১৩০ কোটি শিক্ষার্থীর বাড়িতে ইন্টারনেট নেই - দৈনিকশিক্ষা

১৩০ কোটি শিক্ষার্থীর বাড়িতে ইন্টারনেট নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক |

করোনাকালে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষাকে প্রাধান্য দিয়ে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে ইন্টারনেটের মাধ্যমে দূরশিক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু ডিজিটাল বিভাজন ও বৈষম্যের কারণে দূরশিক্ষণের মাধ্যমগুলো ব্যবহারের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী। এর মধ্যে বিশ্বের শুধু স্কুলবয়সী দুই-তৃতীয়াংশ শিক্ষার্থীর বাড়িতে ইন্টারনেট নেই বলে জানানো হয়েছে জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফ এবং আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়নের (আইটিইউ) নতুন এক প্রতিবেদনে।

আজ মঙ্গলবার ইউনিসেফের ওয়েবসাইটে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রতিবেদনটি প্রকাশের তথ্য জানানো হয়েছে।

‘কতসংখ্যক শিশু ও তরুণের ঘরে ইন্টারনেট সুবিধা আছে?’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী স্কুলবয়সী ৩ থেকে ১৭ বছর বয়সী ১৩০ কোটি শিশুর বাড়িতে ইন্টারনেট সংযোগ নেই। একই অবস্থা ১৫-২৪ বছর বয়সী তরুণদেরও। তরুণ জনগোষ্ঠীর ৬৩ শতাংশের (৭৫ কোটি ৯০ লাখ) ঘরে ইন্টারনেট সংযোগ নেই।
 ৮৫টির বেশি দেশের তথ্য নিয়ে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।

ইউনিসেফ-আইটিইউয়ের নতুন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দরিদ্র পরিবার, গ্রামাঞ্চল ও স্বল্প আয়ের পরিবারের শিশু ও তরুণ জনগোষ্ঠী সমবয়সী বা সহপাঠীদের চেয়ে আরও পিছিয়ে পড়ছে। সহপাঠীদের সঙ্গে আবার একই কাতারে পৌঁছানোর সুযোগও তাদের খুব কম। 

নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে স্কুলবয়সী প্রতি ২০ জন শিশুর মধ্যে ১ জনের কম শিশুর বাড়িতে ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে। উচ্চ আয়ের দেশগুলোতে প্রতি ১০ জন শিশুর ৯ জনের বাড়িতেই ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে।

ইন্টারনেট ব্যবহারে দেশ ও অঞ্চলজুড়ে ভৌগোলিক বৈষম্যও রয়েছে। বাড়িতে ইন্টারনেট না থাকা ৩ থেকে ১৭ বছরের স্কুলবয়সী শিশুর সংখ্যা দক্ষিণ এশিয়ায় ৮৮ শতাংশ (৪৪ কোটি ৯০ লাখ), পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ৩২ শতাংশ (১৮ কোটি ৩০ লাখ), পশ্চিম ও মধ্য আফ্রিকায় ৯৫ শতাংশ (১৯ কোটি ৪০ লাখ), পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চলীয় আফ্রিকায় ৮৮ শতাংশ (১৯ কোটি ১০ লাখ), মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকায় ৭৫ শতাংশ (৮ কোটি ৯০ লাখ), লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলে ৪৯ শতাংশ (৭ কোটি ৪০ লাখ) এবং পূর্ব ইউরোপ ও মধ্য এশিয়ায় ৪২ শতাংশ (৩ কোটি ৬০ লাখ)। সাব-সাহারা আফ্রিকা ও দক্ষিণ এশিয়ার স্কুলবয়সী শিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। সেখানে প্রতি ১০ জন শিশুর মধ্যে প্রায় ৯ জনই ইন্টারনেট সুবিধার বাইরে।

ইউনিসেফ-আইটিইউয়ের প্রতিবেদনে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়েছে, ক্রয়ক্ষমতার বৈষম্য, সন্তানদের অনলাইনে নিরাপদ রাখতে মা-বাবার যথাযথ প্রস্তুতি না থাকা ও মেয়েদের ক্ষেত্রে ইন্টারনেট ব্যবহারের অনুমতি না থাকা এবং নিম্নপর্যায়ের ডিজিটাল দক্ষতার কারণে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।

এদিকে ২০১৯ সালে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ও ইউনিসেফ পরিচালিত মাল্টি ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভের তথ্য সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তুলে ধরে জানানো হয়, বাংলাদেশের ৬২ শতাংশ পরিবারের বাড়িতে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ নেই। 

বাংলাদেশে সবচেয়ে দরিদ্র ২০ শতাংশ পরিবারের মাত্র ৮ দশমিক ৭ শতাংশের বাড়িতে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। সবচেয়ে ধনী ২০ শতাংশ পরিবারের ক্ষেত্রে এ হার ৭৫ দশমিক ৩ শতাংশ।

দূরশিক্ষণের আরেকটি প্রধান মাধ্যম টেলিভিশনের বেলায় বলা হচ্ছে, জাতীয়ভাবে ৫১ শতাংশ পরিবারে টেলিভিশন রয়েছে। সবচেয়ে দরিদ্র ২০ শতাংশ পরিবারের মধ্যে মাত্র ৪ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবারে টেলিভিশন রয়েছে। সবচেয়ে ধনী ২০ শতাংশ পরিবারের মধ্যে এ হার ৯০ দশমিক ২ শতাংশ।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি টোমো হোযুমি বলেছেন, দূরশিক্ষণের এই মাধ্যমগুলো ব্যবহারের সুযোগ না পাওয়া শিশুরা ডিজিটাল বিভাজন ও বৈষম্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মহামারি চলাকালে তারা শিক্ষা গ্রহণের কম সুযোগ পেয়েছে। এটা তাদের শিক্ষাজীবন ও ভবিষ্যৎকে এলোমেলো করে দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, এ বিভাজন আগে থেকে বিদ্যমান বৈষম্যকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এটি দারিদ্র্য ও বৈষম্যের দুষ্টু চক্রকে এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে দীর্ঘস্থায়ী রূপ দিতে পারে, যেখানে শিশুরা পরিণত হচ্ছে এর বাহকে।

প্রাথমিকের শিক্ষকদের ফের অনলাইনে বদলির সুযোগ - dainik shiksha প্রাথমিকের শিক্ষকদের ফের অনলাইনে বদলির সুযোগ তীব্র তাপপ্রবাহের ভেতরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে রোববার - dainik shiksha তীব্র তাপপ্রবাহের ভেতরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে রোববার দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি নতুন শিক্ষাক্রম ও কিছু কথা - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রম ও কিছু কথা কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে স্কুলে দুই শিফটের ক্লাস চালু রাখার সভা রোববার - dainik shiksha স্কুলে দুই শিফটের ক্লাস চালু রাখার সভা রোববার শিক্ষা কর্মকর্তার আইডি ভাড়া নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বাণিজ্য - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার আইডি ভাড়া নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বাণিজ্য শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে নিষিদ্ধ, মৌলবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন - dainik shiksha নিষিদ্ধ, মৌলবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0067489147186279