধারায় পৌঁছাতে সক্ষম এমন দূরদর্শী, আবেগ-বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন ইথিকাল ও ইম্প্যাক্ট লিডারশিপের বিকাশ ঘটাতে হবে।


লেখক : ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম তালুকদার, অধ্যাপক, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশ।

কাল খুলছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শনিবারও চালু ক্লাস - dainik shiksha কাল খুলছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শনিবারও চালু ক্লাস সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি - dainik shiksha সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি - dainik shiksha বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাতে স্মার্টফোন নয় - dainik shiksha ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাতে স্মার্টফোন নয় একই স্কুলের দুই ছাত্রীকে বিয়ের পর আরেক ছাত্রীকে ল্যাব সহকারীর অনৈতিক প্রস্তাব - dainik shiksha একই স্কুলের দুই ছাত্রীকে বিয়ের পর আরেক ছাত্রীকে ল্যাব সহকারীর অনৈতিক প্রস্তাব দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0082240104675293