‘৭০০ টাকা ঘুষে দিয়ে শিক্ষকের বেতন বাড়লো ৭০ টাকা’ শিরোনামে ‘দৈনিক শিক্ষা’ ও ‘দৈনিক আমাদের বার্তায়’ প্রতিবেদন প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসেছে প্রাথমিক শিক্ষা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) দুপুরে এ পটুয়াখালীর বাউফলের শিক্ষকদের করা এ অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে পটুয়াখালী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. মিজানুর রহমান নিজেই বাউফলের নাজিরপুর বোর্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলঘ্ন ইউআরসি ভবনে ঘটনার তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করেন। এর আগে গত বুধবারও তিনি বাউফলে এসে কয়েকজন শিক্ষকের সাথে অভিযোগটি নিয়ে কথা বলেছেন। [insie-ad-1]
আরও পড়ুন : দৈনিক শিক্ষাডটকম পরিবারের প্রিন্ট পত্রিকা ‘দৈনিক আমাদের বার্তা’
জেলা শিক্ষা অফিসার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, প্রকাশিত রিপোর্টি দৃষ্টিগোচর হয়েছে তার। গতকাল বুধবার ও আজ বৃহস্পতিবার এই দুই দিন সরেজমিন তদন্ত করছেন তিনি। পৃথক বক্তব্য নিয়েছেন অন্তত ২০ জন শিক্ষকের। তিনি বলেন, ‘আলাদা কক্ষে ডেকে নিয়ে শিক্ষকদের বক্তব্য নেয়া হয়েছে। প্রাপ্ত তথ্য যাচাই-বাছাই শেষে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এর আগে ১৩তম গ্রেডে বেতন উন্নীত করতে উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ শতাধিক সহকারী শিক্ষকের কাছ থেকে ৭০০ টাকা করে ঘুষ নেয়ার অভিযোগ উঠে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পৃথক স্কুলের কয়েকজন সহকারী শিক্ষক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, ‘অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের ১৫তম গ্রেড থেকে ১৩তম গ্রেডে উন্নীত করার কাজ শুরু করে উপজেলা শিক্ষা অফিস। আর ওই কাজে প্রত্যেক শিক্ষকের কাছ থেকে উৎকোচ নেয়া হচ্ছে ৭০০ টাকা হারে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আর টাকা হাতে নিয়েই তবে স্বাক্ষর করা হয় ফাইলে। ওই উপজেলায় ২৩৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মোট ১ হাজার ২৭৫জন শিক্ষকের মধ্যে ৫ শতাধিক কর্মরত আছেন সহকারী শিক্ষক পদে। মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী এদের বেতন ১৫তম গ্রেড থেকে ১৩তম গ্রেডে উন্নীত হচ্ছেন।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব ও ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সহকারী শিক্ষক আক্ষেপ করে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘৭০০ টাকা ঘুষে বেতন বাড়ছে ৭০টাকা। আগের গ্রেডে বেসিক ছিল ১৮ হাজার ৪৬০ টাকা। এবার ৫০ টাকা বেড়ে ১৮ হাজার ৫১০ টাকা হয়েছে। আর ওই অনুপাতে ২০ টাকা বাড়ি ভাড়া বেড়েছে। এতে আগের চাইতে মোট ৭০ টাকা বেতন বাড়ছে।’
শিক্ষকদের অভিযোগ অল্প কয়েকজন শিক্ষককের দালালি আর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারসহ কয়েকজন কর্মচারীর যোগসাজসে চলে বিভিন্ন সময়ে উপজেলার বিদ্যালয়গুলোর বিভিন্ন কিছুর কেনাকাটা আর অফিসের অনিয়ম-দুর্নীতি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সন্ধ্যা রাত থেকেই চলে ওই অফিসের কাজবাজ। অনিয়মের ঘটনা জেনে যাওয়ার ভয়ে এ সময় সচেতন শিক্ষদের কেউ অফিসে ডুকে পড়লে কাজকর্ম সেরে দ্রুত বিদায় দেয়া হয় তাদের। আর তাদের ধরণা ধরতে না হলেও সাধারণ শিক্ষকরা বিভিন্ন কাজকর্মে আছেন অফিসের অলিখিত এই সিন্ডিকেটের গ্যারাকলে।
শিক্ষকদের এসব অভিযোগ নিয়ে গত ১৫ জুন ‘৭০০ টাকা ঘুষে দিয়ে শিক্ষকের বেতন বাড়লো ৭০ টাকা’ শিরোনামে ‘দৈনিক শিক্ষা’ ও ‘দৈনিক আমাদের বার্তায়’ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
যদিও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. রিয়াজুল হক ঘুষ নেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, শিক্ষদের গ্রেড পরিবর্তনের জন্য ইএফটি ও সার্ভিস বহিঃ তৈরি করে হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। অনেকেরই গ্রেড পরিবর্তন হয়েছে। বাকিদেরও গ্রেড পরিবর্তনের কাজ চলছে।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।