১৫ শতাংশ নতুন কর বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আদায় করবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকেই - দৈনিকশিক্ষা

১৫ শতাংশ নতুন কর বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আদায় করবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকেই

নিজস্ব প্রতিবেদক |

২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে তাদের অর্জিত আয়ের ওপর ১৫ শতাংশ হারে কর পরিশোধের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই প্রস্তাব পাস হলে এই বাড়তি খরচ পরিশোধের বোঝা শিক্ষার্থীদের ঘাড়েই বর্তাবে বলে আশঙ্কা করছে শিক্ষার্থীরা। কেননা ইতিপূর্বে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ১০ শতাংশ হারে ভ্যাট আরোপ করা হলে সেই টাকা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বর্ধিত টিউশন ফি হিসেবে আদায় করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। পরে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে সেই ভ্যাট প্রত্যাহার করা হয়।

প্রস্তাবিত কর প্রত্যাহারের দাবিতে এরই মধ্যে সরব হয়েছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তারা বলছে, যে কর আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে, তা শিক্ষার্থীদের ওপর বর্তালে তারা সেটি কোনোভাবেই মেনে নেবে না। শিক্ষার্থীরা বলছে, নতুন এই করের প্রভাবে তাদের শিক্ষার ব্যয় আরও বাড়বে। বাড়বে ঝরে পড়ার হার। ক্ষতিগ্রস্ত হবে উচ্চ শিক্ষা। এদিকে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকরা বলছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অলাভজনক প্রতিষ্ঠান, এটি করআরোপযোগ্য নয়।

এ বিষয়ে গত শুক্রবার সংবাদ সম্মেলন করে প্রস্তাবিত ১৫ শতাংশ কর আগামী ১০ জুনের মধ্যে বাতিলের দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। তা না করা হলে কঠোর আন্দোলনের হুমকিও দেয়া হয় এই সংবাদ সম্মেলন থেকে।

এর আগে ২০১০ সালে এসব প্রতিষ্ঠানের ওপর কর আরোপ করা হয়েছিল। তবে এর বিরুদ্ধে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মামলা করলে সেই কর আদায় প্রক্রিয়া কার্যকর হয়নি।

দেশে ১০৭টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ৫ লাখ শিক্ষার্থী নিবন্ধিত। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ধরনের অর্থনৈতিক স্তরের শিক্ষার্থীরা পড়ে। প্রথমত, ধনী পরিবারের সন্তানরা। দ্বিতীয়ত নিজেদের আয়ে চলা শিক্ষার্থী।

যারা নিজ আয়ে চলে তারা টিউশন, পার্টটাইম চাকরি করে পড়াশোনা করে। এই স্তরের শিক্ষার্থীদের বর্তমানে বিদ্যমান টিউশন ফি পরিশোধ করতে গিয়েই হিমশিম খেতে হয়। এখন যদি নতুন কর আরোপ করা হয়, তাহলে এই শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অনেকে উচ্চ শিক্ষা স্তর থেকে ঝরে পড়বে।

এক শিক্ষার্থী বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকদের জন্য ধার্যকৃত কর যদি শিক্ষার্থীদের ওপর চাপানো হয় তা হবে খুবই অমানবিক।

গত শুক্রবার বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির পক্ষ থেকে বিবৃতি দেন সংগঠনটির চেয়ারম্যান শেখ কবির হোসেন। তিনি বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০ অনুযায়ী ট্রাস্টের অধীন পরিচালিত অলাভজনক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর ১৫ শতাংশ হারে আয়কর আরোপ করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আর্থিক সঙ্কটে পড়বে। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ব্যয় বৃদ্ধির কারণে উচ্চশিক্ষা অর্জন বাধাগ্রস্ত হবে। তিনি এই প্রস্তাব প্রত্যাহারের দাবি জানান।

আরও পড়ুন : দৈনিক শিক্ষাডটকম পরিবারের প্রিন্ট পত্রিকা ‘দৈনিক আমাদের বার্তা’

শুধু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর নয়, কর আরোপ করা হয়েছে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ, বেসরকারি ডেন্টাল কলেজ, বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ বা কেবলমাত্র তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ে শিক্ষাদানে নিয়োজিত বেসরকারি কলেজ।

অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসাবে বিশ্ববিদ্যালয় ছাড় পাবার আবেদন করলেও উপরে উল্লেখিত প্রতিষ্ঠানগুলোর এই সুযোগ নেই। ফলে এই কর দিতে বাধ্য হবে প্রতিষ্ঠানগুলো। আর প্রতিষ্ঠানগুলো সেই করের বোঝা চাপিয়ে দিবে শিক্ষার্থীদের ওপর, এমন আশংকা করা হচ্ছে।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব ও ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন

বাংলাদেশে ৭০টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ রয়েছে। এসব মেডিকেল কলেজে পড়াশোনার খরচ তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। এই স্তরের শিক্ষার্থীদের ওপর এই কর চাপিয়ে দেয়া হলে তা পরিশোধে হিমশিম খেতে হবে অভিভাবকদের। এছাড়া অনেক শিক্ষার্থীকে হয়তো এই স্তরের পড়াশোনা থেকে ফিরে আসতে হবে।

এছাড়া দেশে ৪ শতাধিক পলিটেকনিকসহ অন্যান্য ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ রয়েছে। সরকার কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষার্থী বাড়ানোর জন্য নানা ধরণের উদ্যোগ নিয়েছে। কয়েকশ কোটি অর্থ ব্যয়ে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করছে। অথচ প্রতিষ্ঠানের ওপর করারোপ করা দ্বৈতনীতি বলে মনে করেন এই খাতের উদ্যোক্তারা।

অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিবের বিরুদ্ধে মাউশির তদন্ত কমিটি - dainik shiksha চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিবের বিরুদ্ধে মাউশির তদন্ত কমিটি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.004249095916748