যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার বীরপ্রতীক ইসাহক আলী কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষক চৈতন্য কুমার বর্মন প্রায় ১৬ বছর ধরে তথ্য গোপন করে এমপিও বাবদ বেতন-ভাতা উত্তোলন করছেন। বাংলার শিক্ষক হয়েও তিনি এমপিও ভোগ করছেন সমাজকর্ম বিষয়ের। ওই কলেজে এখনো পর্যন্ত সমাজকর্ম বিষয়ই খোলা হয়নি। তার এই অনৈতিক কাজে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মোস্তাক মোরশেদ সহযোগিতা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৮ খ্র্রিষ্টাব্দে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার ধলগ্রামে বীরপ্রতীক ইসাহক আলী কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দে কলেজটি একাডেমিক স্বীকৃতি পাওয়ার পর ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দে উচ্চ মাধ্যমিক শাখায় এমপিওভুক্ত হয়। বাংলার শিক্ষক হিসেবে ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দে প্রথমে চৈতন্য কুমার বর্মনকে তারপরে তরুন কান্তি বিশ্বাসকে নিয়োগ দেয়া হয়। ওই বছরই বাংলায় তরুণ কান্তি বিশ্বাসকে এমপিওভুক্ত করা হয়। একই বিষয়ে দু’জন শিক্ষকের এমপিওভুক্ত হওয়ার সুযোগ না থাকায় ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দে তথ্য গোপন করে চৈতন্য কুমার বর্মনকে সমাজকর্ম বিষয়ে এমপিওভুক্ত করা হয়।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের খুলনা অঞ্চলের সহকারী পরিচালক ইনামুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, বীরপ্রতিক ইসাহক আলী কলেজে এ ধরণের ঘটনা ঘটেছে বিষয়টি সঠিক। ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের আগে কলেজের শিক্ষকরা এমপিওভুক্ত হতে সরাসরি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে আবেদন করতেন। অধিদপ্তর থেকে আবেদন যাচাই-বাছাই করা হতো। ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দ থেকে তাদের মাধ্যমে এমপিও আবেদন করা শুরু হয়। চৈতন্য কুমার বর্মন ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দে এমপিওভুক্ত হয়েছেন। তাই তার বিরুদ্ধে একমাত্র অধিদপ্তরই ব্যবস্থা নিতে পারবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ মোস্তাক মোরশেদ দৈনিক শিক্ষাডটকমের কাছে দাবি করেন তার কোন দোষ নেই। ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দে কলেজের তৎকালীন সভাপতি বাংলার শিক্ষক চৈতন্য কুমার বর্মনকে সমাজকর্মের শিক্ষক হিসেবে এমপিওভুক্তির আবেদন করতে তাকে বাধ্য করেন। সভাপতির চাপে তিনি এটা করেছেন। তখনকার সময়ে হার্ডকপিতে আবেদন করতে হতো বলে এটা করা সম্ভব হয়েছে। অনলাইনের যুগে হলে সম্ভব ছিল না। তবে, সম্প্রতি তিনি কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছেন। কর্তৃপক্ষ যে সিদ্ধান্ত দেবে তিনি সেটাই মেনে নেবেন।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত শিক্ষক চৈতন্য কুমার বর্মনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।